ঢাকা, রবিবার, ২৯ বৈশাখ ১৪৩১, ১২ মে ২০২৪, ০৩ জিলকদ ১৪৪৫

জাতীয়

দেয়ালে পিঠ ঠেকে গেছে বলেই জ্বালানি ব্যবসায়ীদের ধর্মঘট

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭০৭ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ৩, ২০২৩
দেয়ালে পিঠ ঠেকে গেছে বলেই জ্বালানি ব্যবসায়ীদের ধর্মঘট

খুলনা: জ্বালানি ব্যবসায়ীদের পিঠ দেয়ালে ঠেকে গেছে বলেই অনির্দিষ্টকালের ধর্মঘট পালন হচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ জ্বালানি তেল পরিবেশন সমিতির সমাবেশে আসা নেতারা।

অনির্দিষ্টকালের জন্য ঘোষিত কর্মসূচি চলাকালীন রোববার (৩ সেপ্টেম্বর) দুপুরে খালিশপুরের ট্যাংকলরি ভবনের সামনে সমিতির এ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।

খুলনা বিভাগীয় কমিটির সভাপতি আব্দুল গফফার বিশ্বাস সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন।

সমাবেশে বক্তারা বলেন, ২০১৯ সাল থেকে একই দাবিতে আন্দোলন করতে হচ্ছে আমাদের। জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী, সচিব, উপ-সচিব, বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম কর্পোরেশনের (বিপিসি) চেয়ারম্যানসহ সংশ্লিষ্টরা বারবার আমাদের দাবিগুলোকে যৌক্তিক বলেছেন এবং প্রতিবারই নির্দিষ্ট করে সময় দিয়েছেন। উক্ত সময়ের মধ্যে দাবিসমূহ বাস্তবায়নের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। জনগণের ভোগান্তি ও সরকারকে বিপদে ফেলা যেহেতু আমাদের কাম্য নয়, সেহেতু প্রতিবারই আমাদের আন্দোলন স্থগিত করা হয়েছে। কিন্তু সংশ্লিষ্টরা তাদের প্রতিশ্রুতি রক্ষা করতে এবং দাবীসমূহ বাস্তবায়নে বারবার বার্থ হয়েছেন।

তারা আরও বলেন, বর্তমান বাজারদর ঊর্ধ্বগতি, বিদ্যুতের মূল্যে বারবার বৃদ্ধি করা হয়েছে। কর্মচারীর বেতন বৃদ্ধি করতে হয়েছে। সব ক্ষেত্রে ব্যয় কয়েকগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। অথচ জ্বালানি তেল বিক্রয়ের উপর কমিশন বৃদ্ধি করা হয়নি। যেখানে ১৩০ টাকা ১ লিটার অকটেন/পেট্রোলে বিক্রয়ে 8শতাংশ কমিশন দেওয়া হয়, সেখানে ৫২ টাকা ১ লিটার এলপি গ্যাস বিক্রয় ৮ টাকা অর্থাৎ ১৬ শতাংশ কমিশন দেওয়া হচ্ছে।
বক্তারা দৃঢ় কণ্ঠে ঘোষণা করেন, আর প্রতিশ্রুতি নয় আমাদের দাবীসমূহ মেনে নিয়ে বাস্তবায়ন না করা পর্যন্ত আমাদের ধর্মঘট অব্যাহত থাকবে। জনগণের ভোগান্তির কথা বিবেচনা করে ফিলিং স্টেশনগুলো আমরা বন্ধ রাখিনি। তবে যেহেতু তেল উত্তোলন বন্ধ সেহেতু যেকোনো সময় ফিলিং স্টেশন সমূহ আপনা-আপনি বন্ধ হয়ে যাবে। তখন জনগণ চরম ভোগান্তির স্বীকার হবে।

বক্তারা উদ্ভূত পরিস্থিতির উত্তরণের জন্য সংশ্লিষ্টদের দ্রুত সময়ের মধ্যে দাবিসমূহ বাস্তবায়নের জন্য আহ্বান জানান। তিন দফা দাবি হচ্ছে- জ্বালানি তেল পরিবহনকারী ট্যাংকলরির অর্থনৈতিক জীবনকাল ৫০ বছর করা, জ্বালানি তেল বিক্রয়ের ওপর প্রচলিত কমিশন কমপক্ষে ৭ দশমিক ৫ শতাংশ করা, জ্বালানি তেল ব্যবসায়ীরা কমিশন এজেন্ট বিধায় প্রতিশ্রুতি মোতাবেক সুস্পষ্ট গেজেট প্রকাশ করা।

এর আগে সকাল ৮টা থেকে তিন দফা দাবিতে কেন্দ্রীয় কমিটি কর্তৃক পূর্ব ঘোষিত জ্বালানি তেল উত্তোলন ও পরিবহন বন্ধ করে ধর্মঘট শুরু করেন ব্যবসায়ীরা। সারাদিন খুলনার তিন জ্বালানি ডিপো থেকে কোনো ডিলার/এজেন্ট তেল উত্তোলন করেনি।

সমাবেশে বক্তব্য দেন বাংলাদেশ জ্বালানি তেল পরিবেশক সমিতির সিনিয়র সহ-সভাপতি মোড়ল আব্দুস সোবহান, সাধারণ সম্পাদক শেখ মুরাদ হোসেন, বাংলাদেশ ট্যাংকলরি ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সিনিয়র সহ-সভাপতি এম মাহবুব আলম, খুলনা বিভাগীয় ট্যাংকলরি শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি মীর মোকছেদ আলী, সাধারণ সম্পাদক আলী আজিম, কোষাধ্যক্ষ মো. মিজানুর রহমান মিজু, পদ্মা-মেঘনা-যমুনা ট্যাংকলরি শ্রমিক কল্যাণ সমিতির সাধারণ সম্পাদক আবুল কালাম কালু, সংগঠনের নেতা শেখ জাহাঙ্গীর হোসেন, আব্দুল মান্নান খান, মো. কামাল হোসেন, কাজী রফিকুল ইসলাম নান্টু, শেখ জামিরুল ইসলাম, মো. মুরাদজ্জামান, শেখ আশিকুজ্জামান প্রমুখ।

বাংলাদেশ সময়: ১৭০৭ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ৩, ২০২৩
এমআরএম/এমজে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।