ঢাকা, রবিবার, ১৫ আষাঢ় ১৪৩২, ২৯ জুন ২০২৫, ০৩ মহররম ১৪৪৭

জাতীয়

কৃষি ফার্ম শ্রমিকদের প্রভিডেন্ট ফান্ড সুবিধাসহ ১৩ দাবি

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬:৫৭, জুন ২৯, ২০২৫
কৃষি ফার্ম শ্রমিকদের প্রভিডেন্ট ফান্ড সুবিধাসহ ১৩ দাবি

ঢাকা: কৃষি ফার্ম শ্রমিকদের প্রভিডেন্ট ফান্ড সুবিধা চালু করাসহ ১৩ দফা দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ কৃষি ফার্ম শ্রমিক ফেডারেশন।

রোববার (২৯ জুন) জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে আয়োজিত মানববন্ধন থেকে ফেডারেশনের পক্ষ থেকে এসব দাবি জানানো হয়।

মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, কৃষি মন্ত্রণালয়ের অধিনস্থ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান/সংস্থার গবেষণা খামার/বীজ উৎপাদন খামার, বীজ প্রক্রিয়াজাত কেন্দ্র, নার্সারি (ফলদ ও বনজ), হর্টিকালচার সেন্টার/উদ্যান উন্নয়ন কেন্দ্র, ফল, সবজি, মাসরুম, অন্যান্য ফসল তথা কৃষি পণ্য উৎপাদন খামারে নিয়োজিত কৃষি ফার্ম শ্রমিকরা দীর্ঘ দিন ধরে অক্লান্ত পরিশ্রম করছেন। কৃষি উন্নয়নের ক্ষেত্রে তারা বিভিন্ন গবেষণার কাজে সহায়তার পাশাপাশি মানসম্মত বীজ ও কৃষি পণ্য উৎপাদন করে খাদ্যে সয়ংসম্পূর্ণতা অর্জনে ও পুষ্টিকর খাদ্যের চাহিদা মেটাতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখে আসছে।  

কিন্তু দেশের কৃষি ও খাদ্য উৎপাদন ব্যবস্থায় গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখা কৃষি ফার্ম শ্রমিকদের অবদানের যথাযথ স্বীকৃতি না দিয়ে তাদের দারিদ্র্যতার মধ্যে নিম্নমানের জীবনযাপনে বাধ্য করা হচ্ছে। কৃষি ফার্ম শ্রমিকরা শ্রম আইনের আওতাভুক্ত নয় বলে তারা শ্রম আইনের উল্লেখিত অনেক সুবিধা থেকে বঞ্চিত। বর্তমানে ‘কৃষি ফার্ম শ্রমিক নিয়োগ ও নিয়ন্ত্রণ নীতিমালা ২০১৭’ অনুযায়ী কৃষি ফার্ম শ্রমিকরা তাদের সুযোগ-সুবিধা পেয়ে থাকেন। কিন্তু দুঃখের সঙ্গে উল্লেখ করতে চাই যে, কৃষি মন্ত্রণালয়ের অধিনস্থ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান/গবেষণা প্রতিষ্ঠানগুলো এ নীতিমালা অনুসরণ করলেও অধিকাংশ ক্ষেত্রে বিএডিসিসহ কিছু কিছু প্রতিষ্ঠান এ নীতিমালা অনুসরণ করছে না।

এ সময় তারা তাদের দাবিগুলো উত্থাপন করেন। তাদের উল্লেখযোগ্য দাবিগুলো হলো:

১. বিএডিসি শ্রমিকসহ সব গবেষণা খামারে নিয়োজিত অনিয়মিত শ্রমিকদের কৃষি ফার্ম শ্রমিক নিয়োগ ও নিয়ন্ত্রণ নীতিমালা ২০১৭ অনুযায়ী নিয়মিতকরণের জন্য কৃষি মন্ত্রণালয়ের আদেশ অনতিবিলম্বে বাস্তবায়ন করা।

২. উচ্চ মুদ্রাস্ফীতি ও খাদ্য পণ্যসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের উচ্চ মূল্যের বিষয় বিবেচনায় নিয়ে নিয়মিত শ্রমিকদের দৈনিক মজুরি ১ হাজার টাকা ও অনিয়মিত শ্রমিকদের দৈনিক মজুরি ৯৫০ টাকা নির্ধারণ করা।

৩. নিয়োগ অবসানের প্রতি পূর্ণ বছর কার্যকারের জন্য ৩০ দিন হারে মজুরি প্রাপ্যতার পরিবর্তে ৬০ দিনে হারে মজুরি প্রদান করা।

৪. বিএডিসিসহ কৃষি মন্ত্রণালয়ের অধিনস্থ বিভিন্ন খামার, গবেষণা প্রতিষ্ঠান কর্তৃক প্রণীত শ্রমিক ব্যবস্থাপনা ম্যানুয়াল এর ‘কৃষি ফার্ম শ্রমিক নিয়োগ ও নিয়ন্ত্রণ নীতিমালা ২০১৭’ এবং বাংলাদেশ শ্রম আইন ২০০৬ (অদ্যাবধি সংশোধিত) এর সঙ্গে সম্পূর্ণ সাংঘর্ষিক এবং শ্রমিক স্বার্থ বিরোধী ধারাগুলো বাতিল করা এবং কৃষি ফার্ম শ্রমিক নিয়োগ ও নিয়ন্ত্রণ নীতিমালা সংশোধন করে আইনে রূপান্তর করা।

৫. সব খামারে নিয়োজিত নারী কৃষি শ্রমিকদের স্ববেতনে ছয় মাস মাতৃত্বকালীন ছুটি প্রদান করা।

৬. প্রতি দুই বছর অন্তর অন্তর কৃষি ফার্ম শ্রমিকদের মজুরি ও অন্যান্য সুবিধাদি আন্তঃমন্ত্রণালয় স্টান্ডিং কমিটি ও বাংলাদেশ কৃষি ফার্ম শ্রমিক ফেডারেশন আলোচনার মাধ্যমে পুননির্ধারণ করা।

৭. হেক্টর প্রতি শ্রমিকের হার ৭ (সাত) জন নির্ধারণ করা।

৮. প্রত্যেক শ্রমিক ৩০ দিনের মজুরির অর্ধেক পরিমাণ নববর্ষ ভাতা প্রদান করা।

৯. পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলে কর্মরত শ্রমিকদের দৈনিক মজুরির ৫০ শতাংশ পাহাড়ি ভাতা প্রদান করা।

১০. সামাজিক সুরক্ষা কর্মসূচির অন্তর্ভুক্ত করে কৃষি ফার্ম শ্রমিকদের জন্য রেশনিং ব্যবস্থা চালু করা।

১১. কৃষি ফার্ম শ্রমিকদের জন্য স্বাস্থ্য বীমাসহ চিকিৎসা ভাতা চালু করা।

১২. শ্রমিক নিয়োগের ক্ষেত্রে কর্মরত অবস্থায় মৃত্যুবরণ, অবসর গ্রহণকৃত শ্রমিকের পোষ্যদের অগ্রাধিকার প্রদান করা।

এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন ফেডারেশনের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মো. আজিজুল হক, সাধারণ সম্পাদক সম্পাদক গোলাম ছরোয়ারসহ বিভিন্ন পর্যায়ের শ্রমিকরা।  

আরআইএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।