ঢাকা, রবিবার, ২ ভাদ্র ১৪৩২, ১৭ আগস্ট ২০২৫, ২২ সফর ১৪৪৭

জাতীয়

রোহিঙ্গা সমস্যার স্থায়ী সমাধান চাই: খলিলুর রহমান

ডিপ্লোম্যাটিক করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩:১৩, আগস্ট ১৭, ২০২৫
রোহিঙ্গা সমস্যার স্থায়ী সমাধান চাই: খলিলুর রহমান সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলছেন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা খলিলুর রহমান। ছবি: জি এম মুজিবুর

জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা খলিলুর রহমান বলেছেন,  আমরা রোহিঙ্গা সমস্যার আশু ও স্থায়ী সমাধান চাই। তাদের বাড়িঘরে ফিরতে হবে।

রোববার (১৭ আগস্ট) রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলেন। এদিন রোহিঙ্গা ইস্যুতে বিদেশি কূটনীতিক ও আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সহযোগীদের ব্রিফ করেন তিনি।
 
ব্রিফিং শেষে জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা বলেন, আগামী ৩০ সেপ্টেম্বর রোহিঙ্গা ইস্যুতে জাতিসংঘে যে আন্তর্জাতিক সম্মেলন হবে, তারই অংশ হিসেবে এই প্রস্তুতি নিয়েছি। আপনারা জানেন, বিষয়টি আন্তর্জাতিক এজেন্ডা থেকে খসে পড়ছিল।  

তিনি বলেন, সে অবস্থা থেকে গত বছর প্রধান উপদেষ্টা একটি আন্তর্জাতিক সম্মেলনের জন্য জাতিসংঘের সব সদস্যকে আহ্বান জানিয়েছিলেন। সেখানে তাৎক্ষণিকভাবে আমরা সাড়া পেয়েছি।  

তিনি আরও বলেন, সর্বসম্মতভাবে এই সম্মেলন আয়োজনে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদ সিদ্ধান্ত নেয়। ১০৬টি দেশ এতে কো-স্পন্সর করে। সুতরাং এখন আন্তর্জাতিক সমর্থন যথেষ্ট আছে।  

খলিলুর রহমান বলেন, এই সম্মেলন হলো রোহিঙ্গাদের জন্য এবং বিশ্ব সম্প্রদায়ের জন্য  আশু সমাধানের পথ নির্দেশিকা দেওয়ার একটি স্থায়ী সুযোগ।  আমরা সেই কারণে রোহিঙ্গাদের ভয়েস, তাদের কথা,  তাদের  আশা-আকাঙ্ক্ষা,  তাদের স্বপ্ন, এসব আমরা সেখানে নিয়ে যেতে চাই।

তিনি বলেন, জাতিসংঘের সদস্য দেশগুলো সম্মেলনে অংশ নেয়,  তবে রোহিঙ্গারাতো আর সদস্য নয়। তবে কাউকে তো তাদের ভয়েসটা নিয়ে যেতে হবে। আমরা এ ধরনের প্রক্রিয়াতে সেই কাজটি করছি। আমরা আন্তর্জাতিক কমিউনিটিতে যথেষ্ট সাড়া পাচ্ছি।  

তিনি আরও বলেন, সম্মেলনে যারা অংশ নেবেন, সেখান থেকে আপনারা দেখতে  পাবেন, আমরা যে বার্তাটা নিয়ে যাব, রোহিঙ্গারা যে বার্তাটা পাঠাবেন, সেটা আগামী সেপ্টেম্বরে ইউএন কনফারেন্সের একটি বড় উপাদান।

আগামী ২৫ আগস্ট কক্সবাজারে রোহিঙ্গা সম্মেলনের বিষয়ে জানতে চাইলে  জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা বলেন, সবচেয়ে বড় কথা হলো আমরা এই সমস্যার আশু ও স্থায়ী সমাধান চাই। আপনি আন্তর্জাতিক সাহায্য দিয়ে কতদিন রাখবেন, তাদের তো বাড়িঘরে ফিরতে হবে। সেটাই আসল কথা।  

তিনি বলেন, সাহায্য কমে গেলে আমাদের হোস্ট কমিউনিটিতে তার প্রতিক্রিয়া পড়ে। সাহায্য যেন অব্যাহত থাকে, সেই প্রচেষ্টা তো করছি। কিছু  কিছু দাতা দেশের উদ্যোগের নিশানা পাচ্ছি। তবে সবচেয়ে বড় জিনিস হলো, তাদের ফেরত নেওয়া।  

ফরেন সার্ভিস একাডেমির ব্রিফিংয়ে ঢাকার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, রাশিয়া, চীন, সিঙ্গাপুর, তুরস্ক,  দক্ষিণ কোরিয়া, কানাডা, অস্ট্রেলিয়া,  কাতার, সৌদি আরবসহ ৫০টিরও বেশি মিশনের কূটনীতিকরা অংশ নেন।

রোহিঙ্গা ইস্যুতে  চলতি আগস্ট  মাস  থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত ৪ টি সম্মেলনের আয়োজন করা হয়েছে। জাতিসংঘ, কাতার এবং বাংলাদেশের উদ্যোগে আয়োজিত সম্মেলনগুলো অবহিত করতে এই ব্রিফিংয়ের আয়োজন করা হয় ।
 
রোহিঙ্গা ইস্যুতে আগস্ট থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত চারটি সম্মেলনের আয়োজন করা হয়েছে। জাতিসংঘ, কাতার ও বাংলাদেশের উদ্যোগে অনুষ্ঠেয় এসব সম্মেলন সম্পর্কে জানাতেই ব্রিফিংয়ের আয়োজন করা হয়।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানান, আগামী ২৫ আগস্ট কক্সবাজারে ‘অংশীজন সংলাপ: রোহিঙ্গা পরিস্থিতি নিয়ে উচ্চপর্যায়ের সম্মেলনে আলোচনার জন্য প্রাপ্ত বার্তা’ শীর্ষক আন্তর্জাতিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে।  

এরপর ৩০ সেপ্টেম্বর নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ফাঁকে অনুষ্ঠিত হবে রোহিঙ্গাবিষয়ক উচ্চপর্যায়ের সম্মেলন। আর কাতারের দোহায় ৬ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত হবে রোহিঙ্গাবিষয়ক আন্তর্জাতিক সম্মেলন।

রোহিঙ্গা ঢলের আট বছর পূর্তির দিন ২৫ আগস্ট কক্সবাজারে অনুষ্ঠেয় ওই সম্মেলনে  প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস প্রধান অতিথি হিসেবে যোগ  দিতে পারেন।

সম্মেলনে কয়েকটি দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী, রোহিঙ্গাবিষয়ক কয়েকজন আন্তর্জাতিক দূত, বিদেশে বাংলাদেশ মিশন এবং জাতিসংঘের বিভিন্ন সংস্থার প্রতিনিধিদের অংশ নেওয়ার কথা রয়েছে।

কক্সবাজারের শিবিরে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গা এবং বিশ্বের কয়েকটি দেশে অবস্থানরত রোহিঙ্গা প্রতিনিধিরাও এই সম্মেলনে অংশ নেবেন।

টিআর/আরএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।