ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৭ রমজান ১৪৪৫

সাক্ষাৎকার

কাজিপুরকে শহরে রূপান্তর করতে চান নিজাম

স্বপন চন্দ্র দাস, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৯১০ ঘণ্টা, মার্চ ৫, ২০১৬
কাজিপুরকে শহরে রূপান্তর করতে চান নিজাম ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

সিরাজগঞ্জ: যমুনা নদীর তীর ঘেঁষা কাজিপুর পৌরসভা প্রতিষ্ঠিত হয় ২০০০ সালে। নদী ভাঙন উপজেলার বিভিন্ন অঞ্চলে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে বিভিন্ন অফিস।

এ কারণে নির্দিষ্ট কোন শহর গড়ে ওঠেনি কাজিপুরে।

তারপরও প্রায় ১৫ বছর ধরে প্রতিষ্ঠিত এ পৌরসভাটির কার্যক্রম নিজ গতিতেই এগিয়ে চলেছে। ইতিমধ্যে “গ” শ্রেণী থেকে “খ” শ্রেণীতে উন্নীত হওয়ায় কাঙ্খিত উন্নয়নে আশাবাদী পৌরবাসী।

সম্প্রতি মেয়র হিসেবে দায়িত্ব বুঝে নেওয়ার পর পৌরবাসীর স্বপ্ন পূরণের প্রতিশ্রুতি দিলেন হাজী নিজাম উদ্দিন।

কাগজে-কলমে নয়, কাজিপুরকে প্রকৃত শহরে রুপান্তর করার দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করে তিনি জানান, নাগরিকরা যাতে সহজেই সেবা পায় সে লক্ষ্যে কাজ করে যাবেন।  

নব নির্বাচিত মেয়রকে দায়িত্ব হস্তান্তর করেন সদ্য বিদায়ী মেয়র আব্দুস সালাম। এ সময় সচিব রফিকুল ইসলামসহ কাউন্সিলরবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

দায়িত্ব নেওয়ার পর পৌরসভার নিজ কার্যালয়ে বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কমকে দেওয়া একান্ত সাক্ষাতকারে মেয়র নিজাম বলেন, নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র কেনাকাটার জন্য কাজিপুরে কোনো ভাল মার্কেট নেই। ফলে এ অঞ্চলের অধিবাসীদের কেনাকাটা করতে সিরাজগঞ্জ, ধুনট, শেরপুর কিংবা বগুড়ায় যেতে হয়।

পৌরবাসীর সুবিধার্থে পৌরসভার উদ্যোগে আধুনিক পৌর মার্কেট নির্মাণ করার অঙ্গীকার করে তিনি বলেন, একটি বড় বাজার স্থাপন, পৌর বাস টার্মিনাল নির্মাণ, রাস্তাঘাট, ব্রিজ-কালভার্ট তৈরি করা হবে। এতে পৌরবাসীকে আর সিরাজগঞ্জ-বগুড়ার দিকে যেতে  হবে না। এভাবেই গ্রামের এ পৌরসভাটি শহরে রুপান্তরিত হবে।

এছাড়াও চিকিৎসা ও বিদ্যুৎ সেবা নিশ্চিত করতেও প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করবো। পর্যায়ক্রমে এ পৌরসভাকে “খ” শ্রেণী থেকে “ক” শ্রেণীভুক্ত করার জন্য প্রাণপণ চেষ্টা চালিয়ে যাবো।

বর্তমান সরকারের নীতি নির্ধারকদের একজন স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিমের নির্বাচনী এলাকা হওয়ায় দ্রুতগতিতে এ পৌরসভার উন্নয়ন হবে বলেই মনে করি।   

আওয়ামী পরিবারের সন্তান নিজাম উদ্দিন ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিচারণ করে বলেন, ওই সময় আমার বয়স ছিল ৮/১০ বছর। কাজিপুরের বেরীপোটল গ্রামে আমাদের বাড়িতে মুক্তিযোদ্ধারা ক্যাম্প করেছিলেন। সিরাজগঞ্জ ও বগুড়া জেলার মুক্তিযোদ্ধারা এ ক্যাম্প থেকেই যুদ্ধ পরিচালনা করতেন। আমার বাবা মরহুম শুকুর আলী ছিলেন কাজিপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য।

বাবার অনুপ্রেরণা ও জাতীয় নেতা শহীদ এম মনসুর আলীর সান্নিধ্য পাওয়ায় তখন থেকেই আওয়ামী লীগের আদর্শের প্রতি আনুগত্য প্রদর্শন করি। তবে দীর্ঘ সময় ব্যবসা নিয়ে ব্যস্ত থাকায় দলীয় কোনো পদ-পদবী পাইনি। ২০১৩ সালে কাজিপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলনে আমাকে সহ সভাপতির দায়িত্ব দেওয়া হয়।

৩০ ডিসেম্বর নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়নে নৌকা প্রতীক নিয়ে নির্বাচিত এ মেয়র বলেন, কাজিপুর আওয়ামী লীগের ঘাঁটি। এখানে নৌকা প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করার অনুভূতি অন্যরকম।

দলীয় মনোনয়ন দেওয়ায় তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিমের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বলেন, দল আমাকে যে সম্মান দিয়েছে তা রাখতে আমি প্রাণপণ চেষ্টা করে যাবো।

সামাজিক কার্যক্রম প্রসঙ্গে সদ্য দায়িত্ব নেওয়া এ মেয়র বলেন, বেরীপোটল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি, আঞ্জুমান মফিদুল ইসলাম জেলা শাখার কার্যকরী সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করছি। এছাড়াও নিজ গ্রাম বেরীপোটল হাফিজিয়া মাদ্রাসা ও এতিমখানার পৃষ্ঠপোষক হিসেবেও দীর্ঘদিন ধরে কাজ করছি।  

প্রথম শ্রেণীর ঠিকাদার হিসেবে তিনি সড়ক ও জনপথ বিভাগ, পানি উন্নয়ন বোর্ড, স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর ও গণপূর্ত অধিদপ্তরের বিভিন্ন কনস্ট্রাকশনের কাজ করে ইতোমধ্যে নিজেকে একজন সফল ব্যবসায়ী হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছেন বলে দাবি করেন তিনি।

পারিবারিক জীবনে এক ছেলে ও এক মেয়ের জনক মেয়র নিজাম কাজিপুরবাসীর সহযোগিতা ও ভালবাসা নিয়ে সামনের দিকে এগিয়ে যেতে চান।

বাংলাদেশ সময়: ০৯১৩ ঘণ্টা, মার্চ ০৫, ২০১৬
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।