ঢাকা: অন্যবারের তুলনায় যাত্রী কিছুটা কম হলেও ঈদে গাবতলী হয়ে ঘরমুখো যাত্রীরা তীব্র যানজট আর টিকিট সংকটে চরম ভোগান্তিতে পড়ছেন।
বৃহস্পতিবার (৩০ জুলাই) সরেজমিনে দেখা গেছে, গাবতলী টার্মিনালে পৌঁছাতে তীব্র যানজটে যাত্রীদের দীর্ঘ সময় রাস্তায় অপেক্ষা করতে হচ্ছে।
মূলত যারা অগ্রিম টিকিট কাটতে পারেননি কিন্তু এখন টার্মিনালে এসেছেন বাড়ি যাওয়ার জন্য তারাই বেশি ভোগান্তিতে পড়ছেন।
সকাল ৯টায় গাবতলী বাস টার্মিনালে আসেন বগুড়ার শিহাব উদ্দিন। সাড়ে ১২টা পর্যন্ত তিনি কোনো বাসের টিকিট সংগ্রহ করতে পারেননি।
শিহাব উদ্দিন বাংলানিউজকে জানান, সবাই বলছে টিকিট আগেই বিক্রি হয়ে গেছে। আরও কিছুক্ষণ তিনি বাসের জন্য অপেক্ষা করবেন। শেষ পর্যন্ত টিকিট না পেলে তিনি বাড়ি যাওয়ার সিদ্ধান্ত বাতিল করবেন।
তিনি আরও জানান, পরিবারের অন্য সদস্যরা মহামারির কারণে মে মাসের দিকে একেবারে বাড়ি চলে গেছে। তিনি ঢাকায় একা থাকেন।
রাজশাহী যাবেন আরেক যাত্রী মোহাম্মদ সোহেল। তিনি বাংলানিউজকে জানান, তিনি সকাল ১০টায় এসে সাড়ে ১২টা পর্যন্ত কোনো বাসের টিকিট পাননি।
পরিবহন সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ফেরিঘাটে জ্যামে আটকা পড়ায় বাসগুলো সময়মতো গাবতলীতে ফিরে আসতে পারছে না। একই সঙ্গে স্বাস্থ্যবিধি মেনে বাসের অর্ধেক সিট ফাঁকা রাখার কারণে বাসের সংকটটা আরেকটু বেড়েছে।
তবে কিছু বাস করোনা সংক্রমণ রোধে অর্ধেক সিট ফাঁকা রাখার নিয়মটি যথাযথ ভাবে মানছেন না বলেও অভিযোগ করেছেন যাত্রীরা।
সোহাগ পরিবহনের ম্যানেজার মঈনউদ্দীন বলেন, বাসের ক্যাপাসিটিও কম। সব টিকিট অগ্রিম বিক্রি হয়ে গেছে। ফলে এখন যারা আসছেন তারা টিকিট পাচ্ছেন না। তাদের অনেকে লোকাল বাসে যাচ্ছেন।
তিনি বলেন, যারা অগ্রিম টিকিট কেটেছেন তাদের বাস পেতে খুব একটা সমস্যা হচ্ছে না। কিন্তু যারা এখন টিকিট কেটে বাড়ি যেতে চাইছেন মূলত তারাই বাস পাচ্ছেন না।
এদিকে কল্যাণপুর, টেকনিক্যাল মোড়, গাবতলী, আমিন বাজার ব্রিজ এলাকায় তীব্র যানজট দেখা গেছে।
আব্দুল আজিজ নামে একজন যাত্রী বলেন, আজিমপুর থেকে এসেছি। কল্যাণপুর থেকে গাবতলী বাস টার্মিনালে আসতে তার দেড় ঘণ্টার বেশি সময় লেগেছে। জ্যামের কারণে অনেক যাত্রী আগে থেকে নেমে হেঁটে আসেন। কিন্তু সঙ্গে ভারী ব্যাগ থাকায় এই সামান্য রাস্তা পার হতে দেড় ঘণ্টার মতো গাড়িতে বসেছিলাম।
অন্যান্য ঈদের তুলনায় এবার ঈদে ঘরমুখো যাত্রী কিছুটা কম।
যাত্রী কম হওয়া প্রসঙ্গে পরিবহন সংশ্লিষ্টরা বলছেন, করোনা সংক্রমণের ভয়ে অনেকে বাড়ি না গিয়ে ঢাকায় ঈদ করবেন।
মহামারির শুরুতে বাড়ি যাওয়ার পর অনেকে আর ঢাকায় ফেরেননি, অনেকে চাকরি হারিয়ে বেকার বসে আছেন। অনেকে আবার এই সময়ে খরচ বাঁচাতে বাড়ি যাচ্ছেন না। অনেকে এই মহামারির মধ্যে একেবারে বাড়ি চলে গেছেন ফলে ঢাকায় তুলনামূলক কম লোক আছে বলেও মনে করেন তারা।
বাংলাদেশ সময়: ১৫৪২ ঘণ্টা, জুলাই ৩০, ২০২০
এমইউএম/এইচএডি/