ঢাকা, শনিবার, ৭ বৈশাখ ১৪৩১, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

বাগেরহাটে জমি দখলকারীদের হামলায় নারীসহ আহত ৬

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬২৬ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৮, ২০২০
বাগেরহাটে জমি দখলকারীদের হামলায় নারীসহ আহত ৬ ঘটনাস্থল। ছবি: বাংলানিউজ

বাগেরহাট: বাগেরহাটের চিতলমারীতে জমি দখলকারীদের হামলায় নারীসহ একই পরিবারের অন্তত ছয় জন আহত হয়েছেন।  

সোমবার (২৮ সেপ্টেম্বর) ভোরে চিতলমারী উপজেলার কালীগঞ্জ বাজারস্থ পিপড়াডাঙ্গা এলাকার হেলাল সরদারের নেতৃত্বে জাহিদুল ইসলাম মোল্লার ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও জমি দখল করতে এ হামলার ঘটনা ঘটে।


 
খবর পেয়ে চিতলমারী থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে দখলকারীদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। ফের হামলার আশঙ্কায় ঘটনাস্থলে পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।

আহতরা হলেন- কালীগঞ্জ বাজারস্থ পিপড়াডাঙ্গা এলাকার মৃত জোহর আলী মোল্লার স্ত্রী আলেয়া বেগম, ছেলে জাহিদুল ইসলাম মোল্লা, জাহিদুলের স্ত্রী রীনা বেগম, জাহিদুলের ছোট ভাই শফিকুল ইসলাম, বোন রুমিচা বেগম, বোন জামাই ইরান সরদার।

এছাড়া এসময় জমি দখল করতে আসা হেলাল সরদারের পক্ষের শামীম নামে একজন আহত হন। আহতদের উদ্ধার করে চিতলমারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেছেন স্থানীয়রা। আহতদের মধ্যে জাহিদুল মোল্লার অবস্থা গুরুতর হওয়ায় তাকে খুলনা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করেছে চিতলমারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে দায়িত্বরত চিকিৎসকরা।  

চিতলমারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন আলেয়া বেগম বলেন, ভোরে ফজরের নামাজ পরে বাইরে বের হয়ে দেখি আমাদের জমিতে হেলাল সরদার ও উকিল মোল্লার নেতৃত্বে ২০-৩০ জন লোক জমি দখল করতে এসেছে। এসময় দুই ছেলে, মেয়ে, ছেলের বউসহ আমরা বাধা দিতে গেলে তারা আমাদের ওপর হামলা চালায়। তাদের মধ্যে একজনের হাতে থাকা একটি বোতলের মুখে আগুন ধরিয়ে আমাদের ঘরের উপর ছুড়ে মারে। এতে ঘরের সামনে থাকা খড়ের গাঁদায় (কুটোর পালা) আগুন ধরে যায়। আমাদের টিনের চালের উপর ইট ছুড়ে মারে এবং আমাদের ঘরে হামলা চালায়। আমার ছেলের দোকান ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করে দোকানে থাকা বেশকিছু নগদ টাকা নিয়ে যায়। আমি এর বিচার চাই।

আহত জাহিদুলের ছোট ভাই ছাত্রলীগ নেতা অহিদ বলেন, পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী হেলাল সরদার ও উকিল মোল্লার নেতৃত্বে বড় ভাই জাহিদুলকে হত্যার উদ্দেশে ধারোলো অস্ত্র দিয়ে কয়েকটি কোপ দেয়। ভাইয়ের অবস্থা খুব খারাপ তাকে খুলনা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে এসেছি বাঁচবে কিনা জানিনা। এছাড়া হামলার সময় তারা আমাদের বাড়ি ও দোকানেও তাণ্ডব চালিয়ে নগদ টাকা ও স্বর্ণালঙ্কার লুটে নিয়ে যায়। আমরা এর বিচার চাই।

স্থানীয় ইদ্রিস মোল্লা ও কালিগঞ্জ বাজারের ব্যবসায়ী মুজিবর মোল্লা বলেন, ফজরের নামাজ পরে বের হয়ে শুনতে পাই শফিকুল মোল্লার দোকানের সামনে চিৎকার চেঁচামেচি হচ্ছে। আমরা দৌড়ে গিয়ে দেখি হেলাল সরদার ও উকিল মোল্লার নেতৃত্বে বেশ কয়েকজন জাহিদুল ও তার পরিবারের সবাইকে মারধর করছে। জাহিদুলের ঘরের উপর ইট ছুড়ে মারছে। এর মধ্যে পুলিশ এলে তারা দৌড়ে পালিয়ে যায়।

এ বিষয়ে কথা বলার জন্য হেলাল সরদার ও উকিল মোল্লার সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাদের কাউকে পাওয়া যায়নি।

চিতলমারী উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মো. মামুন হাসান বলেন, সকাল ৯টার দিকে বেশ কয়েকজন আহত রোগী আসেন হাসপাতালে। এদের মধ্যে কয়েকজনকে এখানে ভর্তি করা হয়েছে। পিপড়াডাঙ্গা এলাকার জাহিদুল মোল্লা নামে একজনের অবস্থা গুরুতর হওয়ায় তাকে খুলনা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে। জাহিদুলের শরীরের বিভিন্ন জায়গায় ধারালো অস্ত্রের আঘাতের চিহ্ন রয়েছে।

চিতলমারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মীর শরিফুল হক বলেন, মোবাইল ফোনের মাধ্যমে খবর পেয়ে আমরা ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এনেছি। আবারও কোনো প্রকার অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে ঘটনাস্থলে পুলিশ মোতায়েন করেছি। উভয়পক্ষের কয়েকজন আহত হয়েছে। কেউ লিখিত অভিযোগ করলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

বাংলাদেশ সময়: ১৬২৫ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৮, ২০২০
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।