ঢাকা, বুধবার, ৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৭ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

২ স্পিডবোটের সংঘর্ষ; মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ৬ জনে

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮৫৬ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ৯, ২০২৩
২ স্পিডবোটের সংঘর্ষ; মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ৬ জনে

ফরিদপুর: ফরিদপুরের চরভদ্রাসন উপজেলায় পদ্মায় দুই স্পিডবোটের মুখোমুখি সংঘর্ষের ঘটনার পাঁচদিন পরে উদ্ধার অভিযান সমাপ্ত ঘোষণা করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (০৯ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে নিখোঁজ শহিদুলের (৩৮) মরদেহ উদ্ধার শেষে এ উদ্ধার অভিযান সমাপ্ত ঘোষণা করেছেন উপজেলা প্রশাসন।

দুর্ঘটনাস্থল থেকে খানিকটা দূরে মাদারীপুরের শিবচর উপজেলার নিকটবর্তী আড়িয়াল খাঁ নদীর মোহনা থেকে শহিদুলের মরদেহটি উদ্ধার করা হয়। স্পিডবোট দুর্ঘটনায় এ পর্যন্ত ছয়জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।

ফরিদপুর জেলা প্রশাসকের নির্দেশে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) তানজিলা কবির ত্রপার তত্ত্বাবধানে এ উদ্ধার অভিযানে গত তিনদিন ধরে কাজ করে ঢাকা, ফরিদপুর ও চরভদ্রাসন ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দল। মরদেহ উদ্ধার ও সনাক্ত শেষে নিজ নিজ স্বজনদের কাছে মরদেহগুলো হস্তান্তর করা হয়।

এদিকে বুধবার (০৮ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে দুর্ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারকে সার্বিক সাহায্য সহযোগীতার নির্দেশ দেন জেলা প্রশাসক মো. কামরুল আহসান তালুকদার।

সে সময় জেলা প্রশাসক মো. কামরুল আহসান তালুকদার বলেন, দুর্ঘটনাস্থলটি ঢাকার দোহারের ভেতর হলেও তারা কোনো পদক্ষেপ না নেওয়ায় এখন মরদেহগুলো ফরিদপুরের চরভদ্রাসন উপজেলার পদ্মা নদীর সীমানা থেকে উদ্ধার করা হচ্ছে। স্পিডবোট দুর্ঘটনায় নিখোঁজ মরদেহ উদ্ধারে ইউএনও, চরঝাউকান্দা ইউপি চেয়ারম্যান, সদর ইউপি চেয়ারম্যান ও নিহতের স্বজনেরা ডুবুরি দলের সঙ্গে সারাদিন পরিশ্রম করেছেন। সংশ্লিষ্ট ইউএনওর পক্ষ থেকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে নিহতের পরিবারের পাশে দাঁড়ানোর জন্য। প্রাথমিকভাবে মরদেহ দাফন কাফনের জন্য স্বজনদের ৫ হাজার টাকা করে নগদ অর্থ দেওয়া হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারে যদি কোনো উপার্যনক্ষম ব্যাক্তি থাকে তবে তাদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা হবে।

এ সময় জেলা প্রশাসকের সঙ্গে ছিলেন (ডিডিএলজি) মো. আসলাম মোল্যা, উপজেলা চেয়ারম্যান মো. কাউছার, চর ঝাউকান্দা ইউনিয়নের ইউপি চেয়ারম্যান বদরুজ্জামান বদু মৃধা, সদর ইউপি চেয়ারম্যান মো. আজাদ খাঁন প্রমুখ।

এ পর্যন্ত উদ্ধার হয়েছেন- ফরিদপুরের কোতয়ালী থানাধীন গুহলক্ষীপুর এলাকার শিরিশ হাওলাদারের ছেলে শুকুমার হালদার (৬৫), চরভদ্রাসন গাজিরটেক ইউনিয়নের চর অযোধ্যা তেলিডাঙ্গী গ্রামের কুদ্দুস খন্দকারের ছেলে রানা খন্দকার (২২), ফরিদপুর সদরের হাটগোবিন্দপুর গ্রামের মো. কাইয়ুম আলী মৃধার ছেলে মো. দাউদ মৃধা (৩৮), সদরপুর উপজেলার সমশের মাতুব্বরের ডাঙ্গীর বাসিন্দা ছুরমান শেখের ছেলে খোকান শেখ (৪০), ফরিদপুর সদরের মুন্সী বাজার এলাকার জয় গোপাল গোস্বামীর ছেলে বলরাম গোস্বামী (৩৩) ও সর্বশেষ বৃহস্পতিবার উদ্ধার করা হয় চরভদ্রাসন উপজেলার সদর ইউনিয়নের ফাজেল খাঁ'র ডাঙ্গী গ্রামের শেখ চাঁন মিয়ার ছেলে শহিদুল ইসলামের (৩৮) মরদেহ।

মরদেহ উদ্ধার ও অভিযান সমাপ্তের বিষয়ে চরভদ্রাসন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) তানজিলা কবির ত্রপা বলেন, দুর্ঘটনায় নিখোঁজ ব্যাক্তিদের স্বজনদের দেওয়া তথ্য মতে গত তিনদিনে মোট ছয়টি মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। আমাদের কাছে আর কোনো ব্যাক্তি নিখোঁজ থাকার তথ্য না থাকায় বৃহস্পতিবার দুপুরে জেলা প্রশাসনের নির্দেশে পদ্মায় উদ্ধার অভিযান সমাপ্ত ঘোষণা করা হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, মরদেহ দাফনের জন্য প্রত্যেক পরিবারকে আপাতত ৫ হাজার টাকা সহায়তা দেওয়া হয়েছে। পরবর্তীতে আরও সহযোগিতা করা হবে। এছাড়া কারো পরিবারে যদি কর্মক্ষম লোক থাকে তবে তাদের চাকরি দেওয়ার চেষ্টা করবে প্রশাসন।

উল্লেখ্য, গত রোববার (০৫ ফেব্রুয়ারি) সকাল ১০টার দিকে ঢাকার দোহার ও ফরিদপুরের চরভদ্রাসন উপজেলার চর ঝাউকান্দা ইউনিয়নের বর্ডার এলাকার পদ্মা নদীতে দুইটি স্পিডবোটের মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এতে ঘটাস্থলেই একজন নিহত হওয়ার পাঁশাপশি কয়েকজন আহত ও বেশ কয়েকজন নিখোঁজ ছিলেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৮৫৫ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০৯, ২০২৩
এফআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।