ঢাকা, শনিবার, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

দুই মাসে মরল ৫০ গরু, আতঙ্কে দুই গ্রামের মানুষ 

শরীফুল ইসলাম, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২৪১ ঘণ্টা, মার্চ ২৭, ২০২৪
দুই মাসে মরল ৫০ গরু, আতঙ্কে দুই গ্রামের মানুষ 

ঠাকুরগাঁও: ঠাকুরগাঁওয়ের বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার বড়পলাশবাড়ী ইউনিয়নের মশালডাঙ্গী গ্রাম ও পার্শ্ববর্তী ৪নং কলোনীতে  অজ্ঞাত রোগে প্রতিনিয়ত গরু মারা যাচ্ছে।  

গত দুই মাসে ২০ জন কৃষকের অর্ধশত গরু মারা গেছে।

এর মধ্যে গত এক সপ্তাহে মারা গেছে ১৯টি গরু।

এমন ঘটনায় দুশ্চিন্তা ও আতঙ্কে দিন পার করছেন দুই গ্রামের মানুষ।  

বুধবার (২৭ মার্চ) দুই গ্রামের কয়েকজন কৃষকের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, প্রতিদিন অজ্ঞাত এই রোগে আক্রান্ত হচ্ছে গরু। আক্রান্ত হওয়ার ৬-১০ ঘণ্টার মধ্যে মারা যাচ্ছে। রোগ নির্ণয় না করতে পারার কারণে কোন ধরনের চিকিৎসা কাজে আসছে না।

দুই দিনে দুটি গরু মারা যাওয়া কৃষক আব্দুল জলিল বলেন, অনেক কষ্ট করে গরু লালন পালন করি। গরু বিক্রি করে মেয়ের বিয়ে দেব ভেবেছিলাম কিন্তু সব স্বপ্ন ধূলিসাৎ হয়ে গেল।

তিনি জানান, প্রথমে গরুর শরীর গরম হয়ে যায়, এরপরে পেট ফুলে গিয়ে খাওয়া দাওয়া বন্ধ হয়ে যায়। এমন করে ৬-১০ ঘণ্টা পর মারা যায় গরু।  

আব্দুল জলিল বলেন, দুই গরুর মৃত্যুতে এক লাখ টাকার বেশি ক্ষতি হয়ে গেল আমার। আরো দুটা গরু আছে সেটা নিয়েও দুশ্চিন্তায় রাতে ঘুম হয় না।

ইউসুফ আলী নামে আরেক কৃষক বলেন, সীমান্তঘেষা এই দুটি গ্রামের বেশিরভাগ মানুষ গরু পালন ও কৃষি কাজের উপর নির্ভরশীল। গরু বেচে কৃষি কাজ, ছেলে মেয়ের পড়াশোনা, বিয়ে ইত্যাদি সকল খরচ চালাই। সীমান্তে চারণ ভূমি থাকায় গরু পালনে বেশ সুবিধা রয়েছে আমাদের। দুই গ্রামে অন্তত দেড় হাজার গরু লালনপালন করছেন স্থানীয় কৃষকরা। গত দুই মাসে অর্ধশত গরু মারা গেছে দুটি গ্রামে। অনেকে নিঃস্ব হয়ে গেছেন।

বড়পলাশবাড়ী ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান আমিনুল ইসলাম বলেন, গ্রাম দুটোর একদম কাছাকাছি ভারতের সীমান্ত। সব পরিবারে গরু লালন পালন করে থাকেন। কয়েক দিন থেকে ভাইরাসের প্রখরতা বেশি লক্ষ্য করা যাচ্ছে। প্রতিনিয়ত কারো না কারো গরু মারা যাচ্ছে।

তিনি আরও বলেন, এই ভাইরাস ভারত থেকে এসেছে কিনা এটা শনাক্ত করা জরুরি। সেই সঙ্গে বাকি গবাদি পশুগুলোর চিকিৎসা নিশ্চিত করার জন্য উপজেলা প্রশাসন ও স্থানীয় প্রাণীসম্পদকে আহ্বান জানাচ্ছি।

বালিয়াডাঙ্গী উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা নাসিরুল ইসলাম বলেন, আমরা সরেজমিনে সেই দুটি গ্রামে গিয়েছিলাম। গত এক সপ্তাহে বেশ কয়েকটি গরু মারা গেছে। প্রাথমিকভাবে আমাদের বাদলা ভাইরাস মনে হয়েছে। এছাড়াও সীমান্তে লালন পালন হওয়ায় এটি ভারত থেকে আসা কোনো ভাইরাস হতে পারে। আমরা কিছু গরুকে বাদলা ভাইরাসের ভ্যাকসিন দিয়েছি। আর নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। দ্রুত সময়ের মধ্যে শনাক্ত করে আমরা চিকিৎসা ও পরামর্শ দেব।

বাংলাদেশ সময়: ১২১১ ঘণ্টা, মার্চ ২৭, ২০২৪
এসএএইচ
 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।