ঢাকা, শুক্রবার, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৮ রমজান ১৪৪৫

ইসলাম

সুদানে ইসলামের সোনালি ঐতিহ্য

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০১১৭ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১২, ২০১৮
সুদানে ইসলামের সোনালি ঐতিহ্য সুদানের একটি দর্শনীয় মসজিদ। ছবি : সংগৃহীত

প্রাগৈতিহাসিক যুগ থেকে সুদান মানুষে আবাদ হলেও ইসলামের পরশে ধন্য হয় খেলাফতে রাশেদার সোনালি যুগে। ৩৯ হিজরিতে ইসলামের তৃতীয় খলিফা উসমান (রা.) এর আমলে।

মিশর বিজয়ী প্রসিদ্ধ সাহাবি আমর ইবনুল আস (রা.)-কে এ অঞ্চলের শাসক নিযুক্ত করা হয়। তিনি মিশর থেকে সুদানকেও শাসন করতেন।

আরেক বর্ণনা মতে, ৩১ হিজরিতেই সুদানে ইসলাম প্রবেশ করে।

পরবর্তীতে কালের পরিক্রমায় অনেক আরব মুসলিম পরিবার নীলনদের তীরবর্তী এই সুদানে বসতি স্থাপন করে। চলে দাওয়াত ও তাবলিগের তৎপরতা। ফলে একসময় পুরো অঞ্চলেই আরবিভাষা ও ইসলামি সংস্কৃতি ছড়িয়ে পড়ে। এক পর্যায়ে বিশ্বের অন্যতম মুসলিমপ্রধান দেশের স্থান অধিকার করে সুদান।

বর্তমানে সুদানের মোট জনসংখ্যার ৯৭% ভাগই সুন্নি মুসলমান। মাজহাবের দিক দিয়ে তারা মালিকি মাজহাব অনুসরণ করে থাকে।

১৯৫৬ সালের পহেলা জানুয়ারি সুদান বৃটিশ সাম্রাজ্য থেকে স্বাধীনতা লাভ করে। বর্তমান প্রেসিডেন্ট ওমর আল-বশির। ১৯৮৯ সাল থেকে তিনি এ দায়িত্ব পালন করে আসছেন। প্রজাতন্ত্র হলেও সুদানের মানুষ ইসলামি আইনে বিশ্বাস করে।

বৃটিশ আইন থেকে মুক্ত হতে ১৯৭৪ সালে দেশে ইসলামি আইন বাস্তবায়ন কমিটি গঠন করা হয়। ১৯৮৩ সাল থেকে বেশ কিছু ক্ষেত্রে ইসলামি আইন বাস্তবায়ন আরম্ভ হয়। ওই প্রচেষ্টা তারা এখনও অব্যাহত রেখেছে।

সুদানের ফয়সাল ইসলামী ব্যাংক।  ছবি : সংগৃহীত

সরকারি পৃষ্ঠপোষকতায় সুদানে সর্বোচ্চ ইসলামি প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এক. ইসলামি ফিকহ একাডেমি। দুই. সর্বোচ্চ উলামা পরিষদ। ধর্মীয় কোনো বিষয়ে মতদ্বৈততা দেখা দিলে প্রতিষ্ঠান দু’টির আলেম সদস্যরা ইসলামি আইনের আলোকে নিস্পত্তি করেন।

যিনি ইসলামি ফিকহ একাডেমির প্রধান, তিনিই সুদানের সর্বোচ্চ ইসলামি ব্যক্তিত্ব হিসেবে গণ্য করা হয়। বর্তমানে এ আসনে অধিষ্টিত আছেন প্রফেসর জনাব আবদুর রহিম মুহাম্মদ।

ইসলামি ইতিহাস, ঐতিহ্য ও শিক্ষা ধরে রাখতে সুদানের সর্বত্র রয়েছে ইসলামি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। সরকারি পাঠ্যক্রমেও ইসলামি বিষয় অন্তর্ভূক্ত রয়েছে। সরকারি স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতেও প্রয়োজনীয় ইসলামি বিষয়াদি রয়েছে। ইসলামবিষয়ে উচ্চশিক্ষা লাভের জন্য সুদানের উম্মু দারমান ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় সারা বিশ্বে প্রসিদ্ধ।

সুদানের জাতীয় জাদুঘর ছাড়াও দেশের বিভিন্ন জায়গায় ইসলামের সোনালি ঐতিহ্যের স্মারক রয়েছে। যেমন- মসজিদে বেলাল রা., সুদানের সর্বপ্রাচীন জামে মসজিদ ‘জামে খার্তুম বা জামে আল-আতীক’, মসজিদে ফারূক ইত্যাদি। বর্ণিত আছে, ‘জামে খার্তুম’ মুসলিম তুর্কি খলিফাদের আমলে নির্মিত হয়। নিচের ছবিটা ‘মসজিদে ফারূক’ এর। এ মসজিদটি বৃটিশ আমলে তৈরি।

লেখক, আলেম-গবেষক এবং অনুবাদক, বাংলাদেশ দূতাবাস, রিয়াদ, সৌদি আরব

ইসলাম বিভাগে লেখা পাঠাতে মেইল করুন: [email protected]
বাংলাদেশ সময়: ২০১৬ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১১, ২০১৮
এমএমইউ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।