ঢাকা, শনিবার, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

মৈত্রী এক্সপ্রেসে র‌্যাবের অভিযান নিয়ে প্রশ্ন

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৮৫৪ ঘণ্টা, আগস্ট ১২, ২০১০
মৈত্রী এক্সপ্রেসে র‌্যাবের অভিযান নিয়ে প্রশ্ন

ঢাকা: বুধবার সন্ধ্যায় মৈত্রী এক্সপ্রেস ট্রেনে কলকাতা থেকে আনা ভারতীয় কাপড় আটক করা নিয়ে নানা প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।

রাজধানীর বিমানবন্দর স্টেশন থেকে র‌্যাব-১ এর একটি দল প্রায় তিন কোটি টাকা মূল্যের ভারতীয় শাড়ি, থ্রি পিস, প্যান্ট, পাঞ্জাবি ও শার্ট উদ্ধার করে।

ট্রেন থেকে ১৫ জন বাংলাদেশি আমদানিকারককে ‘চোরাচালানি’ হিসেবে আটক করে ক্যাম্পে নিয়ে যায় তারা। এছাড়া স্টেশনের সামনে কাপড়বোঝাই ১০টি গাড়িও আটক করে র‌্যাব।

আটক করা গাড়িগুলোর কোনো চালকেরই হদিস পাওয়া যায়নি। শনাক্ত করা যায়নি কাপড়ের মালিকদেরও।

বৃহস্পতিবার দুপুরে র‌্যাব-১ কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে চোরাচালানি সন্দেহে আটক করা ব্যবসায়ীদের হাজির করা হলেও সাংবাদিকরা তাদের সঙ্গে কথা বলতে চাইলে তাতে বারবার বাধ সাধে র‌্যাব।

আটক ব্যবসায়ীরা এলসি’র মাধ্যমে আগাম অর্ডার দেওয়ার কাগজপত্র দেখানো সত্ত্বেও র‌্যাব তা আমলে নিচ্ছে না বলে অভিযোগ উঠেছে।

আটক করা মালামালের মূল্য পাঁচ কোটি টাকা হতে পারে বলে বুধবার রাতে র‌্যাব দাবি করে। অথচ  বৃহস্পতিবারের সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, কাপড়ের মূল্য তিন কোটি টাকা হতে পারে।

গ্রেপ্তার হওয়া ব্যবসায়ীরা র‌্যাব কার্যালয়ে সাংবাদিকদের বলেন, আটক হওয়া মালামাল তাদের নয়। কেননা তারা কেউ সঙ্গে করে কাপড় নিয়ে আসেননি। তারা কেবল বিভিন্ন মালামালের অর্ডার দিয়ে কলকাতা থেকে ফিরছিলেন। অন্য লোকের আনা মালামাল তাদের বলে চালিয়ে দিয়ে  র‌্যাব তাদের ফাঁসিয়ে দেওয়ার পাঁয়তারা করছে বলেও অভিযোগ করেন আটক ব্যবসায়ীরা।

জানা গেছে, আটক ব্যবসায়ীদের মধ্যে দেবল চৌধুরী এলিফ্যান্ট রোডে ইস্টার্ন মল্লিক শপিং মলের একটি দোকানের মালিক। মো. আমজাদ হোসেন হাজীর অভিজাত পোশাকের দোকান গুলশানে।

তারা জানান, ঈদ সামনে রেখে ভারতের নামকরা পোশাক ও শাড়ি প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠানগুলোতে আগাম অর্ডার দিতে কলকাতা গিয়েছিলেন তারা। সেখানে এলসি’র মাধ্যমে অর্ডার সম্পন্ন করে খালি হাতে মৈত্রী এক্সপ্রেসে ফিরছিলেন তারা। তাদের মালামাল আসবে আরও ১৪/১৫ দিন পর।

দেবল চৌধুরীর অভিযোগ, র‌্যাব হয়তো সংঘবদ্ধ কোনো চোরাচালান চক্রের মালামাল আটক  করেছে। কিন্তু চোরা কারবারিদের না পেয়ে অন্যায়ভাবে তাদের আটক ও হয়রানি করছে।

আটক আরেক ব্যবসায়ী আমজাদ হোসেন বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম.বিডির কাছে প্রশ্ন রাখেন, ‘বিমানবন্দর স্টেশন ঘিরে র‌্যাব অভিযান চালালো, তাহলে বেষ্টনির ফাঁক গ’লে কী করে ১০ চালক ও চোরাকারবারিরা সরে পড়ল? এটা  সন্দেহজনক। ’

আসল চোরাচালানিদের ধরতে ব্যর্থ হয়ে র‌্যাব বৈধ ব্যবসায়ীদের আটক ও হয়রানি করছে বলেও অভিযোগ গুলশানের এই কাপড় ব্যবসায়ীর।

তবে বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম.বিডির কাছে অভিযান পরিচালনাকারী রাব-১ এর সিনিয়র এএসপি মোহাম্মদ জহিরুল ইসলামের দাবি, ‘১৫ ব্যবসায়ীকে তারা কাপড়সহ হাতেনাতে গ্রেপ্তার  করেছেন। তাই এরা সবাই চোরাকারবারী। ’

সাংবাদিকরা প্রশ্ন রাখেন, ‘বিমানবন্দর স্টেশনে ট্রেন থেকে ব্যবসায়ীদের আর স্টেশনের সামনে গাড়ি থেকে মালামাল আটক করা হলো। তাহলে কী ভাবে প্রমাণ হয় যে আটক ব্যবসায়ীরাই এসবের মালিক?’ জবাবে জহিরুল ইসলাম বলেন, ‘এ নিয়ে আমরা কিছু জানাতে পারবো না। থানায় পাঠানোর পর খোঁজ নেবেন। ’

অভিযান পরিচালনাকারী র‌্যাবের অপর সিনিয়র এএসপি মোহাম্মদ ইলতুতমিশ এক প্রশ্নের জবাবে বলেন, ‘দৌড়াদৌড়ি আর হুড়োহুড়ির সময় ১০ গাড়ি চালক কে কোথায় গেল তা বলা মুশকিল। ’

সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ইলতুতমিশ বলেন, ‘আটক করা মালামালের তালিকা এখনো চূড়ান্ত হয়নি। তাই সুনির্দিষ্ট কিছু জানানো যাচ্ছে না। ’

বাংলাদেশ সময়: ১৯২০ ঘণ্টা, আগস্ট ১২, ২০১০

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

জাতীয় এর সর্বশেষ