ঢাকা, বুধবার, ৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৭ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ শাওয়াল ১৪৪৫

আন্তর্জাতিক

দক্ষিণ চীন সাগরে আরেক মিত্র হারাতে যাচ্ছে চীন

আন্তর্জাতিক ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬৩৫ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১০, ২০২০
দক্ষিণ চীন সাগরে আরেক মিত্র হারাতে যাচ্ছে চীন ছবি: সংগৃহীত

দক্ষিণ চীন সাগরে চীনের সবচেয়ে শক্তিশালী মিত্র থাইল্যান্ড চুপিসারে কিন্তু দৃঢ়ভাবে বেইজিং থেকে দূরে সরে যাচ্ছে। চীন থেকে দু’টি সাবমেরিন নেওয়ার পরিকল্পনা স্থগিত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে থাইল্যান্ড।

সেই সঙ্গে বঙ্গোপসাগরে চীনের একটি খাল খননের প্রস্তাবের পরিবর্তে নিজস্ব একটি প্রকল্পের কাজ শুরু করেছে দেশটি।

চীন থেকে দু’টি সাবমেরিন ৭২৪ মিলিয়ন মার্কিন ডলার দিয়ে কেনার বিষয়ে জনগণের ক্ষোভের পর থাইল্যান্ড এখন এ চুক্তি পেছাতে যাচ্ছে। ২০১৫ সালের চুক্তির আওতায়, থাইল্যান্ড চীনা নৌ-যন্ত্রাংশ কিনছে। ২০১৭ সালে তিনটি সাবমেরিন কেনার বিষয় চূড়ান্ত করে দেশটি, যার প্রথমটি ২০২৩ সালে সরবরাহ করা হবে বলে আশা করা হচ্ছে।

এদিকে, ৭২৩ দশমিক ৯ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের আরও দু’টি সাবমেরিনের জন্য একটি আদেশ এ মাসে সংসদীয় কমিটি অনুমোদন দিয়েছে থাইল্যান্ডের অর্থনীতি ক্রমশ নিম্নমুখী হওয়ায় জনগণ এ সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে ক্ষোভ জানায়।

থাই সরকারের এক মুখপাত্র অনুচা বুরাপাচাইশ্রী বলেন, ‘এটি আরও এক বছর পেছাতে নৌবাহিনী চীনের সঙ্গে আলোচনা করবে। প্রধানমন্ত্রী অর্থনীতি নিয়ে উদ্বিগ্ন জনগণের চিন্তাকে প্রাধান্য দিয়েছেন। ’

অপরদিকে, ইউরোএশিয়ান টাইমসের এক প্রতিবেদন অনুযায়ী, ‘ক্রা ক্যানাল’ এর মাধ্যমে চীন ‘মালাক্কা সমস্যা’র সমাধান করতে চেয়েছে। ১২০ কিলোমিটার দীর্ঘ থাই খাল চীনের ‘মেরিটাইম সিল্ক রোড’ ইনিশিয়েটিভের অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ, যা উচ্চাভিলাষী ‘ওয়ান বেল্ট ওয়ান রোড’ প্রকল্পের মূল অংশ।

মালাক্কা জলপ্রণালী ব্যস্ততম জলপথগুলোর একটি। প্রতি বছর বিশ্বের সমুদ্র বাণিজ্যের প্রায় ৩০ শতাংশ পণ্য বহন করে এর মধ্য দিয়ে চলে যায় ৮৪ হাজার জাহাজ। প্রশান্ত মহাসাগরকে ভারত মহাসাগরের সঙ্গে যুক্ত করে এ জলপ্রণালী। ‘ক্রা ক্যানাল’ বা থাই খাল খননের মাধ্যমে স্বল্প সময়ে ও দূরত্বে মালাক্কা জলপ্রণালী পাড়ি দিতে পারবে চীন।

আসল উদ্বেগ হলো, এটি (থাই খাল) মিয়ানমার এবং কম্বোডিয়ার মতো দরিদ্র দক্ষিণ-পূর্ব এশীয় দেশগুলোর স্বাধীনতা আরও ক্ষুণ্ন করবে, তুলনামূলক ভাবে দুর্বল নাগরিক সমাজ হওয়ায় সেগুলো চীনের হস্তক্ষেপের ঝুঁকিতে রয়েছে। এটি থাইল্যান্ডকেও ঝুঁকির মধ্যে ফেলেছে।

খাল খননের বদলে স্থল সেতু নির্মাণ করার পরিকল্পনা করছে থাইল্যান্ড।  নিজস্ব প্রকল্পের মাধ্যমে এ প্রকল্পটি প্রতিস্থাপনের পদক্ষেপ নেওয়ায় স্বস্তিতে নয়াদিল্লি। গভীর সমুদ্রে চীনের ব্যাপ্তি বাড়তে থাকায় শঙ্কায় ছিল ভারত। তাই ভারত মহাসাগরে চীনা উপস্থিতি বাড়তে থাকায় সেসব অঞ্চলে সামরিক শক্তি বাড়াতে কাজ করছে দেশটি।

চীনের ব্যাপ্তি কমাতে যুক্তরাষ্ট্র ও ভারত যে প্রচেষ্টা চালাচ্ছে, থাইল্যান্ডের সিদ্ধান্ত এর পক্ষে কাজ করেছে। দক্ষিণ চীন সাগরে মিত্র না থাকলে ভূরাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে কী সিদ্ধান্ত নেয় চীন, সেটিই এখন দেখার বিষয়।

বাংলাদেশ সময়: ১৬৩৫ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১০, ২০২০
এফএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।