ঢাকা, শুক্রবার, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৮ রমজান ১৪৪৫

জাতীয়

মাদকসেবীর ছুরি হামলায় পুলিশ সদস্য আহত 

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭২৯ ঘণ্টা, মার্চ ২৫, ২০২৩
মাদকসেবীর ছুরি হামলায় পুলিশ সদস্য আহত 

ঢাকা: মাদকের অভিযানে গেলে আড়াল থেকে উড়ে এসে পুলিশ সদস্যের বুকে ছুরিকাঘাত করে এক মাদকসেবী। সেই সঙ্গে অস্বাভাবিক আচরণ করছিল আসামিরা।

 

শনিবার (২৫ মার্চ) দুপুরে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) তুরাগ থানায় আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানিয়েছেন ডিএমপির উত্তরা বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) মোহাম্মদ মোর্শেদ আলম।

শুক্রবার (২৪ মার্চ) রাত ৮টার দিকে তুরাগ থানাধীন ফুলবাড়িয়া বাজার সংলগ্ন একটি বাড়িতে অভিযান চালাতে গেলে উপ-পরিদর্শক (এসআই) শাহিনুর রহমান খানকে ছুরিকাঘাত করে মাদকসেবী ও কারবারিরা। পরে তাকে গুরুতর আহত অবস্থায় উদ্ধার করে স্থায়ীয় বেসরকারি হাসপাতালে নেওয়া হয়, পরে সেখান থেকে কুর্মিটোলা হাসপাতালে নেওয়া হয়। বর্তমানে তিনি ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

এ ঘটনায় মাদক কারবারি চক্রের মূলহোতাসহ ৩ আসামিকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

গ্রেফতার মাদক কারবারিরা হলেন- আব্দুর রউফ (৪০), মো. রাজু (৩২) ও ফারুক মিয়া ওরফে টুলু (৪৫)। অভিযানে তাদের কাছে থেকে পুলিশকে ছুরিকাঘাত করার চাকু, লোহার পাইপ ও তিনটি মোবাইল ফোন জব্দ করা হয়।

ডিসি মোহাম্মদ মোর্শেদ আলম বলেন, গ্রেফতার আসামিদের মধ্যে মূলহোতা আব্দুর রউফ তুরাগের হাজী বিল্লাল হোসেনের ছেলে, রাজু মাগুড়া সদর উপজেলার আলোকন্দা গ্রামের আইয়ুব আলীর ছেলে এবং ফারুক মিয়া মুন্সিগঞ্জ সদরের মুক্তারপুর গ্রামের মৃত সহিদ মোল্লার ছেলে।  

ডিসি বলেন, শুক্রবার সন্ধ্যায় ইফতারের পর তুরাগের বিল্লাল হাজীর বাড়িতে মাদক ক্রয়-বিক্রয় ও সেবনের তথ্য পায় পুলিশ। পরে কর্তব্যরত এসআই শাহিনুর রহমান সেখানে যায়। গিয়ে ৪/৫ জনকে সেখানে দেখতে পায়। পুলিশের উপস্থিতিতে তারা ছাদ থেকে পালিয়ে চলে যায়।

একটু পরে এক মাদকসেবী হঠাৎ করেই আড়াল থেকে এসে ছুরি দিয়ে এসআই শাহিনের বুকে আঘাত করে। তাতে তার পেটেও ইঞ্জুরি (আহত) হয়। তাৎক্ষণিক তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠানো হয়।

তিনি বলেন, এ ঘটনার সঙ্গে সঙ্গেই ওই বাসাতে অতিরিক্ত পুলিশ ফোর্স পাঠানো হয় এবং বাসাটি ঘিড়ে রাখা হয়৷ সন্ধ্যা ৭টার পর থেকেই আসামী বাসায় অবস্থান করছিল এবং চারপাশে পুলিশ ছিল। একপর্যায়ে আসামি বাসাটির ছাদে অবস্থান নেয়। ওই সময় তার হাতে একটি ছুরি ও লাঠি ছিল। আসামি পুলিশের উদ্দেশ্যে বলতে থাকে, পুলিশ হয় তাকে গুলি করে মেরে ফেলবে, অন্যথায় সে সেখান থেকে লাফ দিয়ে আত্মহত্যা করবে। অথবা আব্দুর রউফ ছুরি ও লাঠি দিয়ে পুলিশকে আঘাত করবে। অস্বাভাবিক আচরণ ছিল আসামির।

তিনি বলেন, পুলিশ সারারাত সেখানে অবস্থান নেয়। তার স্ত্রী, ভাইদেরকে দিয়ে আসামিকে বোঝানোর চেষ্টা করা হয়। কিন্তু কোনোভাবেই তাকে বোঝানো যাচ্ছিল না। সে বারবারই পুলিশকে ভয় দেখাচ্ছিল।
 
তিনি বলেন, রাত সাড়ে ৪টার দিকে আসামি পুলিশের আহ্বানে আত্মসমর্পণ করে। সারারাত আসামিকে গ্রেফতারের চেষ্টা করে এবং তাদের টেকনিক (কৌশল) ব্যবহার করে ৮/৯ ঘণ্টা অবস্থান করে। সর্বশেষ ভোর সাড়ে ৪টায় মূল আসামি আব্দুর রউফকে গ্রেফতার করা হয়।

এ ঘটনায় পুলিশের কর্তব্যরত কাজে বাধা ও পুলিশকে আহতের কারণে থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়। পরে আসামিদের সাত দিনের রিমান্ড আবেদন করে আদালতে পাঠানো হয় বলেও জানান ডিসি মোর্শেদ আলম।  

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে ডিসি মোর্শেদ বলেন, আসামিদের কাছ থেকে কিছু গাঁজা পাওয়া গেছে। গ্রেফতার আসামিদের রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদে অন্যান্য বিষয়ে বিস্তারিত জানা যাবে।

তিনি বলেন, আব্দুর রউফের বিরুদ্ধে আগের কোনো মামলা নেই। তবে তাকে ৮/৯ বার রিহাবে পাঠানো হয়েছিল বলে জানায় তার পরিবার।

ডিসি বলেন, সে সেখানে মাদক সেবন করতো। ব্যবসা করতো কি না তা জিজ্ঞাসাবাদে জানা যাবে।  

বাংলাদেশ সময়: ১৭২৯ ঘণ্টা, মার্চ ২৫, ২০২৩
এসজেএ/এসএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।