ঢাকা, সোমবার, ২৯ আশ্বিন ১৪৩১, ১৪ অক্টোবর ২০২৪, ১০ রবিউস সানি ১৪৪৬

ইসলাম

নেদারল্যান্ডে বৃদ্ধাশ্রমে সহযোগিতায় মুসলিমরা

ইসলাম ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০২৫ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৩, ২০১৮
নেদারল্যান্ডে বৃদ্ধাশ্রমে সহযোগিতায় মুসলিমরা

নেদারল্যান্ডের বৃদ্ধাশ্রমগুলোতে একাকিত্ব ও বিষণ্নতা দূর করার ত্রাতার ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছেন দেশটির বেশ কিছু মুসলিম স্বেচ্ছাসেবক। তারা প্রতি সপ্তাহে নিয়ম করে বৃদ্ধাশ্রমে যান। সেখানকার বাসিন্দাদের বিভিন্নভাবে সহযোগিতা করেন। তাদের সঙ্গে মেতে ওঠেন হাসি-আনন্দে। চেষ্টা করেন একাকিত্ব ও নির্জনতার বেদনা দূর করার জন্য।

নেদারল্যান্ডে তুর্কিদের প্রতিষ্ঠিত ‘ওমলেভ’ ও ‘ইসলাম কালার’ সংস্থার অধীনে কাজ করেন এ স্বেচ্ছাসেবকরা। বৃদ্ধাশ্রমের বাসিন্দাদের সহায়তা প্রদানসহ তাদের গুরুত্বপূর্ণ কাজকর্ম ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডেও অংশগ্রহণ করেন তারা।

পশ্চিম নেদারল্যান্ডের লেইডেন শহরে অবস্থিত রুবেনহফ বৃদ্ধাশ্রমের বাসিন্দা রিয়া ভ্যানডার (৯১) বলছিলেন, মুসলিম স্বেচ্ছাসেবকরা আমার কাছে থাকায় আমি খুব খুশি। তারা প্রতি মঙ্গলবার আমাকে দেখার জন্য আসে। আমি তাদের জন্য সারাসপ্তাহ অপেক্ষা করি। তাদের দেখলে আমি আন্দোলিত হই।

ওমালেভের সভাপতি মুস্তাফা গোশ বলেন, এই সংস্থার লক্ষ্য হচ্ছে ইসলামের সৌন্দর্য ও সহনশীলতা এবং মুসলিম সংস্কৃতির রূপ-বৈশিষ্ট্য তুলে ধরা। তাছাড়াও অনেক সময় দেখা যায়, বয়স্ক ডাচ লোকেরা প্রায়ই নিজেদের একা মনে করে। তাই মুসলিম স্বেচ্ছাসেবক সংস্থাগুলো তাদের কাছে যায় এবং তাদের যত্ন নেয়। পাশাপাশি বিভিন্নভাবে তাদের সহযোগিতা করে। ছবি: সংগৃহীতস্বেচ্ছাসেবক সংস্থাটি নেদারল্যান্ডে বিভিন্ন রাজকীয় পুরস্কার জিতেছে । একইসঙ্গে স্থানীয় অনেক মন্ত্রী এবং মেয়রদের প্রশংসাও কুড়িয়েছে।

নেদারল্যান্ডে ইসলামের অগ্রযাত্রা সূচিত হয় উনিশ শতকে। দেশটির বড় শহরগুলোতে মুসলমানদের বসবাস রয়েছে। ১৯৮০ থেকে ১৯৯০ সালের মধ্যে বিভিন্ন দেশ থেকে বহু মুসলমান রাজনৈতিকভাবে নেদারল্যান্ডে আশ্রয় নেয়। ২০১৫ সালে সিরিয়া যুদ্ধ শুরু হলে প্রচুর সংখ্যক সিরীয় নাগরিক নেদারল্যান্ডে শরণার্থী হয়।

নেদারল্যান্ডের তরুণ মুসলিমদের অনেকেই ডাচ মেয়েদের বিয়ে করার ফলে তারা স্থায়ীভাবে ডাচ সমাজের সঙ্গে মেশার সুযোগ পেয়েছেন। তাদের দাওয়াতে প্রচুর ডাচ নাগরিক নৈতিক আদর্শে উদ্বুদ্ধ হয়ে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করছেন।

প্রায় ৫৮০টির মতো মসজিদ রয়েছে নেদারল্যান্ডে। মুসলমানদের সংখ্যা ১৫ লাখের অধিক। সরকারের অনুমোদনক্রমে মুসলমানরা বেশকিছু মাদরাসা, প্রাথমিক ও উচ্চ বিদ্যালয় পরিচালনা করে ‍থাকেন। এসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সরকারি পাঠ্যক্রমের পাশাপাশি ধর্মীয় শিক্ষাও প্রদান করা হয়। রাজনীতিতে মুসলমানরা বেশ সক্রিয়। ১৫০ সদস্যবিশিষ্ট পার্লামেন্টে সবসময় মুসলমানদের প্রতিনিধিত্ব থাকে।

নেদারল্যান্ডের মুসলমানদের শ্রম-নিষ্ঠা একং দাওয়াতে তাবলিগের মেহনত, মসজিদভিত্তিক বিভিন্ন কাজ ও শিক্ষা কারিকুলামে ধর্মীয় বিষয়াদির উপস্থিতি বেশ আশ্চর্যরকম। মুসলিম শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর উচ্চতর পর্যায়ে ইসলাম, ইসলামিক স্টাডিজ, আরবি ভাষা ও সাহিত্যকে বেশ গুরুত্ব দেওয়া হয়। অন্যদিকে রাজধানী আমস্টারডাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ইসলামিক স্টাডিজ অধ্যাপকের পদ চালু রয়েছে। বলা যায়, নেদারল্যান্ডে ইসলামের অগ্রযাত্রা দীর্ঘ থেকে দীর্ঘতর হচ্ছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৬২০ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৩, ২০১৮ 
এমএমইউ/এইচএ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।