ঢাকা, সোমবার, ৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ২০ মে ২০২৪, ১১ জিলকদ ১৪৪৫

আইন ও আদালত

অ্যাম্বুলেন্সে শ্যামলীর ধাক্কা, ১০ লাখ টাকা নিতে নির্দেশ

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪৫৮ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৪, ২০২২
অ্যাম্বুলেন্সে শ্যামলীর ধাক্কা, ১০ লাখ টাকা নিতে নির্দেশ

ঢাকা: অ্যাম্বুলেন্সে স্ত্রীর লাশ নিয়ে বাড়ি ফেরার পথে বগুড়ায় একটি বাসের মুখোমুখি সংঘর্ষে নিহত সবজি বিক্রেতা আয়নাল হোসেন ও অ্যাম্বুলেন্স চালক দ্বীন ইসলামের পরিবারের সদস্যদের আপাতত ১০ লাখ টাকা দিতে শ্যামলী এন আর ট্রাভেলসকে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।

আজকের দিনের মধ্যে ৫ লাখ টাকা ও ১৫ দিনের মধ্যে বাকি ৫ লাখ টাকা দিতে বলা হয়েছে।

বুধবার (১৪ ডিসম্বের) বিচারপতি কে এম কামরুল কাদের ও বিচারপতি মোহাম্মদ আলীর হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।

এ আদেশ বাস্তবায়ন করে সুপ্রিম কোর্টের অবকাশকালীন ছুটি শেষে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে। একইসঙ্গে শ্যামলী এন আর ট্রাভেলসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শুভংকর ঘোষ রাকেশকে ব্যক্তিগত হাজিরা থেকে অব্যাহতি দিয়েছেন।

আদালতে শ্যামলী এন আর ট্রাভেলসের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী তাজুল ইসলাম। বিআরটিএর পক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট মুহাম্মদ রাফিউল ইসলাম।

ঢাকার রূপনগরের সবজি বিক্রেতা আয়নাল হোসেনের (৫৫) স্ত্রী ফিরোজা বেগম (৪৫) ঢাকায় হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান। গত ২৫ এপ্রিল অ্যাম্বুলেন্সে স্ত্রীর লাশ নিয়ে আয়নাল হোসেন ঢাকা থেকে গাইবান্ধায় বাড়িতে ফিরছিলেন। পথে বেলা সাড়ে তিনটার দিকে বগুড়ার শেরপুরে ঢাকা-বগুড়া মহাসড়কের ঘোগা সেতুর পাশে অ্যাম্বুলেন্সটিকে চাপা দেয় শ্যামলী পরিবহনের একটি বাস। এতে ঘটনাস্থলেই মারা যান আয়নাল।

পরে অ্যাম্বুলেন্সের চালকও নিহত হন। আয়নাল গাইবান্ধা সদরের ফরিদ উদ্দিনের ছেলে। আর নিহত অ্যাম্বুলেন্সচালক দ্বীন ইসলামের বাড়ি পিরোজপুর জেলার কাউখালী থানায়। এ দুর্ঘটনায় নিহত আয়নাল হোসেনের তিন ছেলে গুরুতর আহত হন।

এ ঘটনায় অ্যাম্বুলেন্সচালক দ্বীন ইসলামের স্ত্রী, সবজি বিক্রেতা আয়নাল হোসেনের মেয়ে, আয়নালের আহত তিন ছেলে, অ্যাম্বুলেন্সচালকের আহত সহকারী ও অ্যাম্বুলেন্স পরিচালনাকারী প্রতিষ্ঠানের পরিচালক গত ৩১ জুলাই ক্ষতিপূরণ চেয়ে হাইকোর্টে রিট করেন। রিটে নিহত অ্যাম্বুলেন্সচালক দ্বীন ইসলামের স্ত্রী ডলি পারভীনকে ৭০ লাখ ৫০ হাজার টাকা, নিহত সবজি বিক্রেতা আয়নালের মেয়ে রোজিনা খাতুনকে ৫০ লাখ ৫০ হাজার টাকা, আয়নালের আহত তিন ছেলে ফরহাদ হোসেনকে ৮ লাখ টাকা, ফিরোজ হোসেনকে ৪ লাখ টাকা ও ফরিদ হোসেনকে ৮ লাখ টাকা, অ্যাম্বুলেন্সচালকের সহকারী দুলফিজুর রহমানকে ৯ লাখ টাকা এবং দুমড়েমুচড়ে যাওয়া অ্যাম্বুলেন্স পরিচালনাকারী প্রতিষ্ঠানের পরিচালক আবদুল আলী বাশারকে ২০ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ দিতে নির্দেশনা চাওয়া হয়। সে রিটের প্রাথমিক শুনানির পর গত ৭ আগস্ট রুলসহ আদেশ দেন আদালত।

এ দুর্ঘটনায় দুর্ঘটনায় নিহত দুজনের পরিবার, আহত চারজন এবং দুমড়েমুচড়ে যাওয়া অ্যাম্বুলেন্স পরিচালনাকারী প্রতিষ্ঠানকে ১ কোটি ৭১ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ দিতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না, তা জানতে চাওয়া হয় রুলে। সেই সঙ্গে এ দুর্ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তির ক্ষতিপূরণ প্রদান সংক্রান্ত ২০১৮ সালের সড়ক পরিবহন আইনের ৫৩ ধারা অনুসারে ‘আর্থিক সহায়তা তহবিল’ গঠনের অগ্রগতি ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যানকে (বিআরটিএ চেয়ারম্যান) জানাতে বলা হয়।

রুল দেওয়ার পর হাইকোর্ট জারিকারকের মাধ্যমে রুলের নোটিশ পাঠান। কিন্তু শ্যামলী কর্তৃপক্ষ নোটিশটি গ্রহণ করতে রাজি না হওয়ায় গত ২৩ নভেম্বর শ্যামলীর ব্যবস্থাপনা পরিচালককে সশরীরে হাজির হতে নির্দেশ দিয়েছিলেন।

সে অনুসারে ৭  ডিসেম্বর হাইকোর্টে হাজির হন শ্যামলী এন আর ট্রাভেলসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শুভঙ্কর ঘোষ রাকেশ। পরে আদালত নিহতদের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ ও আহতদের চিকিৎসা ব্যয় নিরূপণ করে সে টাকা সংশ্লিষ্টদের দিতে উভয়পক্ষের আইনজীবীকে সমঝোতার নির্দেশ দেন।

কিন্তু বুধবার আইনজীবীরা জানান সমঝোতা হয়নি। এরপর হাইকোর্ট ১০ লাখ টাকা দিতে বলেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৪৫৭ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৪, ২০২২
ইএস/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।