ঢাকা, শুক্রবার, ৬ বৈশাখ ১৪৩১, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

আমরা কেবল পানি-সীমান্ত নয়, ভালো অভিজ্ঞতাও বিনিময় করবো

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৩৪১ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৬, ২০১৮
আমরা কেবল পানি-সীমান্ত নয়, ভালো অভিজ্ঞতাও বিনিময় করবো নৈশভোজ অনুষ্ঠানে বক্তব্য দিচ্ছেন সুরেষ প্রভু-ছবি-ডি এইচ বাদল

ঢাকা: ভারত ও বাংলাদেশের কমন ইস্যু বা ইন্টারেস্টের দিকে নজর দিতে হবে। এমন উদ্যোগ নিতে হবে যাতে দুই দেশেরই সমান লাভ হয়। চুক্তিগুলোতেও তৈরি করতে হবে সমান সুযোগ। যতো বেশি সম্ভব ভালো ভবিষ্যৎ কাজের সুযোগ সৃষ্টি করতে হবে। আমরা কেবল আমাদের পণ্য, ব্যবসা, পানি, জলবায়ু আর সীমান্তই বিনিময় করবো না, বিনিময় করবো আমাদের সব ভালো অভ্যাস ও অভিজ্ঞতাকে- বলছিলেন ভরতের বাণিজ্য ও শিল্পমন্ত্রী সুরেষ প্রভু।

মঙ্গলবার (২৫ সেপ্টেম্বর) রাতে রাজধানীর এক হোটেলে বাংলাদেশে সফররত সুরেষ প্রভুর সম্মানে দেওয়া বাংলাদেশের বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমদের নৈশভোজে দেওয়া ৩০ মিনিটের বক্তৃতায় তিনি একথা বলেন।
 
তিনি বলেন, আমাদের অনেক ক্ষেত্রেই কাজ করার সুযোগ আছে।

আমরা এখন রেল যোগাযোগ ও বিদ্যুতের যৌথ গ্রিড তৈরিতে কাজ করতে পারি। ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রসার এবং বাণিজ্য ঘাটতি দূর করতে কানেক্টিভিটি বাড়ানোর কোনো বিকল্প নেই। এক্ষেত্রে রেল হতে পারে সর্বোত্তম ক্ষেত্র। ঢাকা থেকে ভারতের সব বড় শহর এবং রাজ্যে রেল যেতে পারে। ভারতের শহরগুলো থেকেও আসতে পারে মাল ও যাত্রীবাহী ওয়াগন ও কোচ। এতে ব্যবসা বাড়বে, ঘাটতি কমবে।
 
সুরেষ প্রভু বলেন, বাংলাদেশ টেক্সটাইল এবং তৈরি পোশাক খাতে বিশ্বে অপ্রতিদ্বন্দ্বী হয়ে উঠেছে। কিন্ত ভারতে তৈরি পোশাক পাঠানোর ক্ষেত্রে কিছু সমস্যা আছে। পাটপণ্য পাঠানোতে সমস্যা আছে। এসব সমস্যা সমাধানে দুই দেশের যৌথ উদ্যোগ লাগবে। আমরা এসব ছোট ছোট সমস্যার সমাধান করবো।
 
তিনি বলেন, আমি বাংলাদেশের উন্নয়ন দেখতে এসেছি। যে বাংলাদেশ তাদের সীমিত সম্পদের সীমাবদ্ধতা কাটিয়ে উন্নয়নের নতুন সোঁপানে পা রেখেছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দীপ্ত পদক্ষেপেই এটা সম্ভব হয়েছে। আমি সেই উন্নয়নই দেখতে এসেছি।
 
আমি মনে করি যেকোন দেশের মূল উন্নয়নই হলো তার আর্থ-সামাজিক খাতের উন্নয়ন। যা সম্ভব হলে অবসম্ভাবী উন্নতি ঘটে অর্থনীতির। শেখ হাসিনা এটা করতে পেরেছেন-বলেন সুরেষ প্রভু।
 
