ঢাকা, শুক্রবার, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৮ রমজান ১৪৪৫

জাতীয়

টিভির ভলিউম বাড়িয়ে মারধর করতো ওরা!

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৩০৮ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২০, ২০২০
টিভির ভলিউম বাড়িয়ে মারধর করতো ওরা!

মুন্সিগঞ্জ: এক বছর আগে নিজেদের পছন্দে পালিয়ে গিয়ে বেকার যুবক রফিকুল ইসলাম হৃদয়কে বিয়ে করেন আখি আক্তার লাবনী। তিন মাস শ্বশুরবাড়িতে ভালই চলছিল তাদের সংসার জীবন। কিন্তু এরপর যৌতুকের ৫ লাখ টাকার জন্য নেমে আসে লাবনীর জীবনে অশান্তি। 

টাকা আনতে বাবা-মায়ের কাছে না যাওয়ায় অনার্স দ্বিতীয় বর্ষে পড়ুয়া লাবনীকে নানাভাবে নির্যাতন করতে থাকে স্বামী, শ্বশুর, শাশুড়ি ও দেবর। কখনো টিভির ভলিউম বাড়িয়ে মারধর করতো, কখনো হাতের নখ উপড়ে দিতো আবার কখনো চামচ গরম করে গলায় ছ্যাকা দিতো বলে জানায় লাবনী।

এমনকি হাত পা বেঁধে দুইবার ফিনাইলও খাওয়ানো হয়েছে তাকে।  

রোববার (১৯ জানুয়ারি) মুন্সিগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি লাবনী নির্যাতনের ব্যাপারে এমনটিই বলছিলেন। এর আগে শনিবার (১৮ জানুয়ারি) হাসপাতালে ভর্তি হন তিনি।  

বিয়ের সময়কার ছবি আর বর্তমানের চেহারা দেখে লাবনীর মা হাছনা বেগম বলেন, আমার মেয়েকে আমিই চিনতে পারছিনা।  

এ ঘটনায় (১৩ জানুয়ারি) আদালতে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে স্বামী হৃদয়, শ্বশুর রুহুল আমিন ভূঁইয়া, শাশুড়ি শান্তি বেগম, দেবর রিফাত ভূঁইয়ার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়।  

বাম থেকে বিয়ের সময় লাবনী ও বর্তমানের লাবনীলাবনীর স্বজনরা জানান, বিয়ের এক বছরের মধ্যে পরিবারে নেমে আসে অশান্তি। শ্বশুরবাড়ির সদস্যরা যৌতুকের কারণে মেয়েকে নানাভাবে নির্যাতন করতো। অত্যাচারে চোখে দেখতে পারছে না মেয়েটি। গেল বছরে দুইবার শ্বশুরবাড়ির লোকজন হাত পা বেঁধে ফিনাইল খাইয়ে নির্যাতন করে তাকে। একাধিকবার মুন্সিগঞ্জ জেনারেল হাসপাতাল ও ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল ভর্তি করা হয়েছে তাকে। এছাড়াও হাতের নখ উঠিয়ে নেওয়ার মতো নির্যাতনও করেছে শ্বশুরবাড়ির লোকজন। একপর্যায়ে গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়লে শ্বশুরবাড়ির লোকজন তাকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে পালিয়ে যায়। এরপর সেখান থেকে মেয়ের পরিবারের লোকজন গতকাল শনিবার মুন্সিগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে এনে ভর্তি করে।  

মুন্সিগঞ্জ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আনিচুর রহমান জানান, হাসপাতালে গিয়ে মেয়েটির সঙ্গে কথা হয়েছে। মামলাটি আদালতে করা হয়েছে। এ ব্যাপারে বিস্তারিত খতিয়ে দেখা হচ্ছে।  

বাংলাদেশ সময়: ২২০৫ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৯, ২০২০
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।