ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ মে ২০২৪, ০০ জিলকদ ১৪৪৫

জাতীয়

‘মেজর পরিচয়ে ৪ জনের কাছ থেকেই হাতিয়ে নেন ১৭ লাখ টাকা’

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯০২ ঘণ্টা, মে ১৩, ২০২৩
‘মেজর পরিচয়ে ৪ জনের কাছ থেকেই হাতিয়ে নেন ১৭ লাখ টাকা’ র‌্যাবের কবজায় প্রতারক সাগর।

ঢাকা: সশস্ত্র বাহিনীর মেজর পরিচয় দিয়ে চাকরির প্রলোভনে বিপুল পরিমাণ অর্থ আত্মসাতের ঘটনায় আব্দুর রাজ্জাক ওরফে সাগর চৌধুরী ওরফে জাহিদ চৌধুরী ওরফে সুমির (৩১) নামের এক প্রতারককে আটক করেছে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব)।

বৃহস্পতিবার (১৩ মে) টাঙ্গাইলের কালিহাতির দক্ষিণ বেতডোবা এলাকায় অভিযান চালিয়ে ভুয়া ওই মেজরকে আটক করা হয়।



এ সময় তার কাছ থেকে এক সেট বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর কম্ব্যাট ইউনিফর্ম, ১টি সেনাবাহিনীর কম্ব্যাট কাধব্যাগ, ১টি সেনাবাহিনীর সাগর নামীয় নেমপ্লেট, ১টি সেনাবাহিনীর ফেসমাস্ক, ১টি সেনাবাহিনীর ফিল্ড ক্যাপ, ১টি সেনাবাহিনীর ব্যাজের প্রতিলিপিসহ মানিব্যাগ, ১টি পুরাতন সেনাবাহিনীর গেঞ্জি, ১টি মোটরসাইকেলের লাইসেন্স, ৫টি সেনাবাহিনীতে নিয়োগের ভুয়া নিয়োগপত্র ও মেডিকেল সনদপত্র, ৫টি ভুয়া এনআইডি কার্ড, ১টি পোস্ট অফিস সেভিংস বই, ১টি ব্যাংকে টাকা পাঠানোর রিসিপ্ট কপি, ৪টি মোবাইলফোন ও ১১টি বিভিন্ন কোম্পানির সিম উদ্ধার করা হয়।

র‌্যাব-১০ এর অধিনায়ক অতিরিক্ত ডিআইজি মোহাম্মদ ফরিদ উদ্দীন জানান, ২৪ জানুয়ারি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সোনিয়ার (৩৯) সঙ্গে প্রতারক সাগরের পরিচয় হয়। সাগর নিজেকে সেনাবাহিনীর মেজর পরিচয় দেন এবং বর্তমানে তিনি বগুড়ার মাঝিরা সেনানিবাসে কর্মরত আছেন বলে জানায়।

ভিকটিম সোনিয়ার সঙ্গে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে কথা বলার সময় বিভিন্ন সময় সেনাবাহিনীর পোশাক পরিহিত অবস্থায় কথা বলতেন সাগর। এর ফলে প্রতারক সাগরকে সেনাবাহিনীর কর্মকর্তা বলে বিশ্বাস করেন ভিকটিম সোনিয়া।

র‌্যাবের ওই কর্মকর্তা বলেন, আলাপচারিতার একপর্যায়ে সোনিয়াকে মাঝিরা সেনানিবাস সিএমএইচে নার্সের চাকরি দেওয়ার প্রলোভন দেখান সাগর। সোনিয়া সরল মনে বিশ্বাস করে সাগরের প্রস্তাবে রাজি হন। একপর্যায়ে সাগর আরও ৪-৫ জনকে চাকরি দেওয়ার সুযোগ রয়েছে বলে জানায়।

সাগরের কথামতো সোনিয়া তার পরিচিত শাপলা খাতুন (২৫), মুরশালিনা খাতুন (২৬), মিতা খাতুন (২৭) ও জোৎস্না বেগমের (২৭) চাকরির জন্য রাজি করিয়ে সাগরের সঙ্গে মেসেঞ্জার ও ইমুতে ভিডিও কলে কথা বলিয়ে দেন। নার্সে চাকরির জন্য জনপ্রতি পাঁচ লাখ টাকা দাবি করেন সাগর। সে অনুযায়ী ১৫ ফেব্রুয়ারি সাগরের দেওয়া নগদ ও বিকাশের বিভিন্ন নাম্বারে সর্বমোট ১৭ লক্ষাধিক টাকা পাঠান ভিকটিমরা।

র‌্যাব-১০ অভিনায়ক বলেন, টাকা দেওয়ার কিছুদিন পর ভিকটিমরা সাগরের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেন। কিন্তু ভিকটিমরা সাগরের ফেসবুক আইডি ডিঅ্যাকটিভ এবং সব মোবাইলফোন নম্বর বন্ধ পান। পরে সাগরের আর কোনো তথ্য না পেয়ে কামরাঙ্গীরচর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন এবং র‌্যাব-১০ বরাবর একটি অভিযোগ দাখিল করেন ভুক্তভোগীরা। এর ভিত্তিতে তদন্তের ধারাবাহিকতায় প্রতারক সাগরকে আটক করা হয়।

আটক সাগর সেনাবাহিনীর মেজরসহ বিভিন্ন সময় বিভিন্ন বাহিনীর উচ্চপদস্থ কর্মকর্তার পরিচয় দিয়ে চাকরির প্রলোভন এবং বিভিন্ন ধরনের ভয়-ভীতি প্রদর্শন করে সাধারণ মানুষের কাছ থেকে মোটা অংকের টাকা আত্মসাৎ করে আসছিলেন। তার নামে ঢাকার আশুলিয়া থানায় প্রতারণাসহ একাধিক মামলা রয়েছে বলে জানা গেছে। তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন বলেও জানান তিনি।

বাংলাদেশ সময়: ১৯০০ ঘণ্টা, মে ১৩, ২০২৩
পিএম/এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।