ঢাকা, শনিবার, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫

আন্তর্জাতিক

জেলে যেতে ব্যাংক ডাকাতি

আন্তর্জাতিক ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫৫৮ ঘণ্টা, মার্চ ২৪, ২০২২
জেলে যেতে ব্যাংক ডাকাতি

প্রায় ১৭ বছর একটি বেসরকারি কোল্ড ড্রিংকস সংস্থার ডেলিভারি বয় ছিলেন। একদিন কাজ হারান।

এরপর চোখে ‘অন্ধকার’ দেখতে শুরু করেন তিনি।

এ সময় দিন দিন শারীরিক অবস্থার অবনতি হচ্ছিল তার। উত্তরোত্তর বাড়ছিল বাতের ব্যথা এবং স্লিপ ডিস্ক। সমস্যা দেখা দেয় পায়েও। বুকেও ব্যথা শুরু হয়েছিল।

যুক্তরাষ্ট্রের উত্তর ক্যারোলিনার গ্যাস্টোনিয়ার বাসিন্দা জেমস ভেরন (৫৯) জীবনের ঠিক এই সময় ব্যাংক ডাকাতির সিদ্ধান্ত নেন। ২০১১ সালের ৯ জুন নিজের বাড়ি থেকে বেরিয়ে গাড়িতে চেপে কাছের একটি ব্যাংকে যান জেমস।

সাধারণত ব্যাংক ডাকাতির ঘটনা মানেই যেন কোটি টাকা লুট। কখনো ডাকাতের দল বা কখনো একা কোনো ব্যক্তি ব্যাংকের লাখ লাখ টাকা লুট করে নিয়ে পালায়। এ সময় ডাকাতদের আটকাতে গেলে হুমকির মুখে পড়েন ব্যাংক কর্মীরা। কখনো প্রাণনাশের ভয়ও দেখানো হয়। কারণ বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই সশস্ত্র হয়ে ঢোকে দুষ্কৃতীরা।

তবে জেমস ডাকাতি করেছিলেন মাত্র এক ডলারের জন্য। শুধু তাই নয়, ডাকাতির পর সেই ব্যাংকে বসে পুলিশ আসার অপেক্ষা করেছেন তিনি।

জানা গেছে, সেদিন ব্যাংকে ঢুকেই একটি চিরকুট ম্যানেজারের হাতে ধরিয়ে দেন জেমস। সেই চিরকুটে লেখা ছিল, ‘আমি ব্যাংক ডাকাতি করতে এসেছি। আমাকে শুধু এক ডলার দিন। ’

ওই এক ডলার নিয়ে ব্যাংকের এক কর্মীকে তিনি বলেন, আমি এই কোণে চুপচাপ বসে থাকব। পুলিশ আসা পর্যন্ত অপেক্ষা করবো।

এদিকে ডাকাতির আগে স্থানীয় সংবাদমাধ্যমকে একটি চিঠিও দিয়ে আসেন তিনি। তাতে লেখেন, ‘আপনারা যখন এই চিঠি পাবেন, ততক্ষণে আমার ব্যাংক ডাকাতি হয়ে যাবে। তবে মাত্র এক ডলারের জন্য আমি এই ডাকাতি করতে যাচ্ছি। আমার মানসিক স্থিতি ঠিক আছে, কিন্তু শারীরিক অবস্থা ঠিক নেই। ’

এরপরে পুলিশ এসে তাকে ধরে নিয়ে যায়। জেমসকে আদালতে হাজির করা হয়। তবে বিচারক ঘটনাটি ডাকাতি বলে মানতে রাজি হননি। অন্য ব্যক্তির কাছ থেকে এক ডলার চুরির অপরাধে তাকে জেলে পাঠানোর নির্দেশ দেন বিচারক।

সে সময় সবার মনেই একটাই প্রশ্ন ছিল। কেন শুধু এক ডলারের জন্য ডাকাতি করতে গিয়েছিলেন জেমস? তখন সদ্য অর্থনৈতিক মন্দার মুখ থেকে উঠে আসা যুক্তরাষ্ট্রে এক ডলারে তার কোনো চিকিত্সা হত না। তা হলে ব্যাংক ডাকাতি করতে কেন গিয়েছিলেন তিনি?

জেমসের কাছে এই প্রশ্নের উত্তর পেয়েছিলেন স্থানীয় এক সাংবাদিক। তিনি জানান, জেমসের প্রধান লক্ষ্য ডাকাতি ছিল না। শুধুমাত্র জেল খাটার জন্যই তিনি এই কাণ্ড ঘটান।

যুক্তরাষ্ট্রের আইন অনুযায়ী কোনো কয়েদি যদি অসুস্থ হন, তা হলে তার সমস্ত চিকিত্সার খরচ জেল কর্তৃপক্ষের। তাই চিকিত্সার খরচ জোগাতে জেমস নিজেই জেল খাটার সিদ্ধান্ত নেন। আর সেই উদ্দেশ্য সফলও হয়।

সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান, এবিপি

বাংলাদেশ সময়: ১৫৫৮ ঘণ্টা, মার্চ ২৪, ২০২২
এনএসআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।