ঢাকা, রবিবার, ১৫ বৈশাখ ১৪৩১, ২৮ এপ্রিল ২০২৪, ১৮ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

সাইপ্রাসে প্রেম, লক্ষ্মীপুরে এসে বিয়ের পিঁড়িতে নেপালি তরুণী

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২৪৪ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৯, ২০২২
সাইপ্রাসে প্রেম, লক্ষ্মীপুরে এসে বিয়ের পিঁড়িতে নেপালি তরুণী

লক্ষ্মীপুর: চার বছর আগে সাইপ্রাসে পরিচিত হন বাংলাদেশের যুবক রাসেল ও নেপালি তরুণী জ্যোতি। দুজনের মধ্যে গড়ে ওঠে প্রেমের সম্পর্ক।

সম্পর্ককে নাম দিতে দুজনেই সিদ্ধান্ত নেন বিয়ের। কিন্তু বাধা হয়ে দাঁড়ায় ধর্ম।

রাসেল মুসলিম, জ্যোতি হিন্দু হওয়ায় দুজনের বিয়ে নিয়ে কিছুটা সংশয় ছিল। কিন্তু বাধা কাটিয়ে তারা বিয়ে করেছেন। ভৌগোলিক দূরত্বকে পাশ কাটিয়ে চার হাত এক করেছেন তারা। জ্যোতিও ভালোবাসার জন্য ত্যাগ করেছেন নিজের ধর্ম। ইসলাম ধর্ম গ্রহণের পর নিজের নামও পাল্টে নিয়েছেন তিনি। এখন তার নাম খাদিজা বেগম।

রাসেল লক্ষ্মীপুরের রায়পুর পৌরসভার ৬ নম্বর ওয়ার্ডের কাঞ্চনপুর গ্রামের বাসিন্দা। তার বাবার নাম মনতাজুর রহমান ভূঁইয়া। জ্যোতি আকা খাদিজা এখন তার স্বামীর সংসারেই আছেন। তার মূল বাড়ি নেপালের সোনাচুড়ি জেলার হেটড়া শহরে। রাসেলকে বিয়ের জন্য ছেড়ে এসেছেন নিজের পরিবারকে। তবে, লক্ষ্মীপুরে এসে স্বামী ও তার পরিবার পেয়ে দারুণ খুশি খাদিজা। তাকে পেয়ে আনন্দ লেগেছে রাসেলের পরিবারেও।

রাসেল জানান, তার স্ত্রী হওয়ার আগে প্রায় চার বছর ধরে সাইপ্রাসের একটি কোম্পানিতে কাজ করতেন। সেখানেই কাজ করতে গিয়ে দুজনের পরিচয় হয়। এক পর্যায়ে জ্যোতির সঙ্গে তার প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। বিয়ের সিদ্ধান্ত নিতে একে অপরের বাড়ি ফেরেন।

তিনি আরও জানান, গত ২৩ নভেম্বর পরিবার ছেড়ে নেপাল থেকে বাংলাদেশে আসেন জ্যোতি। ঢাকায় পা রেখেই ধর্ম পরিবর্তন করেন তিনি। জ্যোতি নাম পাল্টে নেন খাদিজা বেগম নাম। তারপর আদালতের মাধ্যমে দালিলিক কার্যক্রম শেষে বিয়ে করেন তারা। নিকাহ রেজিস্ট্রারের মাধ্যমে বিয়ের কাবিননামাও রেজিস্ট্রি করেন তারা।

তারপর গত ২০ ডিসেম্বর স্ত্রী খাদিজাকে নিয়ে নিজ গ্রামে ফেরেন রাসেল। গত সোমবার (২৬ ডিসেম্বর) পারিবারিকভাবে তাদের গায়ে হলুদ হয়। মঙ্গলবার (২৭ ডিসেম্বর) আনুষ্ঠানিকভাবে বিয়ে হয় তাদের। আত্মীয়-স্বজনের পাশাপাশি গ্রামবাসীকেও দাওয়াত করে খাইয়েছে রাসেলের পরিবার।

খাদিজা বাংলায় কথা বলতে পারেন। পরিবার, প্রেম ও বিয়ে নিয়ে করা বাংলানিউজের প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, নেপালে আমার বাবা-মা, ভাই-বোন সবাই আছেন। তাদের সম্মতি নিয়েই আমি বাংলাদেশে এসেছি। এ দেশের সংস্কৃতি ও গ্রাম্য পরিবেশ আমার কাছে অনেক ভালো লেগেছে। রাসেল ও তার পুরো পরিবারকে আমি অনেক ভালোবাসি। আমি এ দেশেই থেকে যাব।

ছেলের বৌ পেয়ে খুশি রাসেলের মা। তিনি বলেন, ওদের আনন্দেই আমরা আনন্দিত। ইসলামি রীতি-নীতি অনুসরণ করেই তাদের বিয়ের কার্যক্রম সম্পন্ন করেছি।

বিদেশি বৌ দেখতে রাসেলের বাড়িতে ভিড় করেছেন এলাকার লোকজন। তারা জানান, নতুন বৌ’র সঙ্গে কথা হয়েছে। তিনি সুন্দর করে বাংলা ভাষায় কথা বলতে জানেন। তাদের পছন্দ হয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ১২৪৩ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৯, ২০২২
এমজে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।