ঢাকা, বুধবার, ৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৭ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ শাওয়াল ১৪৪৫

আদালত

বিজিএমইএ ভবন ভাঙার সময় নির্ধারণে রোববার শুনানি

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩৫৪ ঘণ্টা, মার্চ ১১, ২০১৭
বিজিএমইএ ভবন ভাঙার সময় নির্ধারণে রোববার শুনানি ছবি: বিজিএমইএ ভবন

ঢাকা: বাংলাদেশ তৈরি পোশাক প্রস্তুত ও রফতানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) বহুতল ভবন ভাঙতে তিন বছর সময় চেয়ে করা আবেদনের শুনানি হবে রোববার (১২ মার্চ)। এদিন আপিল বিভাগের প্রধান বিচারপতির কোর্টের কার্যতালিকায় মামলাটি শুনানির জন্য ৯ নম্বর ক্রমিকে রয়েছে।

সংশ্লিষ্টদের মতে, রোববারই শুনানি শেষে ভবন ভাঙার সময় নির্ধারণ হতে পারে।

এর আগে ৯ মার্চ তিন বছর সময় চেয়ে করা আবেদন উপস্থাপন করেন বিজিএমইএ’র আইনজীবী কামরুল হক সিদ্দিকী।

পরে আদালত এ আবেদনের শুনানির জন্য ১২ মার্চ দিন ঠিক করে দেন। গত ৫ মার্চ বিজিএমইএ ভবন ভাঙতে কত সময় লাগবে তা ৯ মার্চের মধ্যে আদালতে আবেদন করতে বলেছিলেন আপিল বিভাগ। ওইদিন প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বে তিন সদস্যের বেঞ্চ রিভিউ আবেদন খারিজ করে বিজিএমইএ ভবন ভাঙার রায় বহাল রাখেন।

গত বছরের ৮ নভেম্বর সুপ্রিম কোর্টের ওয়েবসাইটে ৩৫ পৃষ্ঠার রায় প্রকাশিত হওয়ার পর রিভিউ আবেদন করে বিজিএমইএ কর্তৃপক্ষ। এরই ধারাবাহিকতায় গত ২৭ ফেব্রুয়ারি, সোমবার প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগের চার বিচারপতির বেঞ্চ ২ মার্চ এ মামলার শুনানির দিন ধার্য করেন। কিন্তু ২ মার্চ রাষ্ট্রপক্ষের সময় আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বে তিন সদস্যের বেঞ্চ ‘নট টুডে’ (আজকে নয়) আদেশ দেন। ফলে ৫ মার্চ বিষয়টি শুনানির জন্য আসে। শুনানি শেষে গত বছরের ২ জুন হাইকোর্টের দেওয়া বিজিএমইএ ভবন ভাঙার রায়ই বহাল রাখেন প্রধান বিচারপতির বেঞ্চ।

১৯৯৮ সালের ২৮ নভেম্বর তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিজিএমইএ ভবনের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। ভবন নির্মাণ শেষ হলে ২০০৬ সালের ৮ অক্টোবর বিজিএমইএ ভবন উদ্বোধন করেন সে সময়কার প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া। এরপর থেকে ভবনটি বিজিএমইএ’র প্রধান কার্যালয় হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে।

কিন্তু রাজউকের অনুমোদন ছাড়াই কারওয়ান বাজার সংলগ্ন বেগুনবাড়ি খালে বিজিএমইএ ভবন নির্মাণ করা হয়েছে উল্লেখ করে ২০১০ সালের ২ অক্টোবর একটি ইংরেজি দৈনিকে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। ওই দিনই প্রতিবেদনটি আদালতে উপস্থাপন করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ডি এইচ এম মনির উদ্দিন।

পরদিন ৩ অক্টোবর বিজিএমইএ ভবন কেন ভাঙার নির্দেশ দেওয়া হবে না, তার কারণ জানতে চেয়ে হাইকোর্ট স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে (সুয়োমোটো) রুল জারি করেন। এ রুলের ওপর শুনানিতে আদালতকে আইনি সহায়তা দিতে ২০১১ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি সুপ্রিম কোর্টের সাতজন আইনজীবীকে ‘আদালতের বন্ধু’ (অামিকাস কিউরি) নিয়োগ দেওয়া হয়।

ওই সাত আইনজীবী হলেন, বর্তমান অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম, সাবেক অ্যাটর্নি জেনারেল ফিদা এম কামাল, ব্যারিস্টার রোকন উদ্দিন মাহমুদ, আখতার ইমাম, ব্যারিস্টার সারা হোসেন, মনজিল মোরসেদ ও পরিবেশ আইনজীবী সমিতির (বেলা) নির্বাহী পরিচালক সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান।

২০১১ সালের ৩ এপ্রিল বিচারপতি এ এইচ এম শামসুদ্দিন চৌধুরীর নেতৃত্বাধীন হাইকোর্ট বেঞ্চ তার রায়ে বিজিএমইএ ভবন ভেঙে ফেলার নির্দেশ দেন। একই সঙ্গে ভবনটি নির্মাণের আগে ওই স্থানের ভূমি যে অবস্থায় ছিল সে অবস্থায় ফিরিয়ে আনতেও নির্দেশ দেন বিজিএমইএকে।

একই বছরের ৫ এপ্রিল বিজিএমইএ’র আবেদনে সুপ্রিমকোর্টের আপিল বিভাগ হাইকোর্টের রায় ছয় মাসের জন্য স্থগিত করেন। পরবর্তী সময়ে আপিল বিভাগ স্থগিতাদেশের মেয়াদ আরও বাড়ান।

এর দুই বছর পর ২০১৩ সালের ১৯ মার্চ হাইকোর্টের ৬৯ পৃষ্ঠার পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশিত হয়। রায়ে ভবনটি ৯০ দিনের মধ্যে ভেঙে ফেলে ওই জমি জনকল্যাণে ব্যবহারের নির্দেশ দিয়ে বলা হয়, ‘হাতিরঝিল প্রকল্প একটি জনকল্যাণমূলক প্রকল্প’।

আদালত নির্দেশ দেন, বিজিএমইএ যাদের কাছে ওই ভবনের ফ্ল্যাট বা অংশ বিক্রি করেছে তাদের টাকা দাবি পাওয়ার এক বছরের মধ্যে ফেরত দিতে।

হাইকোর্টের রায়ের পূর্ণাঙ্গ অনুলিপির পর লিভ টু আপিল করে বিজিএমইএ কর্তৃপক্ষ। চলতি বছরের ২ জুন তা খারিজ হয়ে যায়। পরে বিজিএমই আবার এ রায় পুনর্বিবেচনার আবেদন করে।

বাংলাদেশ সময়: ১৯৪৬ ঘণ্টা, মার্চ ১১, ২০১৭
ইএস/আইএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।