ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

আন্তর্জাতিক ওজোন দিবস বৃহস্পতিবার

উষ্ণায়ন ঠেকাতে গোটা বিশ্বকে এক হয়ে কাজ করতে হবে: পরিবেশ প্রতিমন্ত্রী

আনোয়ারুল করিম<br>সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০০২ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৫, ২০১০
উষ্ণায়ন ঠেকাতে গোটা বিশ্বকে এক হয়ে কাজ করতে হবে: পরিবেশ প্রতিমন্ত্রী

ঢাকা: আন্তর্জাতিক ওজোন দিবস বৃহস্পতিবার। ১৯৯৫ সাল থেকে বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও দিবসটি পালন করা হচ্ছে।

ওজোন স্তর ক্ষয় ও তার প্রতিক্রিয়া সম্পর্কে বিশ্বব্যাপী গণসচেতনতা সৃষ্টির জন্য জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদ ১৯৯৪ সালের ১৯ ডিসেম্বর এক সভায় প্রতিবছর ১৬ সেপ্টেম্বর ‘আন্তর্জাতিক ওজন দিবস’ হিসাবে পালনের সিদ্ধান্ত নেয়।

এ বছর দিবসটির প্রতিপাদ্য ‘ওজোন স্তর রক্ষায় সর্বোতভাবে সুশাসন প্রতিষ্ঠা বাঞ্ছনীয়’।

সূর্যের ক্ষতিকর রশ্মি থেকে পৃথিবীকে নিরাপদ রাখতে ওজনস্তরের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ। পরিবেশ বিজ্ঞানীদের মতে মানবসৃষ্ট বিভিন্ন গ্যাস ও দ্রব্য ওজোন স্তর ক্ষয় করছে, যা পরিবেশ ও প্রতিবেশের জন্য হুমকিস্বরূপ। ওজোন স্তর ক্ষয়রোধে তাই বিশ্ববাসী আজ সোচ্চার।
 
ওজোন স্তরকে রা করার জন্য পদার্থ বিষয়ক মনট্রিয়েল প্রটোকল স্বাক্ষরিত হয়েছিল ১৯৮৭ সালের ১৬ই সেপ্টেম্বর। ওজোন স্তরের সংরণের উদ্দেশ্যে ওই দিনটিকেই তাই ওজোন দিবস হিসেবে উদযাপন করা হয়।

বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থার তথ্য অনুয়ায়ী, আকাশের নীলাভ রঙ-ই হচ্ছে ওজোন স্তর। ওজোন অক্সিজেনের একটি রূপ। যার রাসায়নিক সংকেত হচ্ছে তিনটি অক্সিজেন পরমাণুর একত্রিকরণ। সূর্যের ‘অতিবেগুনি রশ্মি’ এই ওজোন স্তর শোষণ করে নেয়। এর জন্য সূর্যের অতিবেগুনি রশ্মির প্রভাব থেকে পৃথিবীর উদ্ভিদসহ প্রাণীজগতের বেঁচে থাকা সম্ভব হয়।  

প্রায় ২৫ বছর আগে ড. জো ফারম্যানের নেতৃত্বে একদল আবহাওয়া বিজ্ঞানী যখন অ্যান্টার্কটিকায় গবেষণা চালাচ্ছিলেন, তখনই তাদের সুক্ষ্ম আকাশ পর্যবেক যন্ত্রের মাধ্যমে ওজোন স্তরে ফুটো দেখতে পান। এর আকার দিনে দিনে বাড়ছে। আর এর মাধ্যমেই সূর্যের ‘অতিবেগুনি রশ্মি’ এসে পৌঁছাচ্ছে পৃথিবীতে। পৃথিবীর উষ্ণতাও বেড়ে চলেছে আশঙ্কাজনক হারে।

বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থা জানিয়েছে, ২০০৮ সালে ওজোন স্তরের এই ফাটলের পরিমাণ ছিল ২৭ মিলিয়ন বর্গ কিলোমিটার। আর ২০০৬ সালে ছিল ২৫ মিলিয়ন বর্গ কিলোমিটার। ২০০৯ সালে এই পরিমাণটি একটু কম হলেও তা কোনোভাবেই আশঙ্কার বাইরে নয়৷ ২০০৯ সালে এই পরিমাণ ছিল ২৪ মিলিয়ন বর্গ কিলোমিটারে।  

দিবসটির গুরুত্ব সম্পর্কে পরিবেশ ও বন প্রতিমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বুধবার বাংলানিউজকে বলেন, ‘ওজোন স্তরে ক্ষয়ের সাম্প্রতিক কয়েক বছরের তথ্য সবাইকে নতুন করে ভাবিয়ে তুলছে। এ সমস্যা মোকাবিলার জরুরি সমাধান খুঁজছেন বিজ্ঞানীরা। ’

ড. মাহমুদ বলেন, ‘ভয়াবহ এ অবস্থা থেকে রা পেতে জনসচেনতার কোনো বিকল্প নেই। ব্যক্তিগত সচেতনতার পাশাপাশি এগিয়ে আসতে হবে প্রতিটি দেশের সরকারকে। আর কাজটি করা যেহেতু কোনো একটি দেশের একার পে সম্ভব নয়, এজন্য গোটা বিশ্বকে এক হয়ে কাজ করতে হবে। ’

তিনি বলেন, ‘ওজোন স্তর রক্ষায় ১৯৮৭ সালে গৃহীত মন্ট্রিয়েল প্রটোকল বিশ্বের সর্বাধিক দেশ অনুসমর্থন করে। বাংলাদেশসহ উন্নয়নশীল দেশগুলো ২০১০ সালের ১ জানুয়ারির মধ্যে প্রধান প্রধান ওজোন স্তর ক্ষয়কারী দ্রব্যের ব্যবহার শূন্যের কোঠায় নামিয়ে আনার লক্ষ্যে নিরলস প্রয়াস চালিয়ে যায়। ’

পরিবেশ প্রতিমন্ত্রী আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, ‘সবার সম্মিলিত প্রয়াস ওজোন স্তরকে খুব দ্রুত তার আগের অবস্থায় ফিরিয়ে আনতে সহায়ক হবে। ’

এদিকে, দিবসটি উপলক্ষে দেওয়া বাণীতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘বাংলাদেশ মন্ট্রিয়েল প্রটোকল অনুযায়ী টার্গেট বাস্তবায়নে শতভাগ সফল হয়েছে এবং ওজোন স্তর রায় বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো সমান অবদান রাখছে। ’

ওজোন দিবস উপলক্ষে বিভিন্ন সংগঠন নানা কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। সরকারি পর্যায়ে পরিবেশ অধিদপ্তর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি এলাকায় শোভাযাত্রা এবং জাতীয় প্রেসকাবে আলোচনা সভার আয়োজন করেছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৮৫৫ ঘণ্টা, ১৫ সেপ্টেম্বর ২০১০

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।