ঢাকা, বুধবার, ১০ বৈশাখ ১৪৩১, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

শিকলবাহা বন্ধের জের: চট্টগ্রাম বিদ্যুৎ কেন্দ্রের প্রধান প্রকৌশলীকে বদলি

হাজেরা শিউলি, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২৩৫২ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ৯, ২০১০

চট্টগ্রাম: চট্টগ্রাম বিদ্যুৎ কেন্দ্রের প্রধান প্রকৌশলী (উৎপাদন) মোহাম্মদ আবু তাহেরকে বিদ্যুৎ উন্নয়ন  বোর্ড (পিডিবি)’র ঢাকা  অফিসে বদলি করা হয়েছে।  

বুধবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চট্টগ্রামের শিকলবাহার ১৫০ মেগাওয়াটের পিকিং পাওয়ার প্ল্যান্ট উদ্ধোধন করার চার ঘণ্টার মাথায় তা বন্ধ হয়ে যায়।

ধারণা করা হচ্ছে, এরই শাস্তিস্বরূপ এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তবে পিডিবি চেয়ারম্যান আলমগীর কবির এটিকে রুটিন বদলি বলে দাবি করেছেন।

বৃহস্পতিবার দুপুরে এ বদলি আদেশ পান আবু তাহের। বদলি আদেশের চিঠিতে তাকে চট্টগ্রাম বিদ্যুৎ কেন্দ্রের দায়িত্ব হস্তান্তরের জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়।

বদলির আদেশ পেয়ে হতভম্ভ আবু তাহের বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম.বিডিকে বলেন, ‘আমি কিছুই বুঝতে পারছি না কেন আমাকে বদলি করা হলো। ’

বদলি আদেশকে অযৌক্তিক দাবি করে তিনি বলেন, ‘যদি নবনির্মিত শিকলবাহা বিদ্যুৎকেন্দ্র বন্ধ হওয়ার কারণে আমাকে দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়, তবে সেটি খুবই অযৌক্তিক হবে। কেন না ওই বিদ্যুৎ কেন্দ্রের সঙ্গে আমার কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই। ’

তিনি আরও বলেন, ‘শিকলবাহা বিদ্যুৎ কেন্দ্র আমাকে বুঝিয়ে দেওয়া হয়নি। যদি দায় কারও থেকেই থাকে, তবে সেটা প্রকল্প পরিচালকের। ’

আদেশ মতো এরই মধ্যে দায়িত্ব হস্তান্তর করেছেন জানিয়ে তিনি বলেন, ‘বদলি আদেশ আসার পর ভেবেছিলাম ঈদের পরই বিদ্যুৎ কেন্দ্রের দায়িত্ব হস্তান্তর করব। কিন্তু ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ আমাকে  তাৎক্ষণিকভাবে দায়িত্ব হস্তান্তর করতে বলায় বিকেলেই ম্যানেজার (রক্ষণাবেক্ষণ) বিমল কুমার হালদারকে দায়িত্ব হস্তান্তর করেছি। ’

আবু তাহের বলেন, শিকলবাহা পাওয়ার প্ল্যান্ট বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর প্রকল্প পরিচালক আসাদুল্লাহ মিঞা ঢাকায় চলে যান। এ প্রকল্পের দায়িত্ব আমার না হলেও রাতে ঢাকা থেকে টেলিফোন করে আমাকে প্ল্যান্ট চালু করতে বলা হয়। আমি তড়িঘড়ি করে প্রকল্পের নির্মাতা প্রতিষ্ঠান সিনা হাইড্রো কর্পোরেশনের লোকদের ডেকে রাত ১২টায় এটি চালু করি।
 
উল্লেখ্য, গ্যাসের চাপ কমে যাওয়ায় চালু হওয়ার চার ঘণ্টার মাথায় শিকলবাহা পিকিং পাওয়ার প্ল্যান্ট বন্ধ হয়ে যায়।

প্রকল্প পরিচালক আসাদুল্লাহ মিঞা বলেন, ৩৮ মিলিয়ন চাহিদার বিপরীতে গ্যাসের চাপ ৮ মিলিয়নে নেমে আসার কারণে মেশিন বাঁচাতে প্ল্যান্ট সাময়িকভাবে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল।

তবে এখন ২৮ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস পাওয়ার পর ওই বিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে ১৩০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রিডে যাচ্ছে বলে তিনি জানান।

শিকলবাহা প্ল্যান্ট উদ্ধোধনের পর তার ঢাকায় চলে যাওয়ার কথা স্বীকার করে তিনি বলেন, ‘আমার কাজ শেষ। তাই ঢাকায় চলে এসেছি। ’  

প্ল্যান্টের ম্যানেজার ও সিনা হাইড্রোকর্পোরেশন এর দায়িত্বে রয়েছে বলে তিনি জানান।

তবে প্রধান প্রকৌশলী আবু তাহেরের বদলির ব্যাপারে তিনি কিছু জানেন না বলে জানান।

আবু তাহেরে বদলি প্রসঙ্গে পিডিবি’র চেয়ারম্যান প্রকৌশলী এ এস এম আলমগীর কবির বলেন, ‘এটি রুটিন বদলি। শিকলবাহা প্ল্যান্ট বন্ধ হওয়ার সঙ্গে এর কোনো সম্পর্ক নেই। পর্যায়ক্রমে বিদ্যুৎ বিতরণসহ অন্যান্য বিভাগে রদবদলের দু’টি ঘটনা একই সঙ্গে ঘটায় বিষয়টি শাস্তিমূলক মনে হচ্ছে। ’

তিনি আরো পরিষ্কার করে বলেন, শিকলবাহা কেন বন্ধ হলো তার কারণ অমাদের কাছে পরিষ্কার। তাই এ ব্যাপারে কোনো তদন্ত কমিটিও গঠন করা হয়নি।

বাংলাদেশ সময়: ২৩৪০ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ০৯, ২০১০

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।