ঢাকা, সোমবার, ২৮ আশ্বিন ১৪৩১, ১৪ অক্টোবর ২০২৪, ১০ রবিউস সানি ১৪৪৬

ইসলাম

মায়ের অভ্যাসকে শ্রদ্ধা জানাতে...

ইসলাম ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩১৮ ঘণ্টা, অক্টোবর ৮, ২০১৮
মায়ের অভ্যাসকে শ্রদ্ধা জানাতে... ছবি সংগৃহীত

আমেরিকার ওয়াশিংটন ডিসি-তে একটি হালাল রেস্টুরেন্টের মালিক তার মায়ের ঐতিহ্য-অভ্যাস এবং রীতিকে শ্রদ্ধা জানাতে প্রতিদিন বিনামূল্যে গৃহহীনদের খাবার সরবরাহ করেন।

রেস্টুরেন্টের মালিক কাজি মান্নানের মা গৃহহীনদের খাবার দিতেন ও বিভিন্নভাবে সহায়তা করতেন।

হোয়াইট হাউস থেকে সামান্য দূরে অবস্থিত সাকিনা হালাল গ্রিল রেস্টুরেন্টের মালিক কাজি মান্নান বলেন, আমি আল্লাহর কাছে দোয়া করেছিলাম যে, আমি যদি কখনো রেস্টুরেন্টের মালিক হতে পারি তবে আমি প্রথম দিনই গৃহহীনদের সহযোগিতা করার ঘোষণা দেবো।

(খবর এবিসি ১৩ নিউজ নাও-এর। )

কাজি মান্নানের রেস্টুরেন্টের ভেতরে একটি প্ল্যাকার্ডে লেখা আছে, ‘আমাদের রেস্টুরেন্টে বিনামূল্যে খাবার গ্রহণের জন্য আপনি শত শত বার আসতে পারেন। কখনো আমরা আপনাকে বারণ করবো না। সম্মান ও মর্যাদার সঙ্গে বিনামূল্যে খেতে আপনাকে আমরা সবসময় স্বাগত জানাই। ’

কাজি পাকিস্তানের একটি ছোট্ট গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। পরিবারে ১১ জন ভাইবোনসহ দারিদ্র্য পীড়িত অবস্থায় তার বেড়ে ওঠা। তার মা তাদের আল্লাহর কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন এবং দরিদ্রদের সঙ্গে খাবার ভাগ করে নেওয়ার বিষয়টি খুব ভালোভাবে শিক্ষা দিয়েছিলেন।

কাজি আরও বলেন, আল্লাহর কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপনের জন্য মা আমাদের উৎসাহিত করতেন। ইসলামের শিক্ষায় অন্যদের সহযোগিতা করতে উদ্বুদ্ধ করতেন। তার সে শিক্ষা আমি আজও সত্যি উপলব্ধি করি।

রাতের খাবার রান্না করার পর কাজি মান্নানের মা সাকিনা তার সন্তানদের মাধ্যমে প্রতিবেশীদের কাছে কিছু খাবার পাঠাতেন, যদিও নিজেদের জন্য খাবারের পরিমাণ অত্যন্ত সীমিত থাকতো। কাজি মান্নানের কথা মতে একমাত্র আল্লাহর ইবাদত মনে করে তারা প্রতিবেশীর প্রতি এমন আচরণ করতেন।

মাত্র ৩ ডলার এবং মায়ের দোয়া-আশির্বাদ ও শিক্ষা নিয়ে কাজি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে এসেছিলেন। কয়েক বছর কঠোর পরিশ্রমের পর, কাজি একটি রেস্টুরেন্ট খোলার সামর্থ্য লাভ করেন।

ছবি: সংগৃহীতকাজি বলেন, আমি বাসায় যেসব খাবার রান্না করতাম, আমার বন্ধুরা তা খুব পছন্দ করতো। তারা আমাকে উৎসাহ দিয়ে বলতো, তুমি এতো ভাল রান্না করার পরও একটি রেস্টুরেন্ট খুলছো না কেনো?

কাজি আরও বলেন, আমার অনেক বন্ধু বলতো, গৃহহীন মানুষকে তোমার রেস্টুরেন্টের ভেতরে আসতে দেবে না। তারা তোমার ব্যবসাকে ধ্বংস করে দেবে। কিন্তু গৃহহীন ও অসহায়দের জন্য আমার হৃদয়ের ভেতরে মমতা আছে। তাই আমি মানবতা ও আমার হৃদয়ের মমতাকে প্রাধান্য দিয়েছি।

২০১৩ সালে কাজি যখন রেস্টুরেন্ট উদ্বোধন করেছিলেন, তখন প্রথম দিনই তিনি পার্শ্বর্বতী পার্কে গিয়ে ১২ জন গৃহহীনকে তার রেস্তোরাঁয় আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন।

মাত্র পাঁচ বছরের মাথায় তার রেস্টুরেন্টে আমন্ত্রিত গৃহহীনের সংখ্যা ডজন থেকে হাজার হাজারে পরিণত হয়। প্রতি বছর কাজির রেস্টুরেন্টে আনুমানিক ১৬ হাজার গৃহহীন খাবার খেয়ে থাকেন।

ইসলাম বিভাগে লেখা পাঠাতে মেইল করুন: [email protected]
বাংলাদেশ সময়: ০৯১৩ ঘণ্টা, অক্টোবর ০৮, ২০১৮
এমএমইউ/আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।