ঢাকা, মঙ্গলবার, ৩১ আষাঢ় ১৪৩২, ১৫ জুলাই ২০২৫, ১৯ মহররম ১৪৪৭

ইসলাম

বিয়ে-বিচ্ছেদের পর শরিয়তে সন্তান প্রতিপালনের অধিকার কার

ইসলাম ডেস্ক  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬:৪৬, ডিসেম্বর ২, ২০২৩
বিয়ে-বিচ্ছেদের পর শরিয়তে সন্তান প্রতিপালনের অধিকার কার

পাঠকের প্রশ্ন: কিছু দিন আগে আমার এক বোনকে তার স্বামী তালাক দেয়। বিয়ে-বিচ্ছেদের পর নিয়ম অনুযায়ী আমার বোন তার পূর্ণ ইদ্দত পালন করে।

অন্যদিকে তার জন্য বিয়ের নতুন সম্বন্ধ আসতে শুরু করে। কিন্তু আগের স্বামীর ঘরে তার পনেরো মাস বয়সের একটি মেয়ে রয়েছে।

মেয়েটি এখন আমার বোনের কাছে তাদের বাড়িতেই আছে। বোনের আগের স্বামীর পরিবার বলছে, মেয়ের মায়ের যদি অন্য কোথাও বিয়ে হয়, তাহলে আমার বোনের বা আমাদের বাড়ির কেউ বাচ্চা লালন-পালনের অধিকার ধরে রাখতে পারবে না।

তাদের বক্তব্য অনুযায়ী তারাই (বাবার পরিবার) মেয়ে প্রতিপালনের অধিকার রাখে। এখন আমার জিজ্ঞাসা হলো, শরিয়তের দৃষ্টিতে বাচ্চার প্রতিপালনের বেশি অধিকার কার মায়ের নাকি বাবার আর মায়ের কোথাও বিয়ে হলে বাচ্চা প্রতিপালনের অধিকার হারিয়ে ফেলে তাছাড়া মায়ের পর বাচ্চা প্রতিপালনে বেশি যোগ্য কে এক্ষেত্রে নিয়ম-কানুনগুলো বিস্তারিত জানালে কৃতজ্ঞ হবো।

উত্তর: মা-বাবার বিচ্ছেদ হয়ে গেলে মায়ের শিশু-সন্তান প্রতিপালনের অধিকার রাখে একটা নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত। তবে এই সন্তানের মাহরাম নয় এমন কারো সঙ্গে মায়ের বিয়ে হলে, সন্তান লালন-পালনের অধিকার আর মায়ের থাকবে না। মায়ের পর নানী ও তার অবর্তমানে দাদি পর্যায়ক্রমে এ অধিকার লাভ করবেন।

আবদুল্লাহ ইবনে আমর (রা.) থেকে বর্ণিত, এক নারী নবী (সা.)-কে বললেন, হে আল্লাহর রাসুল! আমার এই ছেলেকে আমি গর্ভে ধারণ করেছি, তাকে স্তনদান করেছি, এখনো আমার কোল-ই তার আশ্রয়; অথচ তার বাবা আমাকে তালাক দিয়েছে। আর এখন চাইছে, তাকে আমার কাছ থেকে ছিনিয়ে নিতে! তখন রাসুল (সা.) তাকে বললেন, যতদিন তুমি বিয়ে না করো ততদিন তুমিই তার বেশি হকদার। (সুনানে আবু দাউদ, হাদিস ২২৭০; নাসবুর রায়াহ ৩২৬৫)

আবদুর রহমান ইবনে আবিজ জিনাদের বর্ণনায় এসেছে, আবু বকর সিদ্দিক (রা.) উমর (রা.)-এর সন্তান আছেম ইবনে উমরের লালন-পালনের ব্যাপারে উমর (রা.)-এর বিপক্ষে ও আছেমের নানীর পক্ষে এই মর্মে রায় দেন যে, ‘আছেম বালেগ হওয়া পর্যন্ত সে তার কাছেই থাকবে। ’ সে সময় উম্মে আছেম জীবিত ছিলেন। অন্যত্র তার বিয়ে হয়েছে। (সুনানে কুবরা, বাইহাকি ৮৫)

এখন আপনার বোনের যদি কোথাও বিয়ে হয় (এমন পুরুষের সঙ্গে যে শিশুটির মাহরাম নয়), তাহলে তিনি আর শিশুটির লালন-পালনের অধিকার রাখেন না। এক্ষেত্রে শিশুটির লালন-পালনের জন্য শরিয়তের পক্ষ থেকে নির্ধারিত অন্যান্য নারীরা অগ্রাধিকার পাবেন।  

সূত্র বাদায়েউস সানায়ে ৩৪৫৬; আল-বাহরুর রায়েক ৪১৬৭; আদ্দুররুল মুখতার ৩৫৬৫; খুলাসাতুল ফাতাওয়া ২৭২; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ৫২৭৩; মুখতারাতুন নাওয়াযিল ২১৮৮)

বাংলাদেশ সময়: ১৬৪৫ ঘণ্টা,ডিসেম্বর ০২,২০২৩
এসআইএস  

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।