ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

আন্তর্জাতিক

তৃণমূলের ৩৮ জন বিধায়ক বিজেপির সঙ্গে যোগাযোগ রেখে চলেছে: মিঠুন

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০২২০ ঘণ্টা, জুলাই ২৮, ২০২২
তৃণমূলের ৩৮ জন বিধায়ক বিজেপির সঙ্গে যোগাযোগ রেখে চলেছে: মিঠুন

কলকাতা: পশ্চিমবঙ্গের সাবেক শিক্ষামন্ত্রী তথা বর্তমান শিল্পমন্ত্রী গ্রেফতারির পর শাসক দলের বিরুদ্ধে ক্রমশ সুর চড়াচ্ছে বিজেপি। সেই আবহেই এবার বিস্ফোরক দাবি করলেন অভিনেতা বিজেপি নেতা মিঠুন চক্রবর্তী।

বুধবার (২৭ জুলাই) কলকাতায় এসেছেন মিঠুন। কলকাতার হেস্টিংসের বিজেপির কার্যালয় থেকে এদিন সাংবাদিক বৈঠক করেন তিনি। তিনি জানান, তৃণমূল কংগ্রেসের ৩৮ জন বিধায়ক বিজেপির সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রেখে চলেছে।

সাংবাদিকদের অভিনেতা বলেন, আপনাদের একটি ব্রেকিং নিউজ দিই। এই মুহূর্তে ৩৮ জন তৃণমূল বিধায়ক আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে চলছেন। তারমধ্যে ২১ জন ডিরেক্টলি আমার সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন। কোনদিন সকালে দেখবেন সরকারটা (পশ্চিমবঙ্গের শাসক দল) পরে গেছে।

অপরদিকে বুধবারই একটি অনুষ্ঠানে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দাবি করেছেন, ২০২৪-এ কোনওভাবেই বিজেপি কেন্দ্রে ক্ষমতায় আসবে না। এ ব্যাপারে তিনি আত্মবিশ্বাসী বলে দাবি করেছেন। তবে তিনি জানিয়েছেন, কী অঙ্ক, কী পরিসংখ্যান, সেই হিসেব তার জানা নেই। শুধু এটুকু জানেন বিজেপি ক্ষমতায় আসবে না।

এ প্রসঙ্গে মিঠুন চক্রবর্তীকে প্রশ্ন করা হলে তিনি  বলেন, একটা ব্রেকিং নিউজ দিচ্ছি। শাসকদলের ৩৮ জন বিধায়ক বিজেপির সঙ্গে ভালো সম্পর্কে আছে। তার মধ্যে ২১ জন আমার সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ রেখেছেন। তাই ২০২৪ নিয়ে মমতা এমন দাবির কোনো মানে নেই।

প্রসঙ্গত, কিছুদিন আগেই মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী উদ্ধব ঠাকরেকে সরিয়ে শিবসেনার বিদ্রোহী গোষ্ঠী বিজেপির সঙ্গে হাত মিলিয়ে সরকার গঠন করেছে। এরপর পশ্চিমবঙ্গের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীকে একাধিকবার বলতে শোনা গিয়েছে, কে বলতে পারবে মহারাষ্ট্রের মতো সরকার ভাঙনের হাওয়া অন্য রাজ্যে প্রবেশ করবে না। মহারাষ্ট্র থেকে ঝাড়খণ্ড হয়ে সেই হাওয়া বাংলায় প্রবেশ করতেই পারে!

এর সঙ্গে শুভেন্দুর হুঙ্কার ২০২৬ সাল অবদি সময় লাগবে না, ২০২৪ সালে তৃণমূল সরকারের পতন ঘটবে বলেও একাধিকবার মন্তব্য করেছেন তিনি।

শুভেন্দুর এই মন্তব্যকে পশ্চিমবঙ্গের শাসকদল গুরুত্ব দিতে না চাইলেও ২১ জুলাই শহিদ সভায় প্রসঙ্গটি তোলেন স্বয়ং দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি অভিযোগ করেন, বাংলায় সরকার ফেলার চক্রান্ত করছে বিজেপি। তারপরই তার হুঁশিয়ারি, 'বাংলা ক্রস কোরো না। এখানে যে রয়্যাল বেঙ্গল টাইগার আছে না। '

রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, বর্তমান পরিস্থিতি তৃণমূলের জন্য খুবই উদ্বেগজনক। আগেও দেখা গিয়েছে দল ভেঙে তাবড় তাবড় তৃণমূল নেতা বিজেপিতে গিয়েছিল। সেই ঘটনাপ্রবাহে মিঠুনের এই মন্তব্য যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ।

২০২৪ সালে ভারতের লোকসভা নির্বাচন। যেই নির্বাচনের দিকে তাকিয়ে আছে গোটা বিশ্ব। কারণ বিশ্বের বৃহত্তম গণতান্ত্রিক দেশ হিসেবে ভারত যথেষ্ট তাৎপর্য রাখে। সেই নির্বাচনে বিজেপির জয় মানে নরেন্দ্র মোদি তৃতীয়বার প্রধানমন্ত্রী।

অপরদিকে মমতার নেতৃত্বে বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো চাইছে তারা একত্রিত হয়ে বিজেপিকে পরাস্ত করতে। কিন্তু এখানেই হালে পানি পাচ্ছেন না বিরোধীরা। নানা কারণেই বারেবারে ভেঙে যাচ্ছে তাদের ঐক্য। যা ২০১৯ সালের নির্বাচনেও দেখা গিয়েছিল।

এরই মধ্যে পশ্চিমবঙ্গের শাসকদলের দুর্নীতি প্রকাশ্যে আসছে। যদিও আইন অনুযায়ী এখনো তা প্রমাণিত নয়। তারমধ্যে কলকাতায় এসে মিঠুন চক্রবর্তীর এই বক্তব্য যথেষ্ট তাৎপর্য রয়েছে বলেই মনে করছেন পশ্চিমবঙ্গের রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা।

বাংলাদেশ সময়: ০২২০ ঘণ্টা, জুলাই ২৮, ২০২২
ভিএস/এনএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

আন্তর্জাতিক এর সর্বশেষ