ঢাকা, মঙ্গলবার, ১৩ শ্রাবণ ১৪৩২, ২৯ জুলাই ২০২৫, ০৩ সফর ১৪৪৭

জাতীয়

দেশে ন্যায় প্রতিষ্ঠা হওয়ায় তদবিরকারীদের সুযোগ নেই: বাণিজ্য উপদেষ্টা

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬:০২, জুলাই ২৬, ২০২৫
দেশে ন্যায় প্রতিষ্ঠা হওয়ায় তদবিরকারীদের সুযোগ নেই: বাণিজ্য উপদেষ্টা বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দিন

ঢাকা: সবার সামগ্রিক প্রচেষ্টায় দেশে ন্যায় প্রতিষ্ঠা হওয়ায় মন্ত্রণালয়গুলোতে তদবিরকারীদের ভিড় কমেছে ও তাদের কোনো সুযোগ নেই বলে জানিয়েছেন বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন এবং বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দিন।

শনিবার (২৬ জুলাই ) দুপুরে প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁও হোটেলের ওয়েসিস প্রাঙ্গণে জুলাই গণঅভ্যুত্থান উপলক্ষে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় আয়োজিত জুলাই পুনর্জাগরণ-২০২৫ অনুষ্ঠানমালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন।

 

অনুষ্ঠানের শুরুতে জুলাই অভ্যুত্থানে শহীদদের স্মরণে দাঁড়িয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।

বেসামরিক বিমান পরিবহণ ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সচিব মিজ নাসরিন জাহানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে সম্মসনিত বিশেষ অতিথি ছিলেন প্রধান উপদেষ্টা মহোদয়ের উপদেষ্টা পদমর্যাদায় আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিষয়ক বিশেষ দূত লুৎফে সিদ্দিকী।  

স্বাগত বক্তব্য রাখেন বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (বিমান ও সিএ) আব্দুন নাসের খান। ছাত্র জনতার অভ্যুত্থানে ৪ আগস্ট দৃষ্টি হারানো মো. সাব্বির আহমেদ জুলাই অভ্যুত্থানের স্মৃতিচারণ করে বক্তব্য রাখেন।

শেখ বশিরউদ্দীন বলেন, আমাদের জুলাইয়ে প্রেক্ষাপট কি ছিলো সামগ্রিক দুর্বৃত্ত্বায়নকে না বলা। দুর্বৃত্তায়নের ক্ষেত্রে আমি যদি আমার ভাষাকে সংযত রেখে বলি, তাহলে এক পিশাচিনির নেতৃত্বে দেশের এমন কোনো জায়গা ছিল না যেখানে দুর্বৃত্তায়ন হয়নি। সেটা ধর্ম ক্ষেত্রে, অর্থনীতি খাতে, সামাজিক খাতে দেশের প্রতিটি খাতে দু্র্বৃত্তায়ন হয়েছে। এর বিরুদ্ধে সবার না বলার অভিপ্রায় হচ্ছে জুলাইয়ের গণঅভ্যুত্থান।

তিনি বলেন, জাতিসংঘের হিসেবে প্রায় দেড় হাজার মানুষ নিহত হয়েছে। প্রায় ৪০ হাজার মানুষ আহত হয়েছে। এ আন্দোলনে যারা দৃষ্টি শক্তি হারিয়েছে তার ফলশ্রুতিতে আমরা দৃষ্টি ফিরে পেয়েছি। এরমধ্যমে আমরা একটা সংকল্প করতে পারি যার মাধ্যমে আমরা দেশে ন্যায়ের শাসন প্রতিষ্ঠা করতে পারি। জুলাই আন্দোলনে কেউ যেন ব্যক্তিগতভাবে লাভবানের চেষ্টা না করি। আমাদের উদ্দেশ্য হলো সামগ্রিকভাবে লাভবান হওয়া বা দেশকে লাভবান করা। আমরা যদি সেটা করতে না পারি তাহলে জুলাই আন্দোলন ব্যর্থ হবে।

