ঢাকা, শনিবার, ৬ বৈশাখ ১৪৩১, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

লাঙ্গলবন্দে অষ্টমী স্নানে পুণ্যার্থীদের ঢল

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৬২০ ঘণ্টা, মার্চ ২৪, ২০১৮
লাঙ্গলবন্দে অষ্টমী স্নানে পুণ্যার্থীদের ঢল লাঙ্গলবন্দের ব্রহ্মপুত্র নদে চলছে অষ্টমী স্নান। ছবি: বাংলানিউজ

নারায়ণগঞ্জ: নারায়ণগঞ্জের বন্দর উপজেলায় লাঙ্গলবন্দের ব্রহ্মপুত্র নদে অষ্টমী স্নানে হিন্দু ধর্মাবলম্বী দেশ-বিদেশের লাখো পুণ্যার্থীদের ঢল নেমেছে।

দুই দিনব্যাপী এ উৎসবে জেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন, বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষসহ (বিআইডব্লিউটিএ) বিভিন্ন ধর্মীয় সংস্থা এ উৎসবে নানাভাবে সহায়তা করছে।

শনিবার (২৪ মার্চ) সকাল ১০টা ১৪ মিনিটে স্নান উৎসব শুরু হয়।

চলবে রোববার (২৫ মার্চ) সকাল ৮টা পর্যন্ত।

এবার ললিত সাধুর ঘাট, অন্নপূর্ণা ঘাট, রাজ ঘাট, কালীগঞ্জ ঘাট, মা কুঁড়ি সাধুর ঘাট, মহাত্মা গান্ধী ঘাট, বড়দেশ্বরী ঘাট, জয়কালি ঘাট, রক্ষাকালী ঘাট, প্রেম তলা ঘাট, চর শ্রীরাম ঘাট, সাবদি ঘাট, বাসনকালী ও জগৎবন্ধু ঘাটে স্নান করা হচ্ছে।

দেশ-বিদেশের ভক্তদের স্নানোৎসব শান্তিপূর্ণ ও নির্বিঘ্নে পালন করার লক্ষ্যে নারায়ণগঞ্জ ৫ আসনের সংসদ সদস্য একেএম সেলিম ওসমানসহ জেলা প্রশাসন ও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের স্নান উৎসবের আশেপাশে তৎপর দেখা গেছে।
লাঙ্গলবন্দের ব্রহ্মপুত্র নদে চলছে অষ্টমী স্নান।  ছবি: বাংলানিউজ
সরেজমিনে দেখা যায়, পুলিশ ও র‌্যাবসহ বিভিন্ন পর্যায়ের নিরাপত্তা সংস্থার পক্ষ থেকেও নেওয়া হয়েছে বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা। স্নানে আসা সবাইকে বিশেষভাবে তল্লাশি করা হচ্ছে, কাউকে মোবাইল ফোনে ছবি তুলতে দেওয়া হচ্ছে না। রয়েছে পুলিশ ও র‌্যার বিশেষ টহল।   

নদীতে প্রতিটি ঘাটকে কেন্দ্র করে ফায়ার সার্ভিসের পক্ষ থেকে বিশেষ টহলসহ মাইকিংয়ের ব্যবস্থা করা হয়েছে। যারা সাতার না জানেন তাদেরকে পানিতে নামতে বিশেষ সাবধানতা অবলম্বন করা হচ্ছে। খানিক দূরে দূরে মাইকিংয়ের ব্যবস্থা করা হয়েছে যাতে কেউ হারিয়ে গেলে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেওয়া যায়।  

স্নান উপলক্ষে ৩৩টি ধর্মীয় স্বেচ্ছাসেবী সামাজিক সেবামূলক সংগঠন পূণ্যার্থীদের সেবা দিতে ক্যাম্প স্থাপন করেছে। এসব ক্যাম্প থেকে পুণ্যার্থীদের রান্না করা খাবার ও চিকিৎসা সেবা দেওয়া হবে।  

স্থানীয় সংসদ সদস্য একেএম সেলিম ওসমান বাংলানিউজকে বলেন, স্নান উৎসব শান্তিপূর্ণ ও সুন্দরভাবে করার জন্য সব ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। প্রশাসন ও পুলিশ সতর্ক রয়েছে। এছাড়া যেকোনো অভিযোগ জানানোর জন্য এখানে হটলাইন নাম্বার দেওয়া রয়েছে।

লাঙ্গলবন্দ স্নানোৎসব উদযাপন পরিষদের কার্যকারী সদস্য শংকর সাহা বাংলানিউজকে বলেন, এবছর স্নানের তিথি দু’দিন হওয়ায় ভক্তরা শান্তিপূর্ণভাবে স্নান করতে পারছেন। শনিবার সকাল ১০টা ১৪ মিনিট থেকে পরদিন রোববার সকাল ৭টা ৫২ মিনিট পর্যন্ত তিথি রয়েছে। এ সময়ের মধ্যে ভক্তরা স্নান করবেন। ২০০ থেকে ২৫০ স্বেচ্ছাসেবক কর্মী ২৪ ঘণ্টা কাজ করছেন।

নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) মঈনুল হক বাংলানিউজকে বলেন, ১২শ’ এর বেশি পুলিশ সদস্য নিরাপত্তায় রয়েছেন। সার্বক্ষণিক টহলের ব্যবস্থা করা হয়েছে এবং সাদা পোশাকের নিরাপত্তা কর্মীরাও রয়েছে।  

২০১৫ সালের ২৭ মার্চ সকালে লাঙ্গলবন্দের ব্রহ্মপুত্র নদে হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা মহাষ্টমী পুণ্য স্নানোৎসবে আসেন। এসময় বেইলি সেতু ভেঙে পড়ার গুজব ছড়ালে হুড়োহুড়িতে পদদলিত হয়ে ৭ নারীসহ ১০ পুণ্যার্থীর মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় আরও ৩০ জন আহত হন।

বাংলাদেশ সময়: ১২২০ ঘণ্টা, মার্চ ২৪, ২০১৮
জিপি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।