ঢাকা: দেশে মোট জাতীয় উৎপাদন (জিডিপি), মাথা পিছু আয় বাড়লেও পুষ্টির উন্নয়নের ক্ষেত্রে এখনো বেশ পিছিয়ে রয়েছে। এ ক্ষেত্রে এখনো সাত চ্যালেঞ্জ বিদ্যমান।
সোমবার (২৮ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর একটি হোটেলে ‘শিল্প কারখানায় পুষ্টিকর ও নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিতকরণ’ বিষয়ক আলোচনা সভায় বক্তারা এ তথ্য তুলে ধরেন।
শ্রম ও কর্ম সংস্থা মন্ত্রণালয় আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মন্ত্রণালয়রে সচিব কে এম আব্দুস সালাম। আয়োজনে সহযোগিতায় ছিল সুইজারল্যান্ড ভিত্তিক আন্তর্জাতিক সংস্থা গ্লোবাল অ্যালায়েন্স ফর ইমপ্রুভড নিউট্রিশন (গেইন)।
কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরের মহাপরিদর্শক (অতিরিক্ত সচিব) শিবনাথ রায়ের সভাপতিত্বে সভায় অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরের যুগ্ম মহাপরিদর্শক ড. মো. মুস্তাফিজুর রহমান, আইসিডিডিআরবির সহযোগী বিজ্ঞানী ড. মুত্তাকিনা হোসাইন, গেইন বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর ডা. রুদাবা খন্দকার, বাংলাদেশ এক্সপোর্ট প্রসেসিং জোন অথরিটির (বেপজা) মহাব্যবস্থাপক নাজমা বিনতে আলমগীর, পরিকল্পনা কমিশনের আওতাধীন-এনভায়রনমেন্ট ক্লাইমেট চেইঞ্জ অ্যান্ড ডিজএস্টার স্ট্যাটাটিসটিক্স প্রকল্পের সিনিয়র অ্যাডভাইজার ও শ্রম ও কর্ম সংস্থান মন্ত্রণালয়ের সাবেক অতিরিক্ত সচিব খন্দকার মোস্তাইন হোসেন প্রমুখ।
সভায় পোশাক শিল্পে শ্রমিকদের মধ্যে পুষ্টি বিনিয়োগ সংক্রান্ত উপস্থাপনা তুলে ধরেন গেইন বাংলাদেশের পোর্টপোলিও লিড মনিরুজ্জামান বিপুল।
সভায় কে এম আব্দুস সালাম বলেন, এখন সময় এসেছে পুষ্টিকর খাবার নিয়ে চিন্তা করার। কারণ, খাবার মানুষের শুধু ক্ষুধা নিবারণের জন্য না, বরং তা সু-স্বাস্থ্যের আধকারী করে তুলবে। চলমান বিশ্বের প্রযুক্তির সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলার জন্য সুস্থ ও কর্মঠ শ্রমিক প্রয়োজন। এতে শ্রমিকদের উৎপাদনশীলতা বাড়বে।
সভায় শিবনাথ রায় বলেন, কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরে কর্মরত পরিদর্শকরা পুষ্টি বিষযক উন্নত জ্ঞান জরুরি। এতে তারা কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শনের সময় শ্রমিকদের খাবারের মান উন্নয়ন বিষয়ে ভূমিকা রাখতে পারবে।
তিনি শ্রম ও কর্ম সংস্থান মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে গেইনের সমঝোতা চুক্তি ও কলকারখানা এবং প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরের সঙ্গে সহযোগিতা চুক্তির মাধ্যমে কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তর শ্রমিকদের পুষ্টির উন্নয়নে কার্যক্রম শুরু করেছে। এ যাত্রা অব্যাহত থাকবে বলে আমি বিশ্বাস করি।
কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরের যুগ্ম মহাপরিদর্শক ড. মুস্তাফিজুর রহমান বলেন, ৮ম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনায়, তৈরি পোশাক শিল্পে নিয়োজিত শ্রমিকদের পুষ্টির বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করা একান্ত জরুরি, যা উক্ত অধিদপ্তরকে পুষ্টি বিয়য়ে পরিকল্পনা করতে সহযোগিতা করবে।
বক্তারা পোশাক শ্রমিকদের পুষ্টি উন্নয়নে বেশ কিছু সুপারিশ তুলে ধরেন। এগুলো হলো- পুষ্টি উন্নয়নে বহুখাতভিত্তিক কর্মসূচি হাতে নেওয়া, শ্রমিকদের নিরাপদ ও পুষ্টিকর খাবার সম্পর্কে আলোকপাত করা ও সচেতন করা, সরকারি-বেসরকারি পর্যায়ে সমন্বিতভাবে কাজ করা ইত্যাদি।
অনুষ্ঠানে জানানো হয়, পোশাক শিল্পে দেশে ৩৫ থেকে ৪২ লাখ শ্রমিক কাজ করেন। তাদের নিরাপদ ও পুষ্টিকর খাবার গ্রহণে উৎসাহিত ও সচেতনতা গড়ে তুললে এ খাতে উৎপাদনশীলতা বাড়বে।
বাংলাদেশ সময়: ২১৪৯ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৮, ২০২০
আরআইএস/