ঢাকা, শনিবার, ২০ বৈশাখ ১৪৩১, ০৪ মে ২০২৪, ২৪ শাওয়াল ১৪৪৫

আন্তর্জাতিক

১৬ বছর পর স্বামী জানলেন সন্তানদের বাবা তিনি নন, স্ত্রীকে তালাক

আন্তর্জাতিক ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪০৩ ঘণ্টা, জুন ৯, ২০২২
১৬ বছর পর স্বামী জানলেন সন্তানদের বাবা তিনি নন, স্ত্রীকে তালাক সংগৃহীত

চীনের জিয়াংসি প্রদেশের বাসিন্দা ৪৫ বছর বয়সী চেন নামে এক ব্যক্তি বিয়ের ১৬ বছর পরে জানতে পেরেছেন তার তিন সন্তানের বাবা তিনি নন। সেই সন্তানগুলো অন্য কোনো পুরুষের।

এরপর তিনি প্রতারণা করার অভিযোগে স্ত্রীকে তালাক দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।

চীনা সংবাদমাধ্যম সাউথ চায়না মর্নিং পোস্ট  বৃহস্পতিবার (৯ জুন)  এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে।  

খবরে বলা হয়েছে, পেশাগত কাজের জন্য বাড়ির বাইরে থাকতে হতো চেনকে। তবে নিজের পরিবার ও বাড়ি থেকে দূরে থাকলেও ফোনের মাধ্যমে স্ত্রীর সঙ্গে যোগাযোগ রাখতেন তিনি। এরমধ্যে তাদের তিন কন্যা সন্তান হয়।  

এর মধ্যে একদিন চেন আবিষ্কার করেন তার স্ত্রী পরকীয়ায় লিপ্ত। তারপরও তিনি তাকে ক্ষমা করে দেন। কিন্তু সম্প্রতি এক মেডিকেল পরীক্ষায় দেখা গেছে, এতদিন তিনি যাদের সন্তান হিসেবে মানুষ করেছেন, তারা আসলে তার বায়োলজিক্যাল সন্তান নন। বরং তাদের বাবা অন্য কোনো পুরুষ। এরপরই চেন তার স্ত্রীকে তালাক দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।  

চায়না জিয়াংজি রেডিও এবং টিভি স্টেশন বুধবার (০৮ জুন) জানিয়েছে, চলতি বছরের শুরু থেকে চেনের ফোন রিসিভ না করাসহ তাকে এড়িয়ে চলতে শুরু করেন তার স্ত্রী ইউ। এমনকি তিনি বাড়ি থেকে দূরে কাজ করতে চান বলেও চেনকে জানান স্ত্রী। এরপরই ইউয়ের বিষয়ে চেনের মনে সন্দেহ দানা বাঁধতে থাকে। পরে ইউয়ের মোবাইল ফোনের জিপিএস ট্র্যাকিং করেন চেন এবং মার্চের এক তারিখে তার স্ত্রীকে চীনের পূর্বাঞ্চলে একটি হোটেলে অবস্থান করছেন বলে শনাক্ত করেন। পরের দিন সকালে চেন তার স্ত্রীকে হোটেল থেকে এক ব্যক্তির সাথে চেক আউট করতে দেখেন। ওই ব্যক্তির সঙ্গে ইউয়ের সম্পর্ক রয়েছে বলে নিশ্চিত হন চেন।

এই ঘটনার পর চেন প্রাথমিকভাবে ইউকে ক্ষমা করলেও একটি মেডিকেল পরীক্ষা করেন। আর এতেই বের হয় তাদের কনিষ্ঠ কন্যা অন্য পুরুষের মাধ্যমে জন্মগ্রহণ করেছে। এরপরও পরিবারকে একসাথে রাখতে দাম্পত্যজীবন চালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন চেন। তবে এরপর করা পৃথক পিতৃত্ব পরীক্ষায় জানা যায়, দম্পতির অন্য দু’টি কন্যাও চেনের জৈবিক সন্তান নয়। আর এরপরই স্ত্রীর সঙ্গে বিচ্ছেদের সিদ্ধান্ত নেন তিনি।

অবশ্য পিতৃত্ব পরীক্ষায় আসল সত্য বের হয়ে আসার পর পালিয়ে যান ইউ এবং চেন এখনও তার স্ত্রীর সন্ধান পাননি। এরপরই তিনি স্থানীয় সংবাদমাধ্যমের সাহায্য নেন এবং চায়না জিয়াংজি রেডিও এবং টিভি স্টেশনকে সাক্ষাৎকার দেওয়ার সময় হাতে মাথা রেখে চেনকে কাঁদতে দেখা যায়।

অবশ্য স্ত্রী ইউকে সংবাদমাধ্যম খুঁজে বের করে এবং সাক্ষাৎকার নেয়। সেখানে অভিযুক্ত ওই স্ত্রী অনুতপ্ত বলে জানালেও তিনি বিশ্বাসঘাতকতা করেননি বলেই দাবি করেন। ফোনে সাক্ষাৎকার দেওয়ার সময় ইউ বলেন, আমি মনে করি না যে আমি তার সাথে প্রতারণা করেছি। জৈবিক পিতৃত্ব কি সত্যিই গুরুত্বপূর্ণ?

বিবাহবিচ্ছেদ চাওয়ার ইস্যুতে স্বামী চেনের সমালোচনাও করেন ইউ। তিনি বলেন, ‘অনুগ্রহ করে আমার প্রতি সহানুভূতি দেখানোর চেষ্টা করুন। আমাদের তিন সন্তান তাকে বহু বছর ধরে ‘বাবা’ বলে ডাকলেও এখন তিনি বলছেন মেয়েরা তার নিজের নয়। তার আর পশুর মধ্যে পার্থক্য কি?

বাংলাদেশ সময়: ১৩২০ ঘণ্টা, জুন ০৯,২০২২
ইআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।