ঢাকা, শনিবার, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

মোরগের ডাকে বিরক্ত, প্রতিবেশীকে পুলিশে দেওয়ার হুমকি সাবেক আমলার

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০১৭ ঘণ্টা, মার্চ ২৬, ২০২৪
মোরগের ডাকে বিরক্ত, প্রতিবেশীকে পুলিশে দেওয়ার হুমকি সাবেক আমলার ছবি: মাহবুব কবির মিলন

ঢাকা: প্রতিবেশীর ছাদ খামারের মোরগের ডাকে ঘুম হয় না বলে অভিযোগ তুলেছেন সাবেক অতিরিক্ত সচিব মাহবুব কবীর মিলন। এরপর সোসাইটির সিকিউরিটি গার্ড পাঠিয়ে তিনি মোরগ পালতে নিষেধ করেছেন।

আর সেটা না মানলে পুলিশ পাঠাবেন বলে হুমকিও দিয়েছেন।

সম্প্রতি ঘটনাটি ঘটেছে রাজধানী আদাবরের বায়তুল আমান হাউজিং সোসাইটিতে। ঘটনাটি স্বীকার করে নিজের মতো ব্যাখ্যাও দিয়েছেন সাবেক এই অতিরিক্ত সচিব।  

অভিযোগ জানিয়ে এক প্রতিবেশী বলেন, গত সপ্তাহের সোমবার (১৮ মার্চ) একজন লোক এসে বলল- সচিব আপনার নম্বর চেয়েছে। আমি নম্বর না দিয়ে বরং যিনি আসছেন তার থেকে সচিবের (মাহবুব কবীর মিলন) নম্বর নিয়ে আমি ফোন দেই। ফোন দিলে তিনি বলেন- ছাদে কি মুরগির ফার্ম করছেন? আমি বলি ফার্ম না৷ পাখির খাঁচা বানিয়েছিলাম, সেখানে পাখি নেই৷ বাচ্চারা গ্রামে গিয়েছিল পাঁচটা মুরগির বাচ্চা এনেছে, তার মধ্যে একটা মোরগ। তিনি উত্তর দিলেন, মোরগ ডাকাডাকি করলে তো এলাকাটা গ্রাম আর ক্ষেত হয়ে গেল।

ওই প্রতিবেশী বলেন, তখন আমি তাকে বলি- এই এলাকায় অনেকেই মোরগ মুরগি পালে, আপনার বাসার সামনেও আছে। তিনি বলেন, আমি সবাইকে বলব এসব সরাতে হবে, তা নাহলে পুলিশের আশ্রয় নেব৷

এই ঘটনার পর এই প্রতিবেশী উপায়ান্তর না পেয়ে মোরগটি জবাই করে ফেলেন। কিন্তু মুরগিগুলো রাখেন। তার দুদিন পর আবারও ওই বাসায় লোক পাঠান মো. মাহবুব কবির মিলন।  

আরেক প্রতিবেশী বলেন, তিনি বাসায় সোসাইটির লোক পাঠান৷ তারা বলে গেছেন, ছাদে কোনো মোরগ-মুরগি পালা যাবে না৷ এগুলো সরাতে হবে৷ এলাকার অন্যান্য প্রতিবেশীদের কিছু অভিযোগ আছে মাহবুব কবীর মিলনের বিরুদ্ধে। এলাকার কেউ কোনো সামাজিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করলে তিনি পুলিশ পাঠিয়ে তা বন্ধ করে দেন বলে অভিযোগ কয়েকজন প্রতিবেশীর।

অভিযোগের বিষয়ে মাহবুব কবীর মিলন বলেন, মোরগ নিয়ে অভিযোগটা আমার ছিল। শেষ রাতে নামাজের পর ঘুমানো যায় না। ভয়াবহ চিৎকার মোরগের। চারটা বাসায় মোরগ পালে। এই ঘনবসতি এলাকায় এইসব মোরগ যদি একসঙ্গে ডাকতে থাকে তাহলে কি অবস্থা হতে পারে চিন্তা করেন। যারা পালেন তারা ঢাকাকে গ্রাম মনে করেন কি না!  অভিযোগ জানানোর পর মোরগ পালা বন্ধ করেছে। এখনও একটা বাড়িতে আছে মনে হয়।

পুলিশ পাঠানোর বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আরে না, বিষয়টা তেমন কিছু না। তারা যদি কথা না শোনে তাহলে তো আমার পুলিশের আশ্রয় নিতে হবে। সবাই মিলেই তো আমরা বসবাস করি। একে অপরের সুযোগ সুবিধা দেখবে না। আমার মোরগ নিয়ে আপত্তি ছিল, মুরগি তো আর এইভাবে ডাকে না।  

মাহবুব কবীর মিলন অবসরে যাওয়ার আগে সর্বশেষ রেলপথ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিবের দায়িত্ব পালন করেন। রেলওয়ের অনিয়ম-দুর্নীতি ঠেকাতে নানা উদ্যোগ নিয়েছিলেন তিনি।  

ফেসবুকেও তিনি পরিচিত। নানা বিষয়ে লেখালেখি করে। কিন্তু এ প্রতিবেদক রেলওয়ে দুর্ঘটনা ও প্রতিকার সম্পর্কে তার ফেসবুক স্ট্যাটাসের বিষয়ে জানতে চাইলে তথ্য দেওয়ার বদলে রূঢ় আচরণ করেন।

এরআগে, মাহবুব কবীর মিলন বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের সদস্য এবং কিছু সময়ের জন্য সংস্থাটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানও ছিলেন। তাকে ২০২০ সালের ৬ আগস্ট তাকে বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওএসডি) করা হয়।

বাংলাদেশ সময়: ২০১৩ ঘণ্টা, মার্চ ২৬, ২০২৪
এনবি/এসআইএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।