ঢাকা, শুক্রবার, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৮ রমজান ১৪৪৫

আইন ও আদালত

হারাগাছের ঘটনা তদন্তে জেলা জজের নেতৃত্বে কমিটি

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২৪৮ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৮, ২০২১
হারাগাছের ঘটনা তদন্তে জেলা জজের নেতৃত্বে কমিটি

ঢাকা: রংপুরের হারাগাছে পুলিশের হাতে আটকের পর মৃত্যু হওয়ার ঘটনা তদন্তে জেলা ও দায়রা জজের নেতৃত্বে তিন সদস্যের কমিটি গঠন করেছেন হাইকোর্ট।

কমিটিতে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক ও অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার থাকবেন।

এ কমিটি ১৫ দিনের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে হবে। '

বুধবার (৮ ডিসেম্বর)বিচারপতি মামনুন রহমান ও বিচারপতি খোন্দকার দিলীরুজ্জামানের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।

আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল অমিত দাশ গুপ্ত। আবেদনের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী জ্যোতির্ময় বড়ুয়া।

এর আগে ওই ব্যক্তির সুরতহাল ও ভিসেরা রিপোর্ট আদালতে দাখিল করা হয়েছিলো।
৩ নভেম্বর সুরতহাল প্রতিবেদন থেকে উল্লেখ করে অমিত দাশ গুপ্ত আদালতে বলেছিলেন, ২০১৯ সালের এক মামলায় ওই আসামির কাছ থেকে ৫০ বোতল ফেনসিডিল উদ্ধার করেছিলো। তার নির্দিষ্ট কোনো পেশা নেই। মাদক বিক্রয় ও সেবন করে থাকে। প্রকৃত ঘটনা উদঘাটন ও দোষীদের চিহ্নিত করার নিমিত্তে অনুসন্ধান তদন্ত করে ২ অক্টোবর অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনারকে আহবায়ক করে ৪ সদস্যের তদন্ত টিম গঠন করা হয়েছে। ৭ কর্মদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।

সুরাতহাল প্রতিবেদন থেকে অমিত দাশ গুপ্ত বলেন, তার শারীরিকভাবে কোনো রকম আঘাতের চিহ্ন ছিল না।

ওইদিন জ্যোতির্ময় বড়ুয়া বলেছিলেন, ওনাদের সুরতহাল বলছে চিহ্ন নেই। কিন্তু এই যে ছবি, যেটা রংপুর থেকে তাজুলের প্রতিবেশী এক আইনজীবী পাঠিয়েছিলো সেখোনে দেখা যাচ্ছে মাথায় আঘাতের চিহ্ন আছে। মাথা থেতলানো।

এ সময় জ্যোতির্ময় বড়ুয়া ঘটনা তদন্তে একজন জুডিসিয়াল ম্যজিস্ট্রেটকে দায়িত্ব দেওয়ার আবেদন করেন।

এরপর আদালত ভিসেরা রিপোর্টসহ আরও প্রতিবেদন চান আদালত। সেগুলো দেওয়ার পর বুধবার এই আদেশ দেন।  

সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী জ্যোতির্ময় বড়ুয়া এ বিষয়ে সংবাদপত্রে প্রকাশিত প্রতিবেদন নজরে এনেছিলেন।  

গত ০১ নভেম্বর ওই ঘটনায় ক্ষুব্ধ হয়ে এলাকাবাসী হারাগাছ থানা ঘেরাও করেন। মৃত্যুবরণ করা তাজুল ইসলাম (৫০) কাউনিয়া উপজেলার হারাগাছের দালালহাট নয়াটারীর মৃত শওকত আলীর ছেলে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সন্ধ্যায় হারাগাছ থানার পুলিশ নতুনবাজার বছির বানিয়ার তেপতি নামক স্থানে অভিযান চালায়। এ সময় মাদকসেবী সন্দেহে তাজুলকে আটক করে। অভিযোগ উঠে ‘নির্যাতনের’ একপর্যায়ে ঘটনাস্থলে তার মৃত্যু হয়। এ সময় এলাকাবাসী পুলিশের দুটি গাড়ি ভাঙচুর করে।

জানা গেছে, তাজুলের মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়লে এলাকাবাসী ক্ষিপ্ত হয়ে হারাগাছ থানা ঘেরাও করে বিক্ষোভ করে। এক পর্যায়ে হত্যার বিচারের দাবিতে থানা ভবনে ভাঙচুর চালানো হয়। ভবনের সামনে রাখা একটি পুলিশ ভ্যান ও একটি মোটরসাইকেল ভাঙচুর করে বিক্ষুব্ধ লোকজন। পুলিশ আত্মরক্ষার্থে থানা ভবনের ভেতরে অবস্থান নেয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ কাঁদানে গ্যাস নিক্ষেপ করে। পরে ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ ও র্যাব এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

রংপুর মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার (অপরাধ) উজ্জ্বল কুমার রায় বলেন, আটক ব্যক্তিকে মারধর করা হয়নি। তার বয়স বেশি ছিল। পা দিয়ে চাপ দিয়ে হাতকড়া ভাঙার চেষ্টা করায় হৃদযন্ত্র বন্ধ হয়ে মারা গেছেন তিনি।

পুলিশি নির্যাতনে মৃত্যুর অভিযোগ

বাংলাদেশ সময়: ১২৪৬ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০৮, ২০২১ 
ইএস/এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।