ঢাকা, রবিবার, ২৮ আষাঢ় ১৪৩২, ১৩ জুলাই ২০২৫, ১৭ মহররম ১৪৪৭

জাতীয়

মালয়েশিয়ায় আন্তর্জাতিক মেশিনারি মেলায় অংশ নিয়েছে বাংলাদেশ

ডিপ্লোম্যাটিক করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬:৪০, জুলাই ১২, ২০২৫
মালয়েশিয়ায় আন্তর্জাতিক মেশিনারি মেলায় অংশ নিয়েছে বাংলাদেশ মালয়েশিয়া আন্তর্জাতিক মেশিনারি মেলায় অতিথিরা।

কুয়ালালামপুরস্থ বাংলাদেশ হাইকমিশনের উদ্যোগে দ্বিতীয়বারের মতো ৩৬তম মালয়েশিয়া আন্তর্জাতিক মেশিনারি মেলায় অংশ নিয়েছে বাংলাদেশ।

১০ থেকে ১২ জুলাই পর্যন্ত মালয়েশিয়া ইন্টারন্যাশনাল ট্রেড অ্যান্ড এক্সিবিশন সেন্টারে অনুষ্ঠিত এ মেলায় বাংলাদেশসহ ১০টি দেশের ৪৫০টিরও বেশি প্রতিষ্ঠান ৭৫৩টি বুথে অংশ নেয়।

অংশগ্রহণকারী দেশগুলোর মধ্যে রয়েছে—চীন, কোরিয়া, মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর, ইন্দোনেশিয়া, থাইল্যান্ড, ভারত, জাপান ও ইরান। মালয়েশিয়া প্রোমাস ইন্টারন্যাশনাল বিজনেস সোসাইটি ও ইএস ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট এ মেলার আয়োজন করে।

১১ জুলাই আনুষ্ঠানিকভাবে মেলার উদ্বোধন করেন মালয়েশিয়ার প্লান্টেশন ও কমোডিটিসবিষয়ক মন্ত্রী ওয়াইবি দাতুক সেরি জোহারি বিন আবদুল গনি।

শনিবার (১২ জুলাই) মেলায় আয়োজিত বিজনেস ম্যাচিং অনুষ্ঠানে গেস্ট অব অনার হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশের হাইকমিশনার মো. শামীম আহসান। সেখানে তিনি আয়োজকদের আমন্ত্রণে বাংলাদেশে বাণিজ্য ও বিনিয়োগের সম্ভাবনা নিয়ে ব্যবসায়ী প্রতিনিধি, চেম্বার ও সংগঠনের সদস্যদের উদ্দেশে বক্তব্য দেন।

অনুষ্ঠানে গুয়াংডং ফুড অ্যান্ড প্যাকেজিং মেশিনারি ট্রেডস অ্যাসোসিয়েশন, পেনাং ইমপোর্টার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন, তেওচিউ মার্চেন্টস অ্যাসোসিয়েশন পেনাং, মালয়েশিয়া পেনাং এলিট ওমেনপ্রেনার’স অ্যাসোসিয়েশন, দেওয়ান পারনিয়াগান উসাহাওয়ান মালয়েশিয়ার সদস্যসহ মেলায় অংশগ্রহণকারী প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন। মেলায় সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণের জন্য বাংলাদেশকে বিশেষ সম্মাননা দেওয়া হয়, যা গ্রহণ করেন হাইকমিশনার মো. শামীম আহসান।

পরে হাইকমিশনার অন্যান্য অতিথিদের সঙ্গে মেলার বিভিন্ন স্টল, বিশেষ করে বাংলাদেশের দুটি স্টল পরিদর্শন করেন। এ সময় তিনি হাইকমিশনের স্টলে আসা ব্যবসায়ী ও দর্শনার্থীদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন এবং তাদের বাংলাদেশের বিভিন্ন রপ্তানি পণ্যের সম্ভাবনা সম্পর্কে অবহিত করেন।

পরিদর্শনের সময় উপস্থিত ছিলেন আয়োজক প্রতিষ্ঠান প্রোমাস ইন্টারন্যাশনাল বিজনেস সোসাইটির প্রেসিডেন্ট দাতো চং চং তিক, ইএস ইভেন্ট ম্যানেজমেন্টের ম্যানেজিং ডিরেক্টর দাতো সেরি আবু হাসান বিন মো. নূর, প্রাণ-আরএফএল গ্রুপ মালয়েশিয়ার ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. সেলিম ভূঁইয়া, বিভাগীয় প্রধান (বিপণন) টাইলর তাসিন, বাংলাদেশ হাইকমিশনের কর্মকর্তা ও প্রবাসী সাংবাদিকরা।

সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপে হাইকমিশনার জানান, নোবেল বিজয়ী অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী রপ্তানি পণ্যের বহুমুখীকরণের অংশ হিসেবে তৈরি পোশাকের পাশাপাশি অন্যান্য পণ্য রপ্তানির সুযোগ তৈরিতে বাংলাদেশ হাইকমিশন নিয়মিত আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলায় অংশ নিচ্ছে। মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশি পণ্যের ক্রমবর্ধমান চাহিদার প্রেক্ষাপটে এমন মেলায় অংশগ্রহণ নতুন বাজার তৈরিতে সহায়ক ভূমিকা রাখবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

তিনি প্রাণ-আরএফএল প্রদর্শিত বহুমুখী প্লাস্টিক পণ্যের পাশাপাশি দুরন্ত বাইসাইকেল, ট্রাভেলো লাগেজ, গুডলাক স্টেশনারি ও উইনার ক্লোথিং-এর রপ্তানি সম্ভাবনার কথা উল্লেখ করেন।

বাংলাদেশ হাইকমিশনের দুটি স্টলে প্রাণ-আরএফএল-এর প্লাস্টিক পণ্য, দুরন্ত বাইসাইকেল, ট্রাভেলো লাগেজ, গুডলাক স্টেশনারি, উইনার ক্লোথিং এবং ভিশন ইলেকট্রনিকস সামগ্রীর পাশাপাশি হাইকমিশনের পক্ষ থেকে চামড়াজাত পণ্য, পাটজাত পণ্য, হস্তশিল্প এবং সেগুলোর ওপর প্রকাশনা প্রদর্শিত হচ্ছে।

এ ছাড়া লাইট ইঞ্জিনিয়ারিং, প্লাস্টিক ও প্যাকেজিং শিল্প, বাংলাদেশে ব্যবসা ও বিনিয়োগসংক্রান্ত বিভিন্ন প্রকাশনা এবং পর্যটন ও বিনিয়োগ সম্ভাবনা নিয়ে প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শন করা হচ্ছে। মেলা উদ্বোধনের দিন থেকেই বাংলাদেশি স্টলগুলোতে বিদেশি ব্যবসায়ী ও দর্শনার্থীদের ব্যাপক ভিড় এবং প্রদর্শিত পণ্যের প্রতি ইতিবাচক আগ্রহ লক্ষ্য করা যাচ্ছে।

উল্লেখ্য, বাংলাদেশ ও মালয়েশিয়ার দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্যের পরিমাণ প্রায় তিন বিলিয়ন মার্কিন ডলার। পাশাপাশি মালয়েশিয়া বর্তমানে বাংলাদেশে নবম বৃহত্তম বিনিয়োগকারী দেশ।

টিআর/আরবি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।