ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

বন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে কিশোরকে নির্যাতনের অভিযোগ

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪০৭ ঘণ্টা, আগস্ট ১৫, ২০২০
বন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে কিশোরকে নির্যাতনের অভিযোগ কিশোর ইমাম হোসেন। ছবি: বাংলানিউজ

বাগেরহাট: সুন্দরবন পূর্ব বন বিভাগের শরণখোলা রেঞ্জের কটকা অভয়ারণ্য কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল কালামের বিরুদ্ধে এক কিশোরকে (১২) নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে।  

শুক্রবার (১৪ আগস্ট) রাত ১০টার দিকে নির্যাতনের শিকার ওই কিশোর ইমাম হোসেনকে বাগেরহাটের শরণখোলা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়।

ইমাম হোসেন উপজেলার সোনাতলা গ্রামের খলিলুর রহমানের ছেলে।

স্থানীয়রা জানান, ৮ আগস্ট সুন্দরবনের পাস-পারমিট নিয়ে ইলিশ আহরণকারী গ্রামবাসী ও স্বজনদের সঙ্গে সাগরে যায় সোনাতলা গ্রামের ১০ জন। এদের সঙ্গে কিশোর ইমাম হোসেনও ছিল। অবৈধভাবে অভয়ারণ্য এলাকায় প্রবেশের দায়ে ওই ১০ জনকে আটক করে বন বিভাগ। পরে ১০ আগস্ট ইমাম হোসেন ছাড়া অন্য ৯ জেলের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে আদালতে সোপর্দ করে বন বিভাগ।  

কটকা অভয়ারণ্য কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল কালাম ইমাম হোসেনকে পরিবারের কাছে হস্তান্তর না করে আবার বনে নিয়ে যান। সেখানে আটকে রেখে খাবার না দিয়ে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করে চারদিন পর ১৪ আগস্ট রাত সাড়ে ৮টায় শরণখোলা রেঞ্জ অফিসে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করে বন বিভাগ।
ইমাম হোসেনের মা মেহেরুন নেছা বেগম বলেন, যখন জানতে পারি বন বিভাগ আমার ছেলেকে আটক করেছে। খোঁজ নিয়ে জানি যে কটকার ওসি সাহেবের কাছে আমার ছেলে আছে। আমি ওসি সাহেবকে আমি ফোন দিলে তিনি বলেন তুমি এসে কটকা থেকে তোমার ছেলেকে নিয়ে যাও। তখন আমি বলি মহিলা মানুষ, কিভাবে কটকায় আসব। শরণখোলা রেঞ্জের সহকারী বন সংরক্ষক জয়নাল আবেদিন স্যারকে ফোন করলে তিনিও আমার সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করেন। পরে আটকে রেখে মারধর ও নির্যাতন করে শরণখোলা রেঞ্জ অফিসে ফেরত দিয়ে গেছে। সেখান থেকে স্থানীয় ইউপি সদস্য ও আমরা পরিবারের লোকেরা যেয়ে আমার ছেলেকে নিয়ে আসি। রাতে বাড়িতে নিয়ে আসার পরেই সে অসুস্থ হয়ে পড়ে। আমরা রাতেই তাকে শরণখোলা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করি। আমার ছেলেকে নির্যাতনের বিচার চাই।

শরণখোলা উপজেলা স্বাস্থ্যকেন্দ্রের চিকিৎসক আরিফুল ইসলাম রাকিব বলছেন, কিশোর ইমামের শরীরে আঘাতের চিহ্ন নেই। কিন্তু সে মানসিকভাবে ভীত অবস্থায় রয়েছে। আমরা তাকে আরও কিছু পরীক্ষা নীরিক্ষা দিয়েছি। তাকে প্রপার চিকিৎসা দেওয়ার চেষ্টা করছি। ৪৮ ঘণ্টা না যাওয়া পর্যন্ত কিশোরের শারীরিক অবস্থার বিষয় তেমন কিছু বলা যাচ্ছে না।

শরণখোলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এসকে আব্দুল্লাহ আল সাইদ বলেন, এ বিষয়ে আমরা কিশোরের পরিবারের পক্ষ থেকে কোন অভিযোগ পাইনি। তবে সুন্দরবন পূর্ব বন বিভাগের শরণখোলা রেঞ্জের সহকারী বন সংরক্ষক আমাকে জানিয়েছেন পরিবারের লোক না পাওয়ার কারণে চারদিন পরে সবার উপস্থিতে ইমাম হোসেন নামের একটি কিশোরকে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।

এ বিষয়ে শরণখোলা রেঞ্জের কটকা অভয়ারণ্য কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল কালামের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তার নম্বরটি বন্ধ পাওয়া যায়।

পূর্ব সুন্দরবন বন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) মুহাম্মদ বেলায়েত হোসেন বলেন, স্থানীয় ইউপি সদস্যসহ সবার উপস্থিতিতে ছেলেটিকে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। নির্যাতনের বিষয়টি সঠিক নয়। যেসব জেলেদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে তারা এসব অত্যাচার নির্যাতনের নাটক সাজিয়েছেন।
 
বাংলাদেশ সময়: ১৪০৫ ঘণ্টা, আগস্ট ১৫, ২০২০
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
welcome-ad