ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

শেরপুরে শিশু গৃহকর্মী নির্যাতনের অভিযোগে আ’লীগ নেতার স্ত্রী গ্রেফতার

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯০০ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৬, ২০২০
শেরপুরে শিশু গৃহকর্মী নির্যাতনের অভিযোগে আ’লীগ নেতার স্ত্রী গ্রেফতার

শেরপুর: শেরপুর জেলার শ্রীবরর্দী উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আহসান হাবিব শাকিলের বাসার গৃহকর্মীকে নির্যাতনের অভিযোগে শাকিলের স্ত্রী রুমানা জামান ঝুমুরকে (৩৫) গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

শাকিল উপজেলা আওয়ামী লীগের দীর্ঘদিনের সভাপতি আশরাফ হোসেন খোকার ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যানের ছেলে।

শনিবার (২৬ সেপ্টেম্বর) বিকেলে অভিযুক্ত ঝুমুরকে আদালতের মাধ্যমে শেরপুর জেলা কারাগারে পাঠানো হয়।

নির্যাতিত ওই গৃহকর্মীর নাম সাদিয়া উরফে ফেলি (১০)। সাদিয়া শ্রীবরর্দী পৌর এলাকার মুন্সিপাড়া মহল্লার গরীব কৃষক সাইফুল ইসলামের মেয়ে। শাকিল স্ত্রী ঝুমুরকে নিয়ে শহরের খামারিয়া পাড়া এলাকায় সোনালী ব্যাংকের উপর ছয়তলায় দীর্ঘদিন ধরে ভাড়া বাসায় থাকেন। অভিযুক্ত ঝুমুরের সঙ্গে নয় বছর আগে আওয়ামী লীগ নেতা শাকিলের সঙ্গে দ্বিতীয় বিয়ে হয়। ঝুমুরের প্রথম পক্ষে আরও দুটি সন্তান রয়েছে। শাকিলের দিকেও দুটি সন্তান রয়েছে।

জানা যায়, ১১ মাস আগে শিশু সাদিয়াকে গৃহকর্মী হিসেবে আনা হয়। কিছু হলেই তাকে নির্মমভাবে নির্যাতন করতেন শাকিলের স্ত্রী ঝুমুর। সাদিয়া ছোট মানুষ হলে কাজ দেওয়া হতো বড়। সংসারের সব কাজ তাকেই করতে হতো। এর ধারাবাহিকতায় অনেকদিন ধরে মেয়েটির ওপর নির্যাতন চলছিল। শুক্রবার (২৫ সেপ্টেম্বর) রাতে মেয়েটির ওপর নির্যাতন হলে তার চিৎকার শুনে প্রতিবেশী কে বা কারা ৯৯৯-এ জানালে পুলিশ রাত ১২টায় ওই অভিযুক্ত ঝুমুরকে ভাড়া বাসা থেকে গ্রেফতার করে শেরপুর সদর কারাগারে পাঠায়। ঝুমুরকে অভিযুক্ত করে এ ঘটনায় ওই শিশুর বাবা সাইফুল ইসলাম বাদী হয়ে থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা দায়ের করেন। শিশুটিকে রাতেই শেরপুর সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হলে অবস্থা সংকাটাপন্ন হওয়ায় শনিবার দুপুরে ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।  

শিশু সাদিয়া জানায়, শুধু নির্যাতন নয় তাকে খাবার পর্যন্ত দেওয়া হতো না। পশুর মতো নির্যাতন করা হতো। বাড়ি যেতে চাইলেই মারধর করা হতো। যন্ত্রণায় চিৎকার করলে আরও মারধর করতো। বাবা-মা কারও সঙ্গে দেখা করতে দিতো না।

সদর হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক খায়রুল কবির সুমন জানায়, মেয়েটির ওপর অমানবিক নির্যাতনের চিহ্ন রয়েছে যা দীর্ঘদিন ধরে করা হচ্ছে। আপাদ মস্তক তার নির্যাতনের চিহ্ন রয়েছে। শরীরের স্পর্শকাতর স্থানে অসংখ্য আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। পেটে পানি এসে গেছে। তার অবস্থা সংকটাপন্ন।

শেরপুরের সহকারী পুলিশ সুপার এএসপি (সদর সার্কল) আমিনুল ইসলাম বাংলানিউজকে জানান, অভিযুক্তকে রিমান্ড চেয়ে আদালতে পাঠানো হয়েছে। পরে আদালত তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছে। এ ঘটনার সঙ্গে আরও কেউ জড়িত আছে কি না তা পুলিশ খতিয়ে দেখছে।  

বাংলাদেশ সময়: ১৮৫৪ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৬, ২০২০
এনটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।