ঢাকা, শনিবার, ৬ বৈশাখ ১৪৩১, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫

আইন ও আদালত

হুমায়ুন আজাদ হত্যা: ১৬ বছরেও হয়নি বিচার

খাদেমুল ইসলাম, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪৪২ ঘণ্টা, আগস্ট ১২, ২০২০
হুমায়ুন আজাদ হত্যা: ১৬ বছরেও হয়নি বিচার হুমায়ুন আজাদ

ঢাকা: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) বাংলা বিভাগের অধ্যাপক ও লেখক ড. হুমায়ুন আজাদ হত্যার ১৬ বছর পেরিয়ে গেছে। এই দীর্ঘ সময়েও এ ঘটনায় হওয়া দুটি মামলার বিচার কার্যক্রম শেষ হয়নি।

তবে হত্যা মামলার বিচারের শেষ পর্যায়ে রয়েছে। তাই দ্রুতই মামলার বিচার কাজ সম্পন্ন হবে বলে আশা করছে রাষ্ট্রপক্ষ।  

হুমায়ুন আজাদ হত্যায় হওয়া দু’টি মামলা ঢাকার চতুর্থ অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ মাকছুদা পারভীনের আদালতে বিচারাধীন।  

এর মধ্যে হত্যা মামলায় আসামিপক্ষের সাফাই সাক্ষ্যের জন্য ও বিস্ফোরক মামলায় সাক্ষ্যগ্রহণ পর্যায়ে রয়েছে। হত্যা মামলায় আসামিপক্ষ সাফাই সাক্ষী না দিলে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে মামলার রায়ের জন্য দিন ধার্য করা হবে। হত্যা মামলায় ৫৮ সাক্ষীর মধ্যে তদন্ত কর্মকর্তাসহ ৪১ জন সাক্ষ্য দিয়েছেন। আর বিস্ফোরক আইনের মামলায় সাক্ষ্য দিয়েছেন ১০ জন।

এর মধ্যে হত্যা মামলায় আসামিদের বিরুদ্ধে সাক্ষ্যপ্রমাণ যথাযথভাবে প্রমাণ করতে সক্ষম হয়েছে বলে মনে করে রাষ্ট্রপক্ষ।

তাদের আশা, খুব শিগগির মামলাটির রায়ের জন্য দিন ধার্য হবে এবং আসামিদের সবোচ্চ সাজা হবে।  

অমর একুশে বইমেলা থেকে বাসায় ফেরার পথে ২০০৪ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি কমিশনের সামনে সন্ত্রাসী হামলার শিকার হন হুমায়ুন আজাদ। তখন তাকে চাপাতি ও কুড়াল দিয়ে কুপিয়ে গুরুতর জখম করা হয়। ঘটনার পরদিন হুমায়ুন আজাদের ভাই মঞ্জুর কবির রমনা থানায় একটি হত্যাচেষ্টা মামলা দায়ের করেন। তিনি ২২ দিন সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) এবং ৪৮ দিন ব্যাংককে চিকিৎসা নেন। সবশেষ জার্মানির মিউনিখে চিকিৎসাধীন অবস্থায় একই বছরের ১২ আগস্ট তিনি শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন। হুমায়ুন আজাদ মারা যাওয়ার পর ওই মামলাটি হত্যা মামলায় রূপান্তর হয়।

ঘটনার ৮ বছর পর ২০১২ সালের ৩০ এপ্রিল সিআইডির পরিদর্শক লুৎফর রহমান পাঁচজনকে অভিযুক্ত করে হত্যা এবং বিস্ফোরকদ্রব্য আইনের পৃথক দু’টি মামলায় আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন।

ওই মামলার আসামিরা হলেন- জেএমবির শুরা সদস্য মিজানুর রহমান ওরফে মিনহাজ ওরফে শফিক, আনোয়ার আলম ওরফে ভাগ্নে শহিদ, সালেহীন ওরফে সালাহউদ্দিন, হাফিজ মাহমুদ ও নূর মোহাম্মদ ওরফে সাবু। এর মধ্যে মিনহাজ ও আনোয়ার কারাগারে আছেন। তারা দু’জনই ঘটনায় সম্পৃক্ততার বিষয়ে আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। সালাহউদ্দিন ও নূর মোহাম্মদ পলাতক। আর হাফিজ মারা গেছেন।

রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ঢাকার মহানগর আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর আব্দুল্লাহ আবু আশা করছেন হত্যা মামলাটি দ্রুতই বিচার শেষে রায়ের জন্য আসবে।  

তিনি বলেন, হুমায়ুন আজাদ হত্যা মামলায় আসামি পক্ষের সাফাই সাক্ষ্যের জন্য দিন ধার্য রয়েছে। পরবর্তী তারিখে আসামিরা সাফাই সাক্ষী না দিলে যুক্তিতর্ক উপস্থাপনের জন্য দিন ধার্য করা হবে। এরপরই মামলার রায় ঘোষণা হবে।

আসামিদের সর্বোচ্চ সাজা হবে আশা করে তিনি বলেন, আমরা রাষ্ট্রপক্ষে আসামিদের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ প্রমাণ করতে সক্ষম হয়েছি। তাদের সর্বোচ্চ সাজার ব্যাপারে আমরা আশাবাদী।  

আর বিস্ফোরক মামলার বিষয়ে আব্দুল্লাহ আবু বলেন, বিস্ফোরক মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ চলছে। সাক্ষীদের আদালতে আনতে আমরা কাজ করছি।  
 
এদিকে আসামি পক্ষের আইনজীবী ফারুক আহাম্মদ বলেন, হুমায়ুন আজাদ হত্যা মামলাটি আসামিপক্ষের সাফাই সাক্ষ্যর জন্য রয়েছে। করোনার প্রার্দুভাবের কারণে সাফাই সাক্ষ্য হয়নি। এখন আদালত চালু হয়েছে। আসামিপক্ষের সাফাই সাক্ষ্যর পর যুক্তিউপস্থাপনের জন্য দিন ধার্য হবে। আশা করছি, আসামিরা ন্যায়বিচার পাবেন। তবে বিস্ফোরক মামলার বিচারের অগ্রগতি নিয়ে তিনি হতাশ।  

আইনজীবী ফারুক আহাম্মদ বলেন, ওই মামলায় সাক্ষী আদালতে হাজির হয় না। ওই মামলার অগ্রগতি নিয়ে আমরা আশাবাদী হতে পারছি না। রাষ্ট্রপক্ষের উচিত বিস্ফোরক মামলায় সাক্ষীদের হাজির করে দ্রুত মামলার বিচার শেষ করা।  

বাংলাদেশ সময়: ১৪৩৯ ঘণ্টা, আগস্ট ১২, ২০২০
কেআই/এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।