ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

সৈয়দপুরে রেলস্টেশনের গুদাম-ইয়ার্ড শ্রমিকদের সংবাদ সম্মেলন 

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯২০ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৬, ২০২০
সৈয়দপুরে রেলস্টেশনের গুদাম-ইয়ার্ড শ্রমিকদের সংবাদ সম্মেলন  সংবাদ সম্মেলন। ছবি: বাংলানিউজ

নীলফামারী: নীলফামারীর সৈয়দপুর রেলওয়ে স্টেশনের মাল গুদাম ও ইয়ার্ডের শ্রমিকরা সংবাদ সম্মেলন করেছেন স্টেশন মাস্টার মো. শওকত আলীর বিরুদ্ধে।  

রেলওয়ে স্টেশন মাল গুদাম ও ইয়ার্ডে শ্রমিকদের সর্দারের দায়িত্ব বন্টন নিয়ে যোগসাজশ, পুরাতন শ্রমিকদের বাদ দিয়ে বাইরের নতুন শ্রমিক নিয়ে রেলওয়ে ওয়াগন থেকে মালামাল খালাসসহ স্টেশন মাস্টারের নানা অনিয়ম, দুর্নীতি অভিযোগ এনে এ সংবাদ সম্মেলন করেন তারা।

 

শুক্রবার (১৬ অক্টোবর) বেলা ১১টায়  শহরের শেরে বাংলা সড়কের সৈয়দপুর প্লাজায় রেডচিলি নামে একটি হোটেলে এ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, দীর্ঘদিন ধরে সৈয়দপুর রেলওয়ে স্টেশনের মাল গুদাম ও ইয়ার্ডে নতুন ও পুরাতন মিলে ৩৫/৪০ জন শ্রমিক কর্মরত রয়েছে। স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে ১০/১২ বছর স্টেশনের মাল গুদাম ও ইয়ার্ডে জনৈক ইয়াসিন আলী শ্রমিক সর্দারের দায়িত্ব পালন করেন। তার মৃত্যুর পর স্টেশনে মাল গুদাম ও ইয়ার্ডের শ্রমিক সর্দার হিসেবে ছিলেন ট্যান্ডেল ও মুন্সি মো. আনোয়ার হোসেন। তিনিও (আনোয়ার হোসেন) গত ৭/৮ মাস আগে মৃত্যুবরণ করেন। সেই থেকে মৌখিকভাবে শ্রমিক সর্দারের দায়িত্ব পালন করে আসছেন ট্যান্ডেল মো. কাইয়ুম।  

এ অবস্থায় তিনি গত ২৯ সেপ্টেম্বর (ট্যান্ডেল ও মুন্সি মো. কাইয়ুম) সৈয়দপুর স্টেশন মাস্টার বরাবরে শ্রমিক সর্দার হিসেবে স্থায়ীভাবে দায়িত্ব গ্রহণের জন্য আবেদন করেন। তার আবেদনপত্রে নীলফামারী-৪ (সৈয়দপুর-কিশোরগঞ্জ) আসনের সংসদ সদস্য আহসান আদেলুর রহমান আদেল এবং সৈয়দপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. আখতার হোসেন বাদল সুপারিশ করেন। ট্যান্ডেল মো. কাইয়ুমের সর্দার হিসেবে দায়িত্ব পাওয়ার জন্য করা আবেদনটিও গ্রহণ করেন সৈয়দপুর স্টেশন মাস্টার মো. শওকত আলী। কিন্তু তিনি (স্টেশন মাস্টার  শওকত আলী) ট্যান্ডেল মো. কাইয়ুমের আবেদনপত্রটি রেলওয়ে পাকশী বিভাগীয় বাণিজ্যিক কর্মকর্তা বরাবরে পাঠাননি আজও।
 
উপরন্তু তিনি মৃত সর্দার আনোয়ার হোসেনের ছেলে মো. আফতাব হোসেন ও মো. মোস্তাকের সঙ্গে যোগসাজশ করে মোটা অংকের উৎকোচ নিয়ে শ্রমিক সর্দার ও ট্যান্ডল হিসেবে তাদের দায়িত্ব দেওয়ার জন্য আবেদনপত্র পাকশী বিভাগীয় বাণিজ্যিক কর্মকর্তা বরাবরে পাঠিয়েছেন বলে  সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করা হয়েছে।  

সংবাদ সম্মেলনে আরো বলা হয়, সৈয়দপুর রেলওয়ে স্টেশন ওয়ার্ডে সাম্প্রতিক সময়ে প্রায় প্রতিদিন রেলওয়ে ওয়াগনে করে বিপুল সংখ্যক পাথরসহ বিভিন্ন মালামাল আসছে। আর রেলওয়ে স্টেশন মাস্টার শওকত আলী মালামালের আমদানিকারক প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিদের সঙ্গে যোগসাজশ করে বাইরের শ্রমিকদের দিয়ে এ সব আমাদনিকৃত পাথর ওয়াগন থেকে খালাস কাজ করাচ্ছেন।  

তিনি আমদানিকারকদের কাছ থেকে মালামাল খালাসে বেশি পরিমাণে অর্থ আদায় করলেও শ্রমিকদের স্বল্প মজুরি পরিশোধ করা হচ্ছে। আর এভাবে তিনি (স্টেশন মাস্টার) প্রতিদিন মোটা অংকের অর্থ নিজের পকেটে তুলছেন। আর এতে ট্যান্ডেল মো. কাইয়ুমসহ অন্যরা পুরাতন শ্রমিকরা বাধা দিলে তাদের নামে মামলা দিয়ে জেলহাজতে পাঠানোসহ নানা রকম হুমকি-ধমকি দেন স্টেশন মাস্টার শওকত আলী।
 
এদিকে স্টেশন মাল গুদাম ও ইয়ার্ডের শ্রমিকদের বাদ দিয়ে বাইরের শ্রমিকদের নিয়ে রেলওয়ে স্টেশনের ইয়ার্ডে ওয়াগন থেকে মালামাল খালাস করার কারণে পুরাতন শ্রমিকরা বিপাকে পড়েছেন। তারা বর্তমানে প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাস মহামারিতে কাজের অভাবে অনাহারে অর্ধাহারে দিন কাটাচ্ছেন।  

এ নিয়ে কথা হলে সৈয়দপুর স্টেশন মাস্টার মো. শওকত আলী বলেন, ট্যান্ডেল মো. কাইয়ুম সর্দারের দায়িত্বের জন্য আমার বরাবরে আবেদন দিয়েছেন ঠিকই। কিন্তু তিনি আমার সঙ্গে আর কোনো রকম যোগাযোগ করেননি। আর বাইরের শ্রমিকদের নিয়ে ওয়াগণের মালামাল খালাস প্রসঙ্গে বলেন, বর্তমান সময়ে পুরাতন শ্রমিকরা প্রতি ওয়াগন পাথর খালাস করতে ৭ হাজার টাকা দাবি করেন। তারপরও আমি তাদের বলেছি উভয়ে মিলেমিশে কাজ করো।  

সংবাদ সম্মেলনে সৈয়দপুর রেলওয়ে স্টেশনে মাল গুদাম ও ইয়ার্ডের শ্রমিক মো. শাহিদ, মো. কছির উদ্দিন, মো. মরাদ, তৌহিদ লাড্ডান, মো. আজিজুল ইসলাম, আব্দুল মান্নান ও মো. বাবলু প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।  

বাংলাদেশ সময়: ১৯১৮ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৬, ২০২০
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।