ঢাকা, শুক্রবার, ৬ বৈশাখ ১৪৩১, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫

আইন ও আদালত

এক চিকিৎসকের মৃত্যুতে তিন চিকিৎসকের বিরুদ্ধে মামলা

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪৫৪ ঘণ্টা, জুন ২০, ২০২১
এক চিকিৎসকের মৃত্যুতে তিন চিকিৎসকের বিরুদ্ধে মামলা

ঢাকা: রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালের মেডিক্যাল অফিসার ডা. তৌফিক এনামের অবহেলাজনিত মৃত্যুর অভিযোগ এনে তিন চিকিৎসকের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে।

রোববার (২০ জুন) ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট রাজেশ চৌধুরীর আদালতে মামলাটি দায়ের করেন তৌফিক এনামের বাবা সিনিয়র ফিজিওথেরাপিস্ট আক্তারুজ্জামান মিয়া।

আদালত বাদীর জবানবন্দি গ্রহণ শেষে সিআইডিকে অভিযোগের বিষয়ে তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দিয়েছেন।

যাদের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে তারা হলেন- কাকরাইল ইসলামী ব্যাংক সেন্ট্রাল হাসপাতালের কনসালটেন্ট ল্যাপারোস্কপিক সার্জন অধ্যাপক ডা. আবদুল ওহাব খান, ল্যাব এইড হসপাতালের গ্যাস্ট্রোএন্টারোলজিস্ট ডিপার্টমেন্টের ডা. মামুন আল মাহতাব স্বপ্নীল এবং বিআরবি হাসপাতালের হেপাটো বিলিয়ারী সার্জন অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ আলী।

বাদীপক্ষের আইনজীবী হেমায়েত উদ্দিন খান হিরন সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান।

মামলায় অভিযোগ করা হয়, ডা. তৌফিক এনাম অসুস্থ হলে গত ৪ মে ইসলামী ব্যাংক সেন্ট্রাল হাসপাতাল কাকরাইল শাখার ডা. আব্দুল ওহাব খানকে দেখানো হয়। এরপর তার অধীনে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে ধরা পড়ে রোগীর গলব্লাডারে পাথর জমেছে। পরের দিন ডা. তৌফিককে অপারেশন করেন ডা. আবদুল ওহাব। ৬ মে তাকে ছাড়পত্র দিয়ে বাসায় পাঠিয়ে দেওয়া হয়। গত ৯ মে সন্ধ্যায় হঠাৎ তৌফিক অসুস্থ হলে ডা. ওহাব খানের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি ফের পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে জরুরিভিত্তিতে ল্যাবএইড হাসপাতালে ডা. মামুন আল মাহতাব স্বপ্নীলের সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলেন।

এরপর ল্যাবএইড হাসপাতালের ডা. স্বপ্নীলের সঙ্গে যোগাযোগ করে তৌফিকের পরিবার। তিনিও পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে দেখেন যে গলব্লাডার অপারেশনের সময় ভুল জায়গায় ক্লিপ লাগানো হয়েছে। এরপর ডা. স্বপ্নীল জেনেশুনে বেশি টাকার জন্য ইআরসিপি উইথ স্ট্যাংটিং করে ব্যর্থ চেষ্টা করেন। যার কারণে রোগীর শারীরিক অবস্থার দ্রুত অবনতি হতে থাকে। এরপর তিনি জরুরিভিত্তিতে বিআরবি হাসপাতালের অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ আলীর কাছে পাঠান। ডা. ওহাব ও ডা.স্বপ্নীল দুইজনের পরস্পর যোগসাজশে ডা. তৌফিককে অপর আসামি ডা.মোহাম্মদ আলী কাছে পাঠানো হয়। ডা. মোহাম্মদ আলী গত ১২ মে জরুরিভিত্তিতে রোগীকে বিআরবি হাসপাতাল ভর্তি করান।

এরপর ডা. মোহাম্মদ আলী রোগীর স্বজনদের বলেন, রোগীর অবস্থা ভালো না জরুরিভিত্তিতে অপারেশন করতে হবে। তার আগে যে দুইজন অপারেশন করেছেন সেখানে অবহেলা ছিল। জরুরিভিত্তিতে তাকে অপারেশন করতে হবে অন্যথায় রোগীকে বাঁচানো যাবে না। এরপর গত ৩০ মে ডা. তৌফিককে ডা. মোহাম্মদ আলীর মাধ্যমে বিআরবি হাসপাতালে অপারেশন করান। প্রথমে তৌফিকের পরিবারকে জানানো হয় অপারেশনে তিন ব্যাগ রক্তের প্রয়োজন হবে। তিন ব্যাগ রক্ত সংগ্রহ করার পর আরও ৪ ব্যাগ রক্তের প্রয়োজন বলে জানান ডা. মোহাম্মদ আলী। রক্ত না দিতে পারলে রোগীকে বাঁচানো যাবে না। এরপর হাসপাতালের চিকিৎসক ও নার্সদের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে ডা. তৌফিকের স্বজনদের কথা কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে ডা. তৌফিক এনাম চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।

বাংলাদেশ সময়: ১৪৪৫ ঘণ্টা, জুন ২০, ২০২১
কেআই/ওএইচ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
welcome-ad