ঢাকা, শুক্রবার, ২০ বৈশাখ ১৪৩১, ০৩ মে ২০২৪, ২৩ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

শিল্পীর রংতুলির আঁচড়ে মূর্ত হয়ে উঠেছে দেবীর রূপ

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯২৬ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৯, ২০২৩
শিল্পীর রংতুলির আঁচড়ে মূর্ত হয়ে উঠেছে দেবীর রূপ দেবীর গায়ে রংতুলির শেষ আঁচড়।

রাজশাহী: সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় আয়োজন শারদীয় দুর্গোৎসব শুরু হচ্ছে শুক্রবার (২০ অক্টোবর)। হাতে মাত্র একদিন।

এরপরই ভক্তকুলের জন্য দেবীদুর্গা আসছেন মর্ত্যলোকে।  দুর্গতিনাশিনী দশভুজা দেবীর বোধন ও মহাষষ্ঠীর মধ্য দিয়ে শুরু হতে যাচ্ছে চার দিনব্যাপী শারদীয় দুর্গোৎসব। পালবাড়িতে তাই আজ বৃহস্পতিবার (১৯ অক্টোবর) ব্যস্ততার শেষ ছিল না। দুর্গা প্রতিমার গায়ে পড়েছে রংতুলির শেষ আঁচড়; অলংকরণ ও সাজসজ্জার শেষ কাজ।

মহাষষ্ঠী পূজাকে সামনে রেখে রাজশাহী মহানগর ও জেলার মন্দির-মণ্ডপগুলোকে বর্ণাঢ্য সাজে সাজানো হয়েছে এরই মধ্যে। আজ ঢাকঢোল আর কাঁসার বাদ্যে দেবীর বোধন পূজার মধ্য দিয়ে দুর্গাপূজার মূল আনুষ্ঠানিকতা শুরু হবে।

শারদীয় দুর্গোৎসবের প্রাক্কালে দক্ষিণায়নের নিদ্রিত দেবীদুর্গার নিদ্রা ভাঙার জন্য বন্দনা করা হবে। মহাষষ্ঠী তিথিতে মণ্ডপে-মন্দিরে সন্ধ্যায় বিল্ব বৃক্ষ বা বেল গাছের পূজার মাধ্যমে দেবীদুর্গাকে আবাহন করা হবে। ২০ অক্টোবর মহাষষ্ঠী, ২১ অক্টোবর মহাসপ্তমী, ২২ অক্টোবর মহাঅষ্টমী, ২৩ অক্টোবর মহানবমী এবং ২৪ অক্টোবর মহাদশমী পূজার মধ্য দিয়ে শেষ হবে শারদীয় দুর্গোৎসব।



আশ্বিনের বিদায়ে শিউলি ফুলের মৌ মৌ গন্ধে যখন চারিদিক মাতোয়ারা। কাশফুলে শুভ্রতা ছড়িয়ে তখনই দুয়ারে কড়া নাড়ছে শারদীয় দুর্গাপূজা। হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বৃহৎ ধর্মীয় উৎসবকে সামনে রেখে তাই এখন চলছে একেবারেই শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি। এরই মধ্যে রাজশাহী মহানগর ও জেলার মণ্ডপগুলোতে বর্ণিল সাজসজ্জার কাজ শেষে হয়েছে। ছোট ছোট ট্রাকে করে অনেক মণ্ডপের উদ্দেশে পাঠানো শুরু হয়েছে দুর্গাপ্রতিমা।

রাজশাহী মহানগরের আলুপট্টি এলাকার প্রতিমা শিল্পী কার্তিক চন্দ্র পাল জানান, সময় কম, কাজ বেশি। এবারের মৌসুমে বৃষ্টি-বাদল লেগেই ছিল। এজন্য প্রতিমা তৈরির পর শুকোতে একটু সময় বেশি লেগেছে। না হলে রঙের কাজ আরও আগেই শেষ হয়ে যেতো। তার পরও কাজ শেষ। আজ কেবল শেষ মুহূর্তের রঙের কাজ চলছে। রংতুলির শেষ আঁচড়ে পূর্ণতা আনা হচ্ছে প্রতিমায়।

তিনি আরও জানান, তার তার এখানে ২০ হাজার থেকে শুরু করে ৮০ হাজার টাকা পর্যন্ত প্রতিমা আছে।

আজকালের মধ্যেই এসব প্রতিমা সরবরাহ করতে পারবেন বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।



রাজশাহী জেলা প্রশাসক শামীম আহমেদ জানিয়েছেন, এবার জেলায় ৩৮৯টি ও মহানগরে ৭৯টি মণ্ডপে শারদীয় দুর্গোৎসব অনুষ্ঠিত হবে। দুর্গোৎসব শান্তিপূর্ণভাবে উদযাপন করার লক্ষ্যে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের সব মণ্ডপের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তৎপর রয়েছে। আশা করা যাচ্ছে, আনন্দ উৎসবেই দুর্গাপূজা উদযাপন করতে পারবেন সনাতন ধর্মাবলম্বীরা।

এদিকে ইতোমধ্যে রাজশাহীর সবগুলো পূজা মণ্ডপের নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। শারদীয় দুর্গাপূজা উপলক্ষে মহানগরে বাড়ানো হয়েছে নিরাপত্তা ব্যবস্থা।  
পুলিশের পাশাপাশি আনসার সদস্যদের নিরাপত্তায় নিয়োজিত রাখা হয়েছে। শারদীয় দুর্গাপূজা উপলক্ষে মহানগর পুলিশের পক্ষে বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে।

রাজশাহী মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (মিডিয়া) জামিরুল ইসলাম জানান, শারদীয় দুর্গাপূজা চলাকালীন মাদক, হাউজি এবং জুয়ার আসরের আয়োজন করা যাবে না মর্মে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, জননিরাপত্তা বিভাগ, রাজনৈতিক অধিশাখা-৬, ঢাকায় সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে।



এছাড়া আযান ও নামাজের সময়ে শব্দযন্ত্রের ব্যবহার সীমিত রাখা বা উচ্চ শব্দযন্ত্র ব্যবহার না করার নির্দেশনা রয়েছে। শারদীয় দুর্গোৎসব উপলক্ষে সরকারি নির্দেশনাগুলো প্রতিপালনসহ শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষার নিমিত্ত কিছু নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশ (আরএমপি)।

শারদীয় দুর্গোৎসব উপলক্ষে শুক্রবার (২০ অক্টোবর) থেকে ২৪ অক্টোবর পর্যন্ত রাজশাহী মহানগর এলাকায় আতশবাজি, পটকা ফুটানো ও ক্রয়-বিক্রয় এবং পূজামণ্ডপ ও তার আশপাশে এবং প্রতিমা বিসর্জনের দিনে নেশাজাতীয় দ্রব্য বিক্রি ও ব্যবহার নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।  

আইন অমান্যকারীদের বিরুদ্ধে যথাযথ আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও উল্লেখ করেন এই পুলিশ কর্মকর্তা।

বাংলাদেশ সময়: ১৯২৩ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৯, ২০২৩
এসএস/এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।