ঢাকা, মঙ্গলবার, ১০ বৈশাখ ১৪৩১, ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

দেশে পুষ্টির উন্নয়নে সাত চ্যালেঞ্জ

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১৪৯ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৮, ২০২০
দেশে পুষ্টির উন্নয়নে সাত চ্যালেঞ্জ

ঢাকা: দেশে মোট জাতীয় উৎপাদন (জিডিপি), মাথা পিছু আয় বাড়লেও পুষ্টির উন্নয়নের ক্ষেত্রে এখনো বেশ পিছিয়ে রয়েছে। এ ক্ষেত্রে এখনো সাত চ্যালেঞ্জ বিদ্যমান।

গ্লোবাল হাংগার সূচকে-২০১৯ এর তথ্য অনুযায়ী বাংলাদেশের র‌্যাংকিং ১১৭ এর মধ্যে ৮৮, গ্লোবাল ফুড সিকিউরিটি- ২০১৯ সূচকে বাংলাদেশের র‌্যাংকিং ১১৩ এর মধ্যে ৮৩, পুষ্টিকর খাবারে ব্যয় করার ক্ষমতা শহরের (৯৬ শতাংশ) তুলনায় গ্রামে (৮৭ শতাংশ) তুলনামূলক কম হওয়া, স্বাস্থ্যকর খাবার গ্রহণে আয়ের কম অংশ ব্যয় করা, খাবার হিসেবে প্রধানত চালের উপর নির্ভরশীল হওয়া, দুধ, ডিম, ফল ও ডাল কম খাওয়া এবং চিনি বা শর্করা জাতীয় খাবার বেশি নির্ভরশীল হওয়া। ভবিষ্যতে পুষ্টির ক্ষেত্রে এসব চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে পারলে সরকারের ৮ম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা ও টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) অর্জন আরও সহজতর হবে। এজন্য সরকারি-বেসরকারি পর্যায়ে অংশীদারিত্ব ও সমন্বিতভাবে কাজ করতে হবে।

সোমবার (২৮ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর একটি হোটেলে ‘শিল্প কারখানায় পুষ্টিকর ও নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিতকরণ’ বিষয়ক আলোচনা সভায় বক্তারা এ তথ্য তুলে ধরেন।  

শ্রম ও কর্ম সংস্থা মন্ত্রণালয় আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মন্ত্রণালয়রে সচিব কে এম আব্দুস সালাম। আয়োজনে সহযোগিতায় ছিল সুইজারল্যান্ড ভিত্তিক আন্তর্জাতিক সংস্থা গ্লোবাল অ্যালায়েন্স ফর ইমপ্রুভড নিউট্রিশন (গেইন)।

কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরের মহাপরিদর্শক (অতিরিক্ত সচিব) শিবনাথ রায়ের সভাপতিত্বে সভায় অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরের যুগ্ম মহাপরিদর্শক ড. মো. মুস্তাফিজুর রহমান, আইসিডিডিআরবির সহযোগী বিজ্ঞানী ড. মুত্তাকিনা হোসাইন, গেইন বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর ডা. রুদাবা খন্দকার, বাংলাদেশ এক্সপোর্ট প্রসেসিং জোন অথরিটির (বেপজা) মহাব্যবস্থাপক নাজমা বিনতে আলমগীর, পরিকল্পনা কমিশনের আওতাধীন-এনভায়রনমেন্ট ক্লাইমেট চেইঞ্জ অ্যান্ড ডিজএস্টার স্ট্যাটাটিসটিক্স প্রকল্পের সিনিয়র অ্যাডভাইজার ও  শ্রম ও কর্ম সংস্থান মন্ত্রণালয়ের সাবেক অতিরিক্ত সচিব খন্দকার মোস্তাইন হোসেন প্রমুখ।

সভায় পোশাক শিল্পে শ্রমিকদের  মধ্যে পুষ্টি বিনিয়োগ সংক্রান্ত উপস্থাপনা তুলে ধরেন গেইন বাংলাদেশের পোর্টপোলিও লিড মনিরুজ্জামান বিপুল।

সভায় কে এম আব্দুস সালাম বলেন, এখন সময় এসেছে পুষ্টিকর খাবার নিয়ে চিন্তা করার। কারণ, খাবার মানুষের শুধু ক্ষুধা নিবারণের জন্য না, বরং তা সু-স্বাস্থ্যের আধকারী করে তুলবে। চলমান বিশ্বের প্রযুক্তির সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলার জন্য সুস্থ ও কর্মঠ শ্রমিক প্রয়োজন। এতে শ্রমিকদের উৎপাদনশীলতা বাড়বে।

সভায় শিবনাথ রায় বলেন, কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরে কর্মরত পরিদর্শকরা পুষ্টি বিষযক উন্নত জ্ঞান জরুরি। এতে তারা কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শনের সময় শ্রমিকদের খাবারের মান উন্নয়ন বিষয়ে ভূমিকা রাখতে পারবে।
 
তিনি শ্রম ও কর্ম সংস্থান মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে গেইনের সমঝোতা চুক্তি ও কলকারখানা এবং প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরের সঙ্গে সহযোগিতা চুক্তির মাধ্যমে কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তর শ্রমিকদের পুষ্টির উন্নয়নে কার্যক্রম শুরু করেছে। এ যাত্রা অব্যাহত থাকবে বলে আমি বিশ্বাস করি।

কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরের যুগ্ম মহাপরিদর্শক ড. মুস্তাফিজুর রহমান বলেন, ৮ম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনায়, তৈরি পোশাক শিল্পে নিয়োজিত শ্রমিকদের পুষ্টির বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করা একান্ত জরুরি, যা উক্ত অধিদপ্তরকে পুষ্টি বিয়য়ে পরিকল্পনা করতে সহযোগিতা করবে।
 
বক্তারা পোশাক শ্রমিকদের পুষ্টি উন্নয়নে বেশ কিছু সুপারিশ তুলে ধরেন। এগুলো হলো- পুষ্টি উন্নয়নে বহুখাতভিত্তিক কর্মসূচি হাতে নেওয়া, শ্রমিকদের নিরাপদ ও পুষ্টিকর খাবার সম্পর্কে আলোকপাত করা ও সচেতন করা, সরকারি-বেসরকারি পর্যায়ে সমন্বিতভাবে কাজ করা ইত্যাদি।

অনুষ্ঠানে জানানো হয়, পোশাক শিল্পে দেশে ৩৫ থেকে ৪২ লাখ শ্রমিক কাজ করেন। তাদের নিরাপদ ও পুষ্টিকর খাবার গ্রহণে উৎসাহিত ও সচেতনতা গড়ে তুললে এ খাতে উৎপাদনশীলতা বাড়বে।

বাংলাদেশ সময়: ২১৪৯ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৮, ২০২০
আরআইএস/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।