ঢাকা, শনিবার, ৭ বৈশাখ ১৪৩১, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

ছাতনী ইউনিয়নের একটি পরিত্যক্ত বাড়ি থেকে ১০০ বস্তা সরকারি গম উদ্ধার

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯২৯ ঘণ্টা, আগস্ট ৫, ২০২০
ছাতনী ইউনিয়নের একটি পরিত্যক্ত বাড়ি থেকে ১০০ বস্তা সরকারি গম উদ্ধার ছাতনী ইউনিয়নের একটি পরিত্যক্ত বাড়ি থেকে ১০০ বস্তা সরকারি গম উদ্ধার

নাটোর: নাটোরের ছাতনী ইউনিয়নের মাঝদীঘা পূর্ব পাড়া গ্রামের একটি পরিত্যক্ত বাড়ি থেকে খাল খনন প্রকল্পের ১০০ বস্তা সরকারি গম উদ্ধার করেছে পুলিশ। তবে এ ঘটনায় কাউকে আটক করা হয়নি।

 

বুধবার (০৫ আগস্ট) দুপুরে সদর উপজেলার ওই গ্রামের কুরবান আলীর বাড়ি থেকে এসব গম উদ্ধার করা হয়। কুরবান আলী ওই গ্রামের মৃত রুহুল আমিনের ছেলে। তিনি ইউপি চেয়ারম্যান শেখ তোফাজ্জল হোসেনের আত্মীয় বলে জানা গেছে।  

নাটোর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ জাহাঙ্গীর আলম এ তথ্য নিশ্চিত করে বাংলানিউজকে জানান, ২০১৯-২০ অর্থ বছরে সদর উপজেলার ছাতনী ইউনিয়নের মাঝদিঘা গ্রামে কাজের বিনিময়ে খাদ্য কর্মসূচির (কাবিখা) আওতায় এক কিলোমিটার খাল খনন প্রকল্প গ্রহণ করা হয়। ওই প্রকল্পটি বাস্তবায়নে স্থানীয় ইউপি সদস্য (সংরক্ষিত মহিলা আসন) শাহনাজ বেগমকে প্রকল্প সভাপতি করা হয়। একইসঙ্গে প্রকল্পের বিপরীতে সাড়ে আট মেট্রিক টন গম বরাদ্দ দেন পিআইও অফিস।

গত জুন মাসের আগেই প্রকল্পের কাজ সম্পন্ন হলে বরাদ্দকৃত গম নিম্নমানের হওয়ায় শ্রমিকরা ওই গম নিতে অস্বীকৃতি জানান। এতে ইউপি সদস্য শাহনাজ বেগম তাদের গমের পরিবর্তে নগদ অর্থ প্রদান করেন। পরবর্তীতে ইউপি চেয়ারম্যান শেখ তোফাজ্জল হোসেন ওই গমগুলো গো খাদ্যের জন্য ক্রয় করে মাঝদীঘা গ্রামের কুরবান আলী নামে তার এক আত্মীয়ের পরিত্যক্ত বাড়িতে মজুদ করে রাখেন। অবশ্য কুরবান আলী ওই বাড়িতে বসবাস করেন না। বিষয়টি জানাজানি হলে এলাকায় আলোচনার ঝড় বইতে থাকে।

পরে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে আজ দুপুরে কুরবান আলীর ওই পরিত্যক্ত বাড়িতে অভিযান চালানো হয়। এ অবস্থায় সেখানে খাদ্য অধিদপ্তর কর্তৃক সিল মারা ৫০ কেজি ওজনের মজুত করা ১০০ বস্তা গম পাওয়া যায়। পরে সেগুলো জব্দ করে থানায় নিয়ে যাওয়া হয়।

ওসি বলেন, এ ঘটনায় কাউকে আটক করা হয়নি। শুধুমাত্র জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ইউপি চেয়ারম্যান শেখ তোফাজ্জল হোসেন ও ইউপি সদস্য শাহনাজ বেগমকে থানায় ডাকা হয়েছে। তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। তবে গমগুলো আত্মসাতের উদ্দেশ্যে মজুদ করা হয়ে থাকলে এবং এ ঘটনায় তারা জড়িত থাকলে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।  

এ ব্যাপারে প্রকল্পের সভাপতি ও ইউপি সদস্য শাহানাজ বেগম এবং  চেয়ারম্যান শেখ তোফাজ্জল হোসেনের সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলেও তাদের পাওয়া যায়নি।  

নাটোর সদর উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) মোঃ ওমর খৈয়াম বাংলানিউজকে জানান, সদর উপজেলার মাঝদিয়া গ্রামে একটি খাল খননের জন্য কাজের বিনিময়ে খাদ্য কর্মসূচির আওতায় সাড়ে আট মেট্রিক টন গম বরাদ্দ করা হয়। একইসঙ্গে ইউনিয়ন পরিষদের মহিলা মেম্বার শাহনাজ বেগমকে প্রকল্প সভাপতি করা হয় ।  

প্রকল্পের কাজ গত জুন মাসের আগেই সম্পন্ন হওয়ার পর বরাদ্দকৃত গম উত্তোলনের জন্য তাকে ডিউ লেটার দেওয়া হয়। তবে শ্রমিকদের মাঝে গম বিতরণ করেছেন কিনা, তা তার জানা নেই। যেহেতু পুলিশ বরাদ্দকৃত সরকারি গম উদ্ধার করেছেন, সেহেতু বিষয়টির খোঁজ-খবর নিয়ে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।  

নাটোর সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মোঃ জাহাঙ্গীর হোসেন বাংলানিউজকে জানান, প্রকল্প সভাপতি কাজ শেষ হওয়ার পর শ্রমিকদের মজুরি পরিশোধে বরাদ্দ পাওয়া গমগুলোর ৭৫ ভাগ বিক্রি করার এখতিয়ার রাখেন। শাহনাজ মেম্বার সেটা করেছেন কিনা, তা তার জানা নেই। তবে যেহেতু পুলিশ গমগুলো উদ্ধার করেছেন, পুলিশের তদন্তে যদি  তারা দোষী সাব্যস্ত হন, তাহলে  পরবর্তীতে আদালতের মাধ্যমে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।  

ইতোমধ্যে পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ইউপি চেয়ারম্যান শেখ তোফাজ্জল হোসেন ও শাহনাজ মেম্বারকে থানায় ডেকে পাঠিয়েছেন। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে জানান তিনি।   

বাংলাদেশ সময়: ২১২৮ ঘণ্টা, আগস্ট ০৫, ২০২০
ওএফবি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।