বরগুনা: বরগুনায় স্বাস্থ্য বিভাগের চতুর্থ শ্রেণীর ৫০ জন কর্মচারী নিয়োগের প্রক্রিয়া স্থগিত হয়ে গেছে। নিয়োগ কমিটির সদস্যপদ থেকে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (এডিসি) পদত্যাগ করায় শুক্রবার নিয়োগ প্রক্রিয়া স্থগিত করা হয়েছে বলে স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
জানা গেছে, নিয়োগে ব্যাপক আর্থিক লেনদেন, অনিয়ম ও সরকারি দলের প্রভাবশালী নেতাদের অযাচিত হস্তক্ষেপের কারণে বিব্রত হয়ে নিয়োগ কমিটি থেকে পদত্যাগ করেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক(এডিসি) মো. আব্দুল আলীম।
জেলা প্রশাসনের একটি সূত্র জানায়, এডিসি মো. আব্দুল আলীম গত শুক্রবার নিয়োগ কমিটিতে দায়িত্ব পালনে অপারগতা জানিয়ে জেলা প্রশাসকের কাছে পদত্যাগপত্র দেন। পদত্যাগের কারণ হিসেবে তিনি নিরপেক্ষভাবে দায়িত্ব পালন করতে না পারার কথা উলেখ করেন।
এডিসি আব্দুল আলীমের সঙ্গে বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কমবিডির পক্ষ থেকে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘নিয়োগ কমিটির সদস্য হিসেবে চাকরি প্রত্যাশিদের সঙ্গে ন্যায়বিচার করতে পারবো না- -এই আশংকায় পদত্যাগ করেছি। ’
এডিসির পদত্যাগের কথা স্বীকার করেছেন বরগুনা জেলা প্রশাসক মো. মজিবুর রহমান।
জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয়ের কর্মকর্তারা জানান, বরগুনায় স্বাস্থ্য বিভাগের চতুর্থ শ্রেণীর ৫০ জন কর্মচারী নিয়োগের জন্য সম্প্রতি বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়। নিয়োগ পেতে প্রায় এক হাজার ১০০ জন আবেদন করেন। গত বৃহস্পতিবার বরগুনা সিভিল সার্জন কার্যালয়ে আবেদনকারীদের মৌখিক পরীক্ষা শুরু হয়। স্বাস্থ্য বিভাগের বরিশাল বিভাগীয় পরিচালক ডা. নুরুল ইসলামকে সভাপতি, বরগুনার সিভিল সার্জন ডা. এএইচএম জহিরুল ইসলামকে সদস্য সচিব এবং স্বাস্থ্য বিভাগের বরিশাল বিভাগীয় সহকারী পরিচালক ডা. মোস্তাক আল মেহেদী ও বরগুনার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মো. আব্দুল আলীমকে সদস্য করে চার সদস্যের নিয়োগ কমিটি গঠন করা হয়।
স্বাস্থ্য বিভাগের একটি সূত্র জানায়, ৬ আগস্ট পর্যন্ত পর্যায়ক্রমে মৌখিক পরীক্ষা নেওয়ার সিদ্ধান্ত ছিল। বৃহস্পতিবার মৌখিক পরীক্ষা শুরুর পর সরকার দলীয় কতিপয় প্রভাবশালী নেতার পক্ষ থেকে তাঁদের পছন্দের লোকদের নিয়োগ দিতে নানাভাবে চাপ ও তদ্বির আসতে থাকে। পরে এডিসি পদত্যাগের সিদ্ধান্ত নেন।
দলীয় প্রভাব বিস্তার ও অনিয়ম প্রসঙ্গে জেলা আ. লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক গোলাম সরোয়ার টুকু বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম.বিডিকে বলেন, দলের নাম ভাঙ্গিয়ে কেউ ঘুষ নিলে তা নিজ দায়িত্বে নিতে পারেন। দল এসব অপকর্মের দায় নেবে না।
জেলা আ.লীগের সভাপতি ও সদরের সাংসদ ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভু এ প্রসঙ্গে বলেন, এডিসি সাহেবের পদত্যাগের কথা শুনেছি। তবে চাপ প্রয়োগ ও তালিকা দেওয়ার বিষয়টি আমার জানা নেই।
বাংলাদেশ সময়: ১৫৫৫ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ০৪, ২০১০