ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

আইন ও আদালত

বুড়িগঙ্গায় পতিত ৬৮ সুয়ারেজ লাইন বন্ধ করার দায়িত্ব ওয়াসার

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯২২ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৩, ২০১৯
বুড়িগঙ্গায় পতিত ৬৮ সুয়ারেজ লাইন বন্ধ করার দায়িত্ব ওয়াসার

ঢাকা: বুড়িগঙ্গায় পতিত হওয়া ৬৮টি সুয়ারেজ লাইন ছাড়া আর কোনো লাইন নদীতে পতিত হলে সেগুলো বন্ধ করে ৭ জানুয়ারির মধ্যে হলফনামা দিতে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষকে (বিআইডব্লিউটিএ) নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।

মঙ্গলবার (৩ ডিসেম্বর) বিচারপতি গোবিন্দ চন্দ্র ঠাকুর ও বিচারপতি মোহাম্মদ উল্লাহ’র হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ।

তবে ওই ৬৮টি সুয়ারেজ লাইন বন্ধ করার দায়িত্ব ঢাকা ওয়াসার।

 আদালতে আবেদনকারী পক্ষে আইনজীবী ছিলেন অ্যাডভোকেট মনজিল মোরসেদ। পরিবেশ অধিদপ্তরের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী আমাতুল করিম। ওয়াসার পক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার এ এম মাছুম। বিআইডব্লিউটিএ’র পক্ষে ছিলেন সৈয়দ মফিজুর রহমান।

পরে মনজিল মোরসেদ বলেন, বিআইডব্লিউটিএ’র প্রতিবেদন অনুসারে বুড়িগঙ্গায় এখন ৬৮টা সুয়ারেজ লাইন পতিত রয়েছে। ওয়াসা এটা দায়িত্বপ্রাপ্ত, তাদেরই এটা বন্ধ করতে হবে। এই ৬৮টি বাদে বুড়িগঙ্গার দুই পাড়ে জরিপ করে যদি সুয়ারেজ লাইন থাকে সেগুলো ৭ জানুয়ারির মধ্যে বন্ধ করে বিআইডব্লিউটিএকে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে। এছাড়া পরিবেশ অধিদপ্তর যে ১৮টি বন্ধ করেছে এর বাইরে অন্য কোনো প্রতিষ্ঠান আছে কিনা সে বিষয়ে সুনির্দিষ্ট করে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে। আর ওয়াসা তাদের দেওয়া হলফনামা প্রত্যাহার করেছেন। নতুন করে রোববারের মধ্যে তারা প্রতিবেদন দেবেন। রোববার সে বিষয়ে আদেশ দেবেন আদালত।

এর আগে ১৭ নভেম্বর এক আদেশে হাইকোর্ট ২৭টি প্রতিষ্ঠান বন্ধের নির্দেশ দিয়েছেন। পরিবেশগত ছাড়পত্র না থাকায় এ প্রতিষ্ঠান বন্ধে পরিবেশ অধিদপ্তরকে ১৫ দিনের মধ্যে এ নির্দেশ বাস্তবায়ন করতে বলা হয়েছে। একইসঙ্গে ওয়াসার এমডিকে শো’কজ করে আদেশের জন্য ২ ডিসেম্বর দিন রাখেন।
 
২ ডিসেম্বর রাজধানীর সদরঘাট থেকে শ্যামপুর পর্যন্ত এলাকায় বুড়িগঙ্গা নদীর তীরের উত্তর পাড়ে গড়ে ওঠা ১৮টি প্রতিষ্ঠানের সেবা (বিদ্যুৎ) সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে বন্ধ করে দিয়েছে বলে হাইকোর্টকে জানায় পরিবেশ অধিদপ্তর।

এদিকে ওয়াসার পক্ষ থেকে লিখিতভাবে হাইকোর্টকে জানানো হয়েছে, বুড়িগঙ্গা নদীতে যে ৬৭টি প্রধান আউটলেট পতিত হয়েছে তার মধ্যে ঢাকা ওয়াসার ১৬টি। আর বিআইডব্লিউটিএ বলছে ৬৮টি।

তবে এর আগে গত ১৮ জুন ওয়াসার দেওয়া এক প্রতিবেদনে বলা হয়, বুড়িগঙ্গায় ওয়াসার কোনো সুয়ারেজ লাইন নেই। ওয়াসার এই দুই ধরনের প্রতিবেদনে ক্ষোভ প্রকাশ করে মঙ্গলবার দিন রাখেন হাইকোর্ট।
মঙ্গলবার ওয়াসা তাদের হলফনামা প্রত্যাহার করে নেন। নতুন করে হলফনামা দিতে রোববার পর‌্যন্ত ওয়াসাকে সময় দেওয়া হয়।

বুড়িগঙ্গার পানি দূষণরোধে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশনা চেয়ে ২০১০ সালে হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশের (এইচআরপিবি) পক্ষে ওই রিট করা হয়েছিল। সে রিটের শুনানি শেষে তিন দফা নির্দেশনা দিয়ে ২০১১ সালের ১ জুন রায় দিয়েছিলেন হাইকোর্ট।

চলতি বছরের শুরুতে এ রায় নিয়ে এইচআরপিবি একটি সম্পূরক আবেদন করেন।

ওই আবেদনের পরে মনজিল মোরসেদ সাংবাদিকদের বলেছিলেন, জনস্বার্থে করা এক রিট মামলায় পরিপ্রেক্ষিতে বুড়িগঙ্গার পানিদূষণ রোধে ২০১১ সালে আদালত অনেকগুলো নির্দেশনা দিয়েছিলেন। বুড়িগঙ্গার ভেতরে যেসব সুয়ারেজ লাইন আছে, ইন্ডাস্ট্রিয়াল লাইন আছে সেগুলো ছয় মাসের মধ্যে বন্ধ করার নির্দেশের পাশাপাশি বুড়িগঙ্গার তীরে যাতে ময়লা আবর্জনা ফেলতে না পারে সে জন্যে সচেতনতামূলক প্রোগ্রাম করার জন্য বলা হয়েছিল রায়ে।  

তিনি আরও জানান, কিন্তু সংশ্লিষ্টরা এই নির্দেশনাগুলো পুরোপুরি পালন না করায় এ সম্পূরক আবেদন করা হয়েছিল।

বাংলাদেশ সময়: ১৪১৮ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০৩, ২০১৯
ইএস/এএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
welcome-ad