ঢাকা, শুক্রবার, ৩ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ১৭ মে ২০২৪, ০৮ জিলকদ ১৪৪৫

জাতীয়

প্রতিবেদন প্রকাশের জেরে আরও দুই সাংবাদিকের নামে সাইবার মামলা 

উপজেলা করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৮৫৩ ঘণ্টা, মে ২, ২০২৪
প্রতিবেদন প্রকাশের জেরে আরও দুই সাংবাদিকের নামে সাইবার মামলা 

পাথরঘাটা(বরগুনা): বরগুনার পাথরঘাটা উপজেলায় স্থানীয় আরও দুই সাংবাদিকের নামে সাইবার নিরাপত্তা আইনে মামলা হয়েছে। গরুতে ফসল নষ্ট করার বিরোধ নিয়ে একটি অনলাইন নিউজ পোর্টালে প্রতিবেদন প্রকাশের জেরে দুই সাংবাদিকের বিরুদ্ধে এ মামলা করা হয়।

 

এর আগে ভিন্ন ভিন্ন আরও পাঁচ সাংবাদিকের নামে মামলা করা হয়। এ নিয়ে মোট সাত সাংবাদিকের নামে মামলা করা হলো।

পাথরঘাটা সদর ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য মো. শহিদুর রহমান সোমবার (২৯ এপ্রিল) বরিশাল সাইবার ট্রাইব্যুনালে মামলাটি করেন। মামলার আইনজীবী ও বরিশাল জেলা আইনজীবী সমিতির সদস্য সায়েম-উল-আলম সাইবার আদালতে মামলাটি গ্রহণের বিষয়টি বুধবার রাতে নিশ্চিত করেন।

মামলার আসামিরা হলেন- দৈনিক আলোকিত প্রতিদিনের পাথরঘাটা প্রতিনিধি ও অনলাইন নিউজ পোর্টাল দেশ দর্পণের সাংবাদিক মো. জিয়াউল ইসলাম, আরটিভির পাথরঘাটা প্রতিনিধি তাওহীদুল ইসলাম এবং স্থানীয় হাড়িটানা গ্রামের বাসিন্দা হানিফা, পাথরঘাটা পৌর এলাকার ৪ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা সুজন খান ও তাঁর স্ত্রী ফাহিমা বেগম।

মামলার আর্জি ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গত ৭ ফেব্রুয়ারি অনলাইন নিউজ পোর্টাল দেশ দর্পণে ‘ক্ষেতেই চাচা ভাতিজার ধমকা–ধমকি’ শিরোনামে একটি ভিডিও প্রতিবেদন প্রকাশ করেন সাংবাদিক জিয়াউল ইসলাম। গরুতে ফসল নষ্টের বিষয়ে দুই পক্ষের বিরোধ নিয়ে প্রতিবেদনটি করা হয়। ওই প্রতিবেদনের মাধ্যমে বাদীর সম্মানহানি ও বাদীর কাছে চাঁদা দাবির অভিযোগ করা হয়েছে। আরটিভির সাংবাদিক তাওহীদুল ইসলাম প্রতিবেদন প্রকাশ কিংবা প্রতিবেদন তৈরির সময় ঘটনাস্থলে না থাকলেও তাকেও আসামি করা হয়। তাওহীদুলের পরিবারের সঙ্গে শহিদুরের দীর্ঘদিনের বিরোধ আছে।

সাংবাদিক তাওহীদুল ইসলাম বলেন, সাইবার আইনের মামলার বাদী শহিদুর রহমান তার ওয়ার্ডের বর্তমান সদস্য। ওই ওয়ার্ডের সাবেক সদস্য জাহাঙ্গীর হোসেন সম্পর্কে তার চাচা। গত নির্বাচনে তিনি চাচার পক্ষে নির্বাচন করেন। এজন্য তিনি (শহিদুর) প্রতিপক্ষ হিসেবে নানা ষড়যন্ত্র করছেন। সর্বশেষ ঘটনাস্থলে না থাকলেও তাকে আসামি করেছেন।

মামলার বাদী ও ইউপি সদস্য শহিদুর রহমানের মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি। তবে মামলার আবেদনে তিনি উল্লেখ করেন, গরুতে ফসল নষ্ট করা নিয়ে সাংবাদিক জিয়াউল অন্য আসামিদের ডেকে এনে ভিডিও বানিয়ে ফেসবুকে ছেড়ে দেন। ভিডিও ছাড়ার আগে জিয়াউল তার কাছে মোটা অঙ্কের টাকা দাবি করেন। টাকা দিতে রাজি না হওয়ায় ফেসবুকে ভিডিও ছেড়ে দিয়ে সম্মানহানি করেন।

এর আগে ৪ এপ্রিল পাথরঘাটার তিন সাংবাদিকসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে সাইবার নিরাপত্তা আইনে আরেকটি মামলা হয়েছে। স্থানীয় দুটি অনলাইন নিউজ পোর্টাল ও একটি ফেসবুক আইডি থেকে একটি সংবাদ সম্মেলন লাইভ করায় তাদের নামে মামলা হয়। নির্যাতনে অভিযুক্ত সৌদিপ্রবাসী আল মামুনের চাচাতো ভাই লিটন হাওলাদার বাদী হয়ে বরিশাল সাইবার ট্রাইব্যুনালে ওই মামলা করেন। তার আগে দৈনিক মানবজমিনের পাথরঘাটা প্রতিনিধি জাকির হোসেন খান‌ ও দৈনিক সংবাদের পাথরঘাটা প্রতিনিধি জাফর ইকবালের নামেও পৃথক মামলা করা হয়।

সাত সাংবাদিকের নামে সাইবার নিরাপত্তা আইনে মামলার নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে বুধবার (১ মে) পাথরঘাটা শেখ রাসেল স্কয়ার চত্বরে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করা হয়। তারা মামলা প্রত্যাহারের পাশাপাশি সাইবার নিরাপত্তা আইন বাতিলের দাবি জানিয়েছেন।

বাংলাদেশ সময়: ০৮৪৮ ঘণ্টা, মে ০২, ২০২৪

আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।