ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৭ রমজান ১৪৪৫

মালয়েশিয়া

পুত্রা সেন্টারে তারেকের সভা, অকৃপণ মালয়েশিয়া

মাজেদুল নয়ন ও সাজেদা সুইটি | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০২২ ঘণ্টা, জুন ১০, ২০১৪
পুত্রা সেন্টারে তারেকের সভা, অকৃপণ মালয়েশিয়া ছবি : বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

কুয়ালালামপুর, মালয়েশিয়া থেকে: অনেক জল্পনা কল্পনার অবসান ঘটিয়ে অবশেষে নির্ধারিত হল বিএনপির সিনিয়র ভাইস-চেয়ারম্যান তারেক রহমানের আলোচনা সভার ভেন্যু।
 
খানিকটা অনিশ্চয়তা থাকলেও বুধবার সন্ধ্যায় কুয়ালালামপুরের পুত্রা ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারেই এই আয়োজনের উদ্যোগ নিচ্ছেন আয়োজকরা।


 
সেন্টারের দেওয়ান তুন রাজ্জাক-২ নামের হলটিতে অনুষ্ঠানের সব প্রস্তুতি সম্পন্ন বলে দাবিও করছেন তারা।
 
তবে কেউ কেউ এও জানিয়েছেন, তারেকের অনুষ্ঠানটি যেন না হয় সেই তৎপরতার ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে বিভিন্ন সূত্রে।
 
কিন্তু সেসব আশঙ্কা উড়িয়ে আয়োজন ঘিরেই ব্যস্ত রয়েছেন মালয়েশিয়া বিএনপির নেতাকর্মীরা। তারেকের জন্য অর্থ, সময়, শ্রম- কোনো বিষয়েই তাদের যেন কোনো কার্পণ্য নেই।
 
জিয়াউর রহমানের ৩৩তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে এই আলোচনা সভার আয়োজন করা হচ্ছে বলে বাংলানিউজকে জানান মালয়েশিয়া বিএনপির একাংশের সভাপতি মো. শহীদ উল্লাহ।
 
অবশ্য র‌্যাবের বিলুপ্তির দাবিতে গণস্বাক্ষর কর্মসূচি উদ্বোধন করতেই এই অনুষ্ঠান আয়োজন করা হচ্ছে বলে এরইমধ্যে পত্র-পত্রিকায় এসেছে।
 
আবার কেউ কেউ বলছেন, এখানে দলের বিভাজন দূর করতেই এসেছেন তারেক।
 
তার কিছু নজিরও অবশ্য এই অনুষ্ঠান উপলক্ষে দেখা গেছে। কারণ. তারেক সুস্পষ্ট নির্দেশ দিয়েছেন, যদি কোনো অনুষ্ঠান করতেই হয়, তবে তা যেন সবার মিলিত উদ্যোগে হয়। ভিন্ন ভিন্ন গ্রুপের কোনো অনুষ্ঠানে অংশ নেবেন না বলে আগেই জানিয়ে দিয়েছেন তিনি।
 
আর এতেই বাধ্য হয়ে বাঘে-মোষে এক ঘাটে জল খাচ্ছে। যারা একে অন্যের মুখ দেখাদেখিতে নারাজ ছিলেন তারাই এখন একসঙ্গে আয়োজন করছেন তারেকের অনুষ্ঠান।
 
আয়োজকদের একজন বাংলানিউজকে বলেন, ১১ জুন বুধবার সন্ধ্যায় কুয়ালালামপুরের পুত্রা ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারে অনুষ্ঠেয় (পিডব্লিউটিসি) এই অনুষ্ঠানের জন্য অকৃপণ হাতে ব্যয় করছেন নেতাকর্মীরা। নেতাকে কাছে পেতে, তার বক্তব্য শুনতে ও অনুষ্ঠান সফল করতে কোনো ভুলচুকের সুযোগ রাখতে চান না তারা।
 
আয়োজকরা জানান, স্থানীয় সময় সন্ধ্যা আটটায় (বাংলাদেশ সময় বিকেল ছয়টায়) অনুষ্ঠানটি আনুষ্ঠানিকভাবেই শুরু হবে। তবে লোক সমাগম শুরু হবে আরও ঘণ্টা খানেক আগে থেকেই।
 
মালয়েশিয়া বিএনপির একাংশের সহ-সভাপতি দেলোয়ার হোসেন বাংলানিউজ বলেন, এই অনুষ্ঠানটি সেরা ও উদাহরণ হয়ে যেন থাকে সেই লক্ষেই কাজ করছি আমরা।
 
তিনি জানান, সাত হাজার লোক ধারণক্ষমতা সম্পন্ন এই হল বাংলাদেশিদের পদচারণায় মুখর থাকবে বুধবার সন্ধ্যায়। আয়োজনে কোনো প্রতিকূলতা আসবে না বলেই নিজের বিশ্বাসের কথা জানান তিনি।
 