তিনি বলেন, এবার আমি দু’টি কারণে বাংলাদেশ সফরে এসেছি। প্রথমত, আমি বাংলাদেশকে অভিনন্দন জানাতে চাই। কারণ বর্তমান বাংলাদেশে মানবিক ও অর্থনৈতিক উন্নয়ন সাধিত হয়েছে। নির্যাতিত রোহিঙ্গাদের আশ্রয়দান, সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনী সৃষ্টিসহ বিভিন্ন পদক্ষেপের মাধ্যমে সরকার দেশে মানবিক ও অর্থনৈতিক উন্নয়ন ঘটিয়েছে। এ জন্য শেখ হাসিনার সরকার প্রশংসা পাওয়ার যোগ্য।
 
অভিনন্দনের পাশাপাশি তিনি বাংলাদেশকে ধন্যবাদও জানান। তিনি বলেন, বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যকার বিদ্যমান সম্পর্ক অতীতের যেকোন সময়ের তুলনায় চমৎকার। দু'দেশের মধ্যে বাণিজ্য সম্পর্কিত যেসব খুঁটিনাটি সমস্যা ছিল তা আলোচনার মাধ্যমে সমাধান করা হয়েছে। এক্ষেত্রে বাংলাদেশ চমৎকার সহযোগিতা করেছে। এ কারণে বাংলাদেশ সরকারকে ধন্যবাদ জানাই।
 
বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ তার বক্তৃতায় বলেন, ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের বর্তমানে তেমন কোনো বাণিজ্য সংক্রান্ত জটিলতা নেই। যা ছিল তা আমরা আলোচনার মাধ্যমে সমাধান করেছি। ভারতের কাছ থেকে আমরা অস্ত্র ও তামাকপণ্য ছাড়া প্রায় সব পণ্যেই ডিউটি ফ্রি ও কোটা ফ্রি সুবিধাও পাচ্ছি। তবু দুই দেশের বাণিজ্য ঘাটতি প্রকট। প্রায় ১০ বিলিয়ন ডলারের আমদানির বিপরীতে আমরা মাত্র ৮২ মিলিয়ন ডলারের পণ্য রফতানি করি।
 
বর্তমানে দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য ঘাটতি থাকলেও তাতে অসন্তুষ্ট নন উল্লেখ করে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, ‘বাণিজ্য ঘাটতিতে আমরা অসন্তুষ্ট নই। কারণ আমাদের যা প্রয়োজন তা আমরা ভারতের থেকে পাচ্ছি। আবার এটাও স্বীকার করতে হবে আমাদের রফতানি পণ্যের সংখ্যা ও বৈচিত্র্যও কম।
 
নৈশভোজে কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী, বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটনমন্ত্রী শাহজাহান কামাল, ঢাকায় নিযুক্ত ভারতীয় রাষ্ট্রদূত হর্ষবর্ধন শ্রিংলা, আওয়ামী লীগ সভানেত্রীর বেসরকারি উন্নয়নখাত বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের ভারপ্রাপ্ত সচিব মুন্সী শফিউল হক, মেট্রোপলিটন চেম্বারের সাবেক সভাপতি মাহবুবুর রহমান, বাংলাদেশ তৈরি পোশাক প্রস্তুত ও রফতানিকারক সংগঠনের (বিজিএমইএ) সভাপতি সিদ্দিকুর রহমান, সিটি গ্রুপের চেয়ারম্যান ফজলুর রহমান, মেঘনা গ্রুপের চেয়ারম্যান মোস্তফা কামাল, বাংলাদেশ প্রতিযোগিতা কমিশনের চেয়ারম্যান ইকবাল খানসহ দুই দেশের ব্যবসায়ী ও সংশ্লিষ্টরা উপস্থিত ছিলেন।

বাংলাদেশ সময়: ২৩৩৯ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৫, ২০১৮ 
আরএম/আরআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।