ঢাকা, শনিবার, ৬ বৈশাখ ১৪৩১, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫

আইন ও আদালত

এএসআই আশেকে এলাহী ৫ দিনের রিমান্ডে

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭৪১ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৯, ২০২০
এএসআই আশেকে এলাহী ৫ দিনের রিমান্ডে

সিলেট: সিলেটে পুলিশ ফাঁড়িতে নির্যাতনে নিহত রায়হান হত্যা মামলায় গ্রেফতার এএসআই আশেকে এলাহীর পাঁচদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করা হয়েছে। একই সঙ্গে মামলার অপর আসামি কনস্টেবল হারুনুর রশিদের আরো তিনদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।

বৃহস্পতিবার (২৮ অক্টোবর) বিকেলে সিলেট অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. জিয়াদুর রহমানের আদালতে তাদের হাজির করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন-পিবিআই’র পরিদর্শক মহিদুল ইসলাম।  

এসময় এএসআই আশেকে এলাহীর সাতদিনের এবং দ্বিতীয় দফায় হারুনের আরো পাঁচদিনের রিমান্ড আবেদন করা হয়। শুনানি শেষে আদালতের বিচারক আশেকে এলাহীর পাঁচদিন ও হারুনের আরো তিনদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।     

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন-পিবিআই’র পরিদর্শক মহিদুল ইসলাম বাংলানিউজকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

তিনি বলেন, রায়হান হত্যাকাণ্ডে সংশ্লিষ্টতায় বুধবার (২৮ অক্টোবর) রাতে এএসআই আশেকে এলাহীকে সিলেটের পুলিশ লাইন্স থেকে এনে গ্রেফতার দেখান।

 পিবিআই সিলেটের পুলিশ সুপার খালেদ উজ জামান বাংলানিউজকে বলেন, এ নিয়ে রায়হান হত্যা মামলা পুলিশের তিন সদস্যকে গ্রেফতার দেখানো হয়েছে। গ্রেফতারঅন্যরা হলেন- কনস্টেবল টিটু চন্দ্র দাস ও হারুনুর রশিদ। এছাড়া রায়হানের বিরুদ্ধে ছিনতাইয়ের অভিযাগকারী সাইদুর শেখকে ৫৪ ধারায় গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
 
পিবিআইর তদন্ত সূত্র জানায়, বৃহস্পতিবার দুপুরে তাকে আদালতে হাজির করে রিমান্ড চাওয়া হবে।
 
গত ১১ অক্টোবর সিলেটের বন্দরবাজার পুলিশ ফাঁড়িতে নির্যাতনে গুরুতর আহত হন রায়হান। তাকে ওইদিন সকাল ৬টা ৪০ মিনিটে  তাকে গুরুতর আহত অবস্থায় ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন বন্দরবাজার ফাঁড়ির এএসআই আশেকে এলাহীসহ পুলিশ সদসরা। সকাল ৭টা ৫০ মিনিটে হাসপাতালে মারা যান  রায়হান।
 
পুলিশের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়, নগরের কাস্টঘরে গণপিটুনিতে রায়হান নিহত হন। তবে পরিবার পক্ষ থেকে দাবি করা হয় সিলেট কোতোয়ালি থানাধীন বন্দর বাজার ফাঁড়িতে পুলিশি নির্যাতনে প্রাণ হারান রায়হান। নিহত রায়হান নগরের আখালিয়া নেহারিপাড়ান মৃত রফিকুল ইসলামের ছেলে। তিনি স্টেডিয়াম মার্কেট এলাকায় এক চিকিৎসকের চেম্বারে সহকারী হিসেবে কাজ করতেন।
 
এ ঘটনায় রায়হানের স্ত্রী তাহমিনা আক্তার তান্নি বাদী হয়ে কোতোয়ালি থানায় হেফাজতে মৃত্যুর অভিযোগ এনে হত্যা মামলা দায়ের করেন। এরপর ঘটনা অন্য দিকে মোড় নিতে থাকে। মহানগর পুলিশের তদন্ত কমিটি ঘটনার সত্যতা পেয়ে বন্দর বাজার ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই আকবরসহ চার পুলিশ সদস্যকে সাময়িক বরখাস্ত ও তিনজনকে প্রত্যাহার করেন।
 
মামলাটি পুলিশ সদর দফতরের নির্দেশে পিবিআই তদন্ত কার্যক্রম চালায়। নিহতের মরদেহ কবর থেকে তুলে পুনঃময়নাতদন্ত করা হয়। রায়হানের দেহে ১১১টি আঘাতের চিহ্ন মেলে ফরেনসিক রিপোর্টে।
 
এরইমধ্যে সাময়িক বরখাস্ত হওয়া এসআই আকবর পলাতক থাকলেও পুলিশ হেফাজতে থাকা কনস্টেবল টিটু চন্দ্র দাসকে ২০ অক্টোবর ও হারুনুর রশিদকে ২৪ অক্টোবর গ্রেফতার দেখিয়ে পাঁচদিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়। ২২ অক্টোবর এসএমপি কমিশনার গোলাম কিবরিয়াকে বদলি করা।  

রায়হান নিহত হওয়ার ঘটনায় 'বৃহত্তর আখালিয়া (বারো হামছায়া) সংগ্রাম পরিষদ'র ব্যানারে এলাকাবাসী বিভিন্ন প্রতিবাদ কর্মসূচি নিয়ে মাঠে তৎপর রয়েছেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৭৪০ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৯ ২০২০
এনইউ/এএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।