সূত্র জানায়, মালয়েশিয়া বিএনপির ৫২টি শাখা কমিটি সব ব্যবস্থা করছে।
 
আয়োজকরা আশা করছেন, প্রায় ৮০টি বাসে চড়ে বিভিন্ন অঞ্চল থেকে সমর্থকরা আসবেন। সব নেতাকর্মী ও প্রবাসী বাংলাদেশিরা যেন তারেকের সঙ্গে সাক্ষাতের সুযোগ পান সেই চেষ্টা করা হচ্ছে।
 
বিশেষ করে, বাংলাদেশি অধ্যুষিত প্রদেশ কেপাং, পুচং, মাজুদা, কেলাং, কেলাংমেরু, চুঙ্গাইবুলু, শাহ আলম, রাওয়াং থেকে বিপুল সংখ্যক প্রবাসী এই অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন বলে আশা করছেন আয়োজকরা।
 
মঙ্গলবার রাতে এ নিয়ে একটি বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে। এর আগে শনি, রবি, সোম- তিনদিনই দফায় দফায় বসেছেন নেতাকর্মীরা।
 
আয়োজকরা জানান, এই অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি তারেকের সঙ্গে মঞ্চে থাকবেন যুবদলের দুইজন, মূলদলের দুই অংশ থেকে দুইজন করে চারজন। তবে তারা কারা-তা এখনো নিশ্চিতভাবে জানা যায়নি।
 
উভয় গ্রুপের আয়োজকরাই জানান, বরাবরই দলের অনুষ্ঠানগুলো তারা ঘটা করে পালন করেন। আর যেখানে তারেকের অনুষ্ঠানের প্রসঙ্গ, সেখানে কার্পণ্যের কোনো সুযোগ থাকে না। যার যা আছে তাই সঁপে দিতে চান তারা। এটা তারেক রহমানেরও জানা আছে বলেই দাবি তাদের।
 
মালয়েশিয়ায় অবস্থানরত কয়েকজন ব্যবসায়ী সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, এদেশে অবস্থানরত বাংলাদেশিদের মধ্যে বিএনপি নেতাকর্মীর সংখ্যাই বেশি। তাদের আর্থিক অবস্থাও বেশ ভালো। কয়েকজন স্বনামধন্য কোটিপতিও বিএনপির সমর্থক বলে জানান তারা।
 
এসব কারণেই বিএনপির অনুষ্ঠানের আর্থিক যোগান নিয়ে দুঃশ্চিন্তা থাকে না বলেও মন্তব্য করেন এক ব্যবসায়ী।
 
তারেকের এই অনুষ্ঠান হওয়া না হওয়া নিয়েও অবশ্য প্রথম থেকেই অনিশ্চয়তা ছিল। তারেক কোথায়, কখন, কাদের সঙ্গে অনুষ্ঠানটি করবেন সেটি নিশ্চিত হওয়া যাচ্ছিল না।
 
তবে ৬ জুন গভীর রাতের বৈঠকে মিটমাট হয় সবকিছু।
 
তারেক রহমানের সামনে স্থানীয় বিএনপি তাদের অর্থ ও জনশক্তির শোডাউন দেওয়ার সুযোগ তৈরি করতেই এই অনুষ্ঠান নিয়ে ব্যাপক তোড়জোড় রয়েছে বলে জানা গেছে বিভিন্ন সূত্রে।
 
অনুষ্ঠান ঘিরে বৈঠকগুলোতে কখনো কখনো উত্তেজনাও তৈরি হয়েছে।
 
রোববার বিকেলে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শাহ মোয়াজ্জেম হোসেনকে প্রধান অতিথি করে অনুষ্ঠান করছিল স্থানীয় যুবদল।
 
কিন্তু লোক সমাগম বেশি হওয়ায় পুলিশ এসে পড়ে ও তিনজনকে আটক করে। তখন শাহ মোয়াজ্জেমকেও জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় বলে জানিয়েছেন একাধিক নেতা।
 
তারেক রহমান গত ২ জুন সোমবার মালয়েশিয়া আসার পর থেকেই তাকে নিয়ে নানা আলোচনা ও গুঞ্জন চলছিল। বুধবারের অনুষ্ঠান নিয়ে তাই সবার আগ্রহ অনেক বেশি বলে মনে করছেন নেতাকর্মীরা।

** মালয়েশিয়ায় তারেক ম্যানিয়া!

Nayan_Sweety_01


 





বাংলাদেশ সময়: ২০১৮ ঘণ্টা, জুন ১০, ২০১৪

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

মালয়েশিয়া এর সর্বশেষ