ঢাকা, রবিবার, ২৭ আশ্বিন ১৪৩১, ১৩ অক্টোবর ২০২৪, ০৯ রবিউস সানি ১৪৪৬

আন্তর্জাতিক

‘রাজপুত্র ভ্লাদিমির’: সবচে শক্তিশালী সাবমেরিন রাশিয়ার!

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১৫৭ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৫, ২০১৭
‘রাজপুত্র ভ্লাদিমির’: সবচে শক্তিশালী সাবমেরিন রাশিয়ার! সমুদ্রে পরীক্ষামূলকভাবে নামানো হয়েছে রুশ নৌবাহিনীর নতুন প্রজন্মের পরমাণু ক্ষেপণাস্ত্রবাহী সাবমেরিন 'কিনিয়াজ ভ্লাদিমির'

নতুন প্রজন্মের বিপুল ধ্বংসাত্মক এক সাবমেরিন তৈরি করেছে ভ্লাদিমির পুতিনের রাশিয়া। পরমাণু ক্ষেপণাস্ত্রবাহী এই অত্যাধুনিক সাবমেরিন ছয় হাজার মাইল দূর থেকে শত্রুরাষ্ট্রের যেকোনো সুরম্য শহরকে চোখের নিমেষে ধ্বংসস্তূপে পরিণত করবে।

শুধু তাই নয়, এ ধরনের একটি সাবমেরিন একসঙ্গে সর্বোচ্চ ২০টি দূরপাল্লার পারমাণবিক ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করতে পারবে। এটি ডুব দিতে পারবে সমুদ্রের চারশো মিটার পর্যন্ত গভীরে।

এতো বেশি গভীরতায় শত্রু রাডারের পক্ষে সাবমেরিনটিকে শনাক্ত করাও প্রায় অসম্ভব ব্যাপার। অর্থাৎ বোরেই গোত্রের (BOREY CLASS) এই সাবমেরিন রাডার ফাঁকি দিতে সক্ষম।

নতুন ও সর্বাধুনিক গোত্রের এই পারমাণবিক সাবমেরিনের নাম ‘কিনিয়াজ ভ্লাদিমির’। বাংলা করলে দাঁড়ায়, ‘রাজপুত্র ভ্লাদিমির’। সব মিলিয়ে ৯৬টি থেকে ২০০টি পারমাণবিক ক্ষেপণাস্ত্র বহন ও নিক্ষেপ করতে পারবে প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের দেশ রাশিয়ার এ নতুন ডুবোজাহাজ। এসব ক্ষেপণাস্ত্রের প্রতিটি দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধকালে জাপানের হিরোশিমায় আঘাত হানা মার্কিন আণবিক বোমার চেয়েও দশ গুণ বেশি ধ্বংসাত্মক।

সমর বিশ্লেষকরা বলছেন, শক্তিমত্তা ও ভয়াবহতার দিক থেকে এটিই হতে যাচ্ছে বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী পারমাণবিক সাবমেরিন। নতুন সাবমেরিনটি রুশ নৌবাহিনীর সর্বাধুনিক সাবমেরিন বোরেইয়ের দ্বিতীয় সংস্করণ বোরেই ক্লাস-২। উত্তর রাশিয়ার সেভেরোদ্‌ভিন্‌স্কের একটি যুদ্ধজাহাজ নির্মাণ কারখানা থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে এটিকে পরীক্ষামূলকভাবে সমুদ্রে নামানো হয়। সবকিছু ত্রুটিমুক্ত প্রমাণিত হলে ২০১৮ সালের শুরুতেই এটি যুক্ত হবে রুশ নৌবাহিনীতে।

পরিকল্পনা অনুযায়ী ২০২৫ সালের মধ্যেই রাশিয়ার হাতে চলে আসবে এ ধরনের আটটি পারমাণবিক সাবমেরিন।

রাশিয়ার সর্বশেষ বোরেই সাবমেরিনে ছিল ১৬টি মিসাইল টিউব। নতুন সংস্করণে আরও চারটি অতিরিক্ত টিউব যুক্ত করা হয়েছে। তাছাড়া, বিভিন্ন প্রযুক্তিগত উন্নয়নও আনা হয়েছে এতে। নৌবাহিনীর সাবমেরিন বহরে আনুষ্ঠানিকভাবে যুক্ত হবার পর একে আন্ত:মহাদেশীয় ব্যালিস্টিক মিসাইল ‘বুলাভা আরএসএম-৫৬’ দ্বারা সজ্জিত করা হবে। এ মিসাইল ছয় হাজার মাইল দূরের যে কোনো লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানতে সক্ষম। বুলাভাই হচ্ছে পৃথিবীর প্রথম ‘গতিপথ পরিবর্তনে সক্ষম’ (ম্যান্যুয়েভারেবল) মিসাইল।

সমরশক্তিতে আরেক মহারথী মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সর্বাধুনিক ‘ওহাইও ক্লাস’ সাবমেরিন অবশ্য একত্রে ২৪টি আন্ত:মহাদেশীয় ব্যালিস্টিক মিশাইল নিক্ষেপ করতে পারে। কিন্তু এর সর্বোচ্চ পাল্লা ৪৮৪৬ মাইল। তাছাড়া ‘রাজপুত্র ভ্লাদিমির’র মতো সমুদ্রের ৪০০ মিটার গভীরে ডুব দিয়ে রাডার ফাঁকি দিতেও সক্ষম নয় ‘ওহাইও’। শক্তিমত্তার দিক থেকে রাশিয়ার নতুন বোরেই সাবমেরিনকেই এগিয়ে রাখছেন বিশ্লেষকেরা।

রাশিয়ার পুরনো (উপরের ছবি) ও নতুন প্রজন্মের (নিচের ছবি) পরমাণু ক্ষেপণাস্ত্রবাহী সাবমেরিনরুশ নৌবাহিনীর কমান্ডার-ইন-চিফ অ্যাডমিরাল ভ্লাদিমির করোলিয়েভ সেদেশের জাতীয় গণমাধ্যমে বলেন, ‘প্রশান্ত মহাসাগরীয় ও উত্তরাঞ্চলীয় নৌবহরের (প্যাসিফিক অ্যান্ড নর্দার্ন ফ্লিট) সক্ষমতাকে অনন্য উচ্চতায় নিয়ে যাবে বোরেই সাবমেরিনের এই নতুন সংস্করণ’।

শক্তিশালী সাবমেরিন নির্মাণের দৌড়ে থেমে নেই বিশ্বের অন্যান্য মহারথী দেশও। চীন সম্প্রতি উন্নত চুম্বকীয় মোটর উদ্ভাবনের দাবি করেছে, যার সাহায্যে সাবমেরিন আগের চেয়ে অনেক বেশি নিঃশব্দে চলাচল করতে পারবে। তাছাড়া, অক্টোবর মাসে একটি অতি দ্রুতগতির সাবমেরিন পরীক্ষার ঘোষণাও দিয়েছে দেশটি।

বাংলাদেশ সময়: ১৭২৫ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৫, ২০১৭

এনএইচটি/জেএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।