ঢাকা, শুক্রবার, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

আইন ও আদালত

মাস্টারের সিগনাল পেয়েও থামেননি ময়ূর-২ লঞ্চের সুকানি!

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭১৭ ঘণ্টা, জুলাই ১৬, ২০২০
মাস্টারের সিগনাল পেয়েও থামেননি ময়ূর-২ লঞ্চের সুকানি!

ঢাকা: বুড়িগঙ্গায় ‘মর্নিং বার্ড’ লঞ্চডুবির ঘটনায় সুকানি নাসির মৃধার ওপর দায় চাপালেন মাস্টার আবুল বাশার। তার দাবি, তিনি লঞ্চটি থামানোর সিগনাল দিলেও সুকানি নাসির মৃধা পেছন দিকে চলতেই থাকেন। যার ফলে ময়ূর-২ এর ধাক্কায় মর্নিং বার্ড লঞ্চটি ডুবে যায়।

বৃহস্পতিবার (১৬ জুলাই) ঢাকার সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মিশকাত শুকরানার আদালতে ফৌজদারী কার্যবিধির ১৬৪ ধারায় দেওয়া স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে এসব কথা বলেন মাস্টার আবুল বাশার। আদালত সূত্রে এসব তথ্য জানা যায়।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে ঢাকার চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর আনোয়ারুল কবীর বাবুল বাংলানিউজকে বলেন, জিজ্ঞাসাবাদে অনেক তথ্যই আসছে। পুরো তদন্ত প্রক্রিয়া শেষ না হলে বিস্তারিত কিছু বলা যাচ্ছে না।

এর আগে লঞ্চের মাস্টার আবুল বাশারকে গত ১৩ জুলাই জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তিনদিনের রিমান্ডে পাঠান আদালত। সেই রিমান্ড শেষে তদন্ত কর্মকর্তা সদরঘাট নৌ থানা পুলিশের উপ-পরিদর্শক শহিদুল আলম বাশারের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি রেকর্ডের আবেদন করেন। সেই আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বিচারক জবানবন্দি রেকর্ডপূর্বক তাকে কারাগারে পাঠান।

যেই সুকানির ওপর দোষ চাপান ময়ূর-২ এর মাস্টার তাকেও বৃহস্পতিবার তিনদিনের রিমান্ডে পাঠান একই আদালত। সুকানি নাসির বরিশালের বাকেরগঞ্জ উপজেলার ভবানীপুর এলাকার শাহজাহান মৃধার ছেলে।

গত ১৫ জুলাই মামলার প্রধান আসামি ময়ূর-২ লঞ্চের মালিক মোসাদ্দেক হানিফ সোয়াদের জামিন আবেদন নামঞ্জুর করেন আদালত। গত ৯ জুলাই তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ৩ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত। রিমান্ড শেষে গত ১২ জুলাই তাকে কারাগারে পাঠানো হয়েছিল।

এই মামলায় সন্দেহভাজন হিসেবে গ্রেফতার ময়ূর-২ লঞ্চের সুপারভাইজার আব্দুস সালামকে তিনদিনের জন্য রিমান্ড শেষে গত ৯ জুলাই কারাগারে পাঠানো হয়। এছাড়া দুই চালক শিপন হাওলাদার ও শাকিল হোসেনকে ১৫ জুলাই তিন দিন করে রিমান্ডের আদেশ দেন আদালত।

এমএল মর্নিং বার্ড নামের একটি যাত্রীবাহী লঞ্চ গত ২৯ জুন সকালে মুন্সিগঞ্জের কাঠপট্টি থেকে সদরঘাটের দিকে আসছিল। শ্যামবাজারের কাছে বুড়িগঙ্গায় ময়ূর-২ নামের আরেকটি বড় লঞ্চের ধাক্কায় সেটি ডুবে যায়। দুর্ঘটনায় এ পর্যন্ত ৩৪ জনের প্রাণহানির খবর গেছে।

এ ঘটনায় গত ৩০ জুন ময়ূর-২ লঞ্চের মালিক, মাস্টারসহ সাতজনকে আসামি করে কেরানীগঞ্জ দক্ষিণ থানায় নৌ-পুলিশের এসআই শামছুল আলম মামলাটি দায়ের করেন। এতে ময়ূর-২ লঞ্চের মালিক মোসাদ্দেক হানিফ সোয়াদ, মাস্টার আবুল বাশার, মাস্টার জাকির হোসেন, স্টাফ শিপন হাওলাদার, শাকিল হোসেন, হৃদয় ও সুকানি নাসির মৃধার নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতপরিচয় আরও পাঁচ-সাতজনকে সেখানে আসামি করা হয়েছে।

প্রাণহানির ঘটনায় তাদের বিরুদ্ধে দণ্ডবিধির ২৮০, ৩০৪ (ক), ৩৩৭ ও ৩৪ ধারায় অবহেলাজনিত মৃত্যুসহ কয়েকটি অভিযোগ আনা হয়েছে।

এই ঘটনার পর সদরঘাটের একটি সিসি ক্যামেরার ভিডিও পরে সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। ভিডিওটিতে দেখা যায়, পেছনে চলতে থাকা ময়ূর-২ এর ধাক্কায় ছোট আকারের মর্নিং বার্ড মুহূর্তের মধ্যে বুড়িগঙ্গায় ডুবে যায়।

বাংলাদেশ সময়: ১৭১৭ ঘণ্টা, জুলাই ১৬, ২০২০
কেআই/এইচএডি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।