উপদেষ্টা বলেন, প্রধান উপদেষ্টার নেতৃত্বে সামগ্রিকভাবে দেশের স্বার্থে উপদেষ্টাদের নিয়ে যে সংস্কার কমিশন গঠিত হয়েছে। সে সংস্কার কার্যক্রম বাস্তবায়নের মাধ্যমে ভবিষ্যতে প্রজন্মের জন্য যদি একটা সম্মান জনক রাষ্ট্র তৈরি করতে না পারি তাহলে আমরা ব্যর্থ।

তিনি বলেন, আমরা যদি সামগ্রিকভাবে কাজ করি তাহলে অপার সম্ভাবনা রয়েছে। এ সম্ভবনাকে কাজে লাগিয়ে আমরা দেশের অর্থনীতিকে এগিয়ে নিতে পারবো। ফ্যাসিস সরকারের সময়ে মার্চ, এপ্রিল ও মে মাসে দেশে যে দুর্ভিক্ষ আমরা দেখেছি, আমাদের দেশের যে চলতি হিসাব সেখানে উদ্বৃত্তের দেশে পরিণত হয়েছি। যেখানে চরম ঘাটতি ছিল সেখান থেকে আমরা উদ্বৃত্তে আসতে পেরেছি। সেটা সম্ভব হয়েছে সবার সামগ্রিক প্রচেষ্টায় ও ন্যায় প্রতিষ্ঠা হওয়ায়।

বাণিজ্য ও পর্যটন উপদেষ্টা বলেন, আমি আমাদের মন্ত্রণালয়গুলোতে তেমন একটা কিছু দেখি না যে তদবিরকারীদের ভিড়। আমার কাছে কেউ আসে না। এটাও আমাদের একটা সবার সাফল্য। এখানে তদবিরকারীদের কোনো লাভ বা সুযোগ নেই। কিন্তু ন্যায়ের উদ্দেশে সব সুবিধা পাবেন। আমরা এমন একটা রাষ্ট্র দেখতে চাই যেখানে ন্যায় থাকবে, যোগ্যরা যোগ্যতম স্থানে যাবে অযোগ্যরা পদায়িত হবে না, আমাদের নেতৃত্ব দেবে না। আমরা যোগ্যদের নেতৃত্বে বাস করবো।

প্রধান উপদেষ্টার আন্তর্জাতিক বিষয় সম্পর্কিত বিশেষ দূত লুৎফে সিদ্দিকী বলেন, জুলাই অভ্যুত্থানে অনেক আত্মত্যাগ নতুন বাংলাদেশ গড়ার সুযোগ তৈরি করে দিয়েছে। কর্মসংস্থান ও অর্থনীতি এ বিষয়ে জোর দেওয়া হচ্ছে। বাণিজ্য, বিনিয়োগ,ব্যবসায় গুরুত্ব দিয়ে পরিকল্পনা করা হচ্ছে।

বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সচিব বলেন, তরুণদের কখনো দমিয়ে রাখা যায় না। যখন তাদের বাধা দেওয়া হয় হয়ে ওঠে আরও অনির্বাণ। তরুণরা যে কত দুর্বার হতে পারে জুলাই আগস্টের অভ্যুত্থান আমাদের তা দেখিয়েছে। এসময়  তিনি সব রকম দুর্নীতি থেকে বেরিয়ে এসে দেশ গড়ায় আত্মনিয়োগ করতে তরুণ প্রজন্মের প্রতি আহ্বান জানান।

অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ সার্ভিসেস লিমিটেড এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ মাহবুবুর রহমান, প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁও এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক ইসরাত হোসেন খান, বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও ড. সাফিকুর রহমান,বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের সদস্য পরিচালন ও পরিকল্পনা এয়ার কমোডর আবু সাইদ মেহবুব খান, বাংলাদেশ পর্যটন কর্পোরেশনের চেয়ারম্যান সায়েমা শাহীন সুলতানা, ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্সের এর ফ্লাইট অপারেশনের মহাপরিচালক জুলফিকার আলী, অ্যাসোসিয়েশন অব ট্র্যাভেল এজেন্টস অব বাংলাদেশ-(আটাব) এর সভাপতি আব্দুস সালাম আরেফ এবং বাংলাদেশ ট্যুর অপারেটরস অ্যাসোসিয়েশন (টোয়াব) এর সভাপতি মোহাম্মদ রাফিউজ্জামান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

জিসিজি /জেএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।