ঢাকা, সোমবার, ২৩ বৈশাখ ১৪৩১, ০৬ মে ২০২৪, ২৬ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

শ্রমিকদের নূন্যতম মজুরি ১৫ হাজার করার দাবি

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬১২ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৯, ২০১৫
শ্রমিকদের নূন্যতম মজুরি ১৫ হাজার করার দাবি ছবি : পিয়াস/ বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

ঢাকা: সব শ্রেণি-পেশার শ্রমিকদের নূন্যতম মজুরি আইন করে ১৫ হাজার টাকা করার দাবি জানিয়েছেন গার্মেন্টস শ্রমিক ফ্রন্টের মত বিনিময় সভার বক্তারা।
 
মঙ্গলবার (২৯ ডিসেম্বর) দুপুরে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) মিলনায়তনে বক্তারা এ দাবি জানান।


 
‘শ্রমিকের অধিকার ও মর্যাদাপূর্ণ জীবনমান বিবেচনায় গার্মেন্টস শ্রমিকদের ন্যায্য মজুরি’ শীর্ষক মতবিনিময় সভার সভাপতিত্ব করেন গার্মেন্টস শ্রমিক ফ্রন্টের সভাপতি আহসান হাবিব বুলবুল।
 
মতবিনিময় করেন বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দলের (বাসদ) সাধারণ সম্পাদক খালেকুজ্জামান, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম, অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ, বাসদ নেতা বজলুর রশিদ ফিরোজসহ শ্রমিক নেতারা।
 
বক্তারা শ্রমিকদের জীবনযাত্রার ব্যয়, বাংলাদেশে ও বিশ্বের বিভিন্ন রাষ্ট্রের বেতন কাঠামো তুলে ধরে শুধু গার্মেন্টসে নয়, সব সেক্টরের/শ্রেণির শ্রমিকদের জন্য আইন করে নূন্যতম মজুরি ১৫ হাজার করা দাবি জানান। এজন্য শ্রমিকদের ঐক্যবদ্ধ হয়ে দূর্বার গণআন্দোলনও করার পরামর্শ দেন তারা।
 
বাসদের সাধারণ সম্পাদক খালেকুজ্জামান বলেন, বেঁচে থাকা দু’ধরনের। প্রাণে বেঁচে থাকা আর মনুষত্ব নিয়ে বেঁচে থাকা। এখানে নূন্যতম ১৫ হাজার টাকা মজুরি করার দাবি প্রাণে বেঁচে থাকার জন্য।
 
তিনি বলেন, আমরা স্বাধীনতা যুদ্ধ করে তাদের (পাকিস্তান) তাড়িয়েছি কেন? ওই সময় আদমজিসহ সব মিলে শ্রমিকদের জন্য আবাসন ব্যবস্থা, চিকিৎসার ব্যবস্থা ছিল। আমরা সেসময় সেগুলোর মানোন্নয়নের জন্য সংগ্রাম করেছি। আর এখন আবাসন, চিকিৎসা ব্যবস্থার কিছু্ই নেই।
 
খালেকুজ্জামান বলেন, মালিকরা সবাই ঐক্যবদ্ধ। শ্রমিকদের মাঝে সেটা নেই। সব সেক্টরের শ্রমিকদের নূন্যতম মজুরি আইন করে ১৫ হাজার করার দবিতে শ্রমিকদের ঐক্যবদ্ধ গণআন্দোলন গড়ে তুলতে হবে।
 
সিপিবি সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম বলেন, বচন আছে, ‘আগে দিও গরুকে ঘাস, পরে করিও চাষ। ’ মালিকদের প্রয়োজনে গার্মেন্টস শ্রমিকদের ভালো রাখা দরকার। পে-কমিশনের নূন্যতম মজুরির চেয়ে শিক্ষানবিশ গার্মেন্ট শ্রমিকের বেতন বেশি হওয়া বাঞ্চনীয়। কাজের বুয়াসহ সব শ্রমিকদের নূন্যতম ১৫ হাজার করতে হবে।
 
তিনি বলেন, তথাকথিত উন্নয়নের ধারায় বৈষম্য, লুটপাট বেশি হচ্ছে। লুটেরা ভাগবাটোরা নিয়ে মারামারি করছে। মারামারি আওয়ামী লীগ-বিএনপির মধ্যে শুধু হয় না, আওয়ামী লীগ-আওয়ামী লীগেও হয়। এটা দেশকে নৈরাজ্যের দিকে নিয়ে যাবে। এই নৈরাজ্য থেকে বের করে আনার জন্যও নূন্যতম মজুরির আন্দোলনে যেতে হবে।
 
অর্থনীতিবিদ আনু মুহাম্মদ বলেন, বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে তিনটি খাত বেশি ভূমিকা রাখে। কৃষি, গার্মেন্টস ও বৈদেশিক রেমিট্যান্স। এ তিনখাতের শ্রমিকরাই সবচেয়ে বেশি নিরাপত্তাহীনতায়। তাদের জন্য দারিদ্র্য সীমার হিসেবে একটা মজুরি নির্ধারণ করতে হবে। জাতীয় বেতন কাঠামোয় সব শ্রমিকদের জন্য ১৫ হাজার বেতন করা উচিত।
 
এটা সরকার ও মালিকপক্ষের খুব সহজেই করা উচিত। কারণ তারা এরচেয়ে বেশি দাবি করলেও অযৌক্তিক হতো না। বেতন ধরতে হলে পরিবার ধরে ধরতে হয়, আর একটা পরিবারের নিম্ন খরচ ৩০ হাজার টাকার ওপরে। কিন্তু তা না করে বেঁচে থাকার জন্য এ সংখ্যা ধরেছে।
 
এসময় আনু মুহাম্মদ প্রশ্ন করেন, রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী আর এমপি-মন্ত্রীদের বেতন বাড়তে পারলে দেশের অর্থনীতির চালিকাশক্তি শ্রমিকদের কেনো নয়?
 
বাংলাদেশ সময়: ১৬১২ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৯, ২০১৫
এসইউজে/জেডএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।