ঢাকা, শনিবার, ৪ শ্রাবণ ১৪৩২, ১৯ জুলাই ২০২৫, ২৩ মহররম ১৪৪৭

আন্তর্জাতিক

মাস্ক-ও’ডোনেল-মামদানির নাগরিকত্ব বাতিল করবেন ট্রাম্প? 

আন্তর্জাতিক ডেস্ক  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭:৫৮, জুলাই ১৮, ২০২৫
মাস্ক-ও’ডোনেল-মামদানির নাগরিকত্ব বাতিল করবেন ট্রাম্প? 

সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এমন কিছু মন্তব্য করেছেন, যা ইঙ্গিত দেয় যে কিছু ব্যক্তির মার্কিন নাগরিকত্ব হুমকির মুখে পড়তে পারে।

ট্রাম্প সাংবাদিকদের বলেন, তিনি ইলন মাস্ককে যুক্তরাষ্ট্র থেকে বহিষ্কারের সম্ভাবনা পর্যালোচনা করবেন।

তিনি জোহরান মামদানিকে গ্রেপ্তারের হুমকি দেন। এবং তিনি সামাজিক মাধ্যমে পোস্ট করে জানান, তিনি জনপ্রতিয় কমিডিয়ান রোসি ও’ডোনেলের নাগরিকত্ব বাতিলের বিষয়টি গভীরভাবে বিবেচনা করছেন।

এই মন্তব্যগুলো এমন সময়ে এসেছে, যখন তার প্রশাসন নাগরিকত্ব বাতিলের (ডিন্যাচারালাইজেশন) বিষয়টিকে অগ্রাধিকার দেওয়ার পরিকল্পনা প্রকাশ করছে, যে আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে কোনো ব্যক্তির নাগরিকত্ব বাতিল করা যায়।

চলতি মাসের শুরুর দিকে এক সাংবাদিক ট্রাম্পকে জিজ্ঞাসা করেন, তিনি কি ইলন মাস্ককে (যুক্তরাষ্ট্র থেকে) বহিষ্কার করবেন? জবাবে ট্রাম্প বলেন, আমি জানি না, দেখতে হবে ব্যাপারটা।

আরেকজন সাংবাদিক জিজ্ঞাসা করেন, নিউইয়র্ক সিটিতে যদি জোহরান মামদানি যুক্তরাষ্ট্রের ইমিগ্রেশন ও কাস্টমস এনফোর্সমেন্টের নির্দেশ অমান্য করেন, তখন ট্রাম্প কী করবেন।

ট্রাম্প বলেন, তাহলে আমাদের ওকে গ্রেপ্তার করতে হবে। দেখুন, আমাদের দেশে কোনো কমিউনিস্টের দরকার নেই, তবে যদি থাকেও, আমি জাতির পক্ষ থেকে ওকে খুব ভালোভাবে নজরে রাখব।

তিনি আরও যোগ করেন, অনেকেই বলছে, সে অবৈধভাবে এখানে আছে। আমরা সবকিছুই খতিয়ে দেখব। যদিও মামদানির অবৈধভাবে যুক্তরাষ্ট্রে থাকার কোনো প্রমাণ নেই, একজন রক্ষণশীল আইনপ্রণেতা তার নাগরিকত্বের বিষয়ে তদন্তের দাবি জানিয়েছেন।

উল্লেখ্য, ইলন মাস্ক এবং জোহরান মামদানি দুজনই ন্যাচারালাইজেশন প্রক্রিয়ায় মার্কিন নাগরিক হয়েছেন। মাস্ক দক্ষিণ আফ্রিকার প্রিটোরিয়ায় জন্মগ্রহণ করেন এবং ২০০২ সালে মার্কিন নাগরিকত্ব লাভ করেন। মামদানি জন্মগ্রহণ করেন উগান্ডার কামপালায় এবং ২০১৮ সালে মার্কিন নাগরিক হন।

ও'ডোনেলকে নিয়ে ট্রাম্প ট্রুথ সোশালে লিখেছেন, এই কৌতুক অভিনেত্রী আমাদের মহান দেশের স্বার্থের পরিপন্থী। আমি তার নাগরিকত্ব বাতিলের বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করছি। সে মানবতার জন্য হুমকি।

এটি ট্রাম্প ও ও'ডোনেলের দীর্ঘদিনের সামাজিক মাধ্যমে চলা বাকযুদ্ধের সর্বশেষ পর্ব। ট্রাম্প ঠিক কী কারণে এই পোস্ট দিয়েছেন, তা স্পষ্ট করেননি।

উল্লেখ্য, ও'ডোনেল চলতি বছরের জানুয়ারিতে তার ১২ বছর বয়সী সন্তানকে নিয়ে আয়ারল্যান্ডে চলে গেছেন। সম্প্রতি তিনি টেক্সাসে ভয়াবহ বন্যা মোকাবেলায় ট্রাম্প প্রশাসনের ব্যর্থতা নিয়ে সমালোচনা করেন। তিনি এ বছর শুরুর দিকে জানান, আয়ারল্যান্ডে তার দাদা-দাদির বংশধর হওয়ায় তিনি আইরিশ নাগরিকত্ব পাওয়ার প্রক্রিয়ায় রয়েছেন।

ট্রাম্পের মন্তব্য বিষয়ে মাস্ক এক্সে লিখেছেন, এটি আরও বড় করে তুলতে খুব ইচ্ছা করছে। খুব, খুব ইচ্ছা করছে। তবে আপাতত আমি বিরত থাকছি।

নিজের প্রতিক্রিয়ায় এক সংবাদ সম্মেলনে মামদানি বলেন, গতকাল ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, আমাকে গ্রেপ্তার করা উচিত, আমাকে যুক্তরাষ্ট্র থেকে বহিষ্কার করা উচিত, আমার নাগরিকত্ব বাতিল করা উচিত। তিনি এসব কথা বলেছেন আমাকে ঘিরে যে কিনা এই শহরের প্রথম অভিবাসী মেয়র হতে পারে, প্রথম মুসলিম এবং প্রথম দক্ষিণ এশীয় মেয়র হিসেবেও ইতিহাস গড়তে পারে। তিনি এসব কথা বলেছেন, কেবল আমি কে, আমি কোথা থেকে এসেছি, আমার চেহারা বা কথা বলার ধরণ দেখে নয়—বরং এজন্য যে, আমি কী নিয়ে লড়ছি, তা থেকে দৃষ্টি সরিয়ে নিতে তিনি এমন করছেন।

রোসি ও'ডনেল ইনস্টাগ্রামে ডোনাল্ড ট্রাম্পের মন্তব্যের জবাবে লেখেন তুমি আমার নাগরিকত্ব বাতিল করতে চাও? তাহলে চেষ্টা করে দেখো, আমাকে চুপ করানোর অধিকার তোমার নেই—আর কোনো দিন ছিলও না।

সূত্র: সিএনএন

এমএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।