মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইরানে সরকার পরিবর্তনের ইঙ্গিত দিয়েছেন। তবে বিশেষজ্ঞদের মতে, এটি যতটা সহজ মনে হচ্ছে, বাস্তবে ততটা নয় এবং এর ফলাফল ওয়াশিংটনের প্রত্যাশার মতো না-ও হতে পারে।
বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করে বলেছেন, ইরানে সরকার পতন ঘটলেও যুক্তরাষ্ট্র বা ইসরায়েলের প্রতি সহানুভূতিশীল কোনো সরকার আসার নিশ্চয়তা নেই। বরং এর ফলে আরও কঠোরপন্থী নেতারা ক্ষমতায় আসতে পারেন, যারা আমেরিকা ও ইসরায়েলের হামলার প্রতিক্রিয়ায় প্রতিরোধের শেষ অস্ত্র হিসেবে পরমাণু বোমা তৈরিতে ঝুঁকে পড়তে পারেন।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, যদি ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনি নিহত হন, তাহলে তার জায়গায় অন্য কাউকে বসানো সম্ভব। তবে এতে ইরানের সরকার ভেঙে পড়ারও ঝুঁকি রয়েছে, যা যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তাদের চিন্তায় রাখতে হবে। এমন হলে দেশটি ভেঙে টুকরো টুকরো হয়ে যেতে পারে এবং পুরো মধ্যপ্রাচ্যে বড় ধরনের প্রভাব ফেলতে পারে।
আরও একটি সম্ভাবনা হলো, ইরানি সেনাবাহিনীর কিছু অংশ ক্ষমতা দখল করতে পারে। কিন্তু এই ‘গোষ্ঠীগুলো যুক্তরাষ্ট্র যে ধরনের সরকার চায়, তার সঙ্গে মিলবে না’, বলে সিএনএনকে জানিয়েছেন ওয়াশিংটনের কোয়িন্সি ইনস্টিটিউটের নির্বাহী সহ-সভাপতি ত্রিতা পারসি।
ইরানে বহু বছর ধরে চলমান বিচ্ছিন্নতাবাদী আন্দোলন রয়েছে, যারা স্বাধীনতা বা স্বশাসনের জন্য লড়ছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, যদি দেশটির সরকার পুরোপুরি ভেঙে পড়ে, তাহলে এই গোষ্ঠীগুলো সুযোগের সদ্ব্যবহার করে বিশৃঙ্খলা তৈরি করতে পারে।
‘সরকার পতন মানে হলো রাষ্ট্রকে ভেঙে ফেলা এবং এরপর যে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হবে, তাকে বাড়তে দেওয়া‘, সিএনএনকে বলেন পারসি।
সর্বোচ্চ নেতা ইরানে আজীবনের জন্য নির্বাচিত হন ৮৮ সদস্যের এক পরিষদ অ্যাসেম্বলি অব এক্সপার্টস-এর মাধ্যমে। তিনি আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো উত্তরাধিকারী মনোনয়ন দেন না।
তবে নিউ ইয়র্ক টাইমস শনিবার একটি প্রতিবেদনে জানিয়েছে, খামেনি তিনজন জ্যেষ্ঠ আলেমকে সম্ভাব্য উত্তরসূরি হিসেবে বেছে রেখেছেন, যদি তিনি নিহত হন। সংবাদমাধ্যমটি এ তথ্য জানিয়েছে তিনজন ইরানি কর্মকর্তার বরাতে।
এই উত্তরসূরি নির্ধারণের প্রক্রিয়ার মধ্যেই বিচ্ছিন্নতাবাদী দলগুলো, যারা দীর্ঘদিন ধরে ইসলামি প্রজাতন্ত্রের প্রতি বিরূপ মনোভাব পোষণ করে এসেছে, তারা এমন পরিস্থিতি নিজেদের জন্য একটি সুযোগ হিসেবে বিবেচনা করে অস্থিতিশীলতা সৃষ্টি করতে পারে।
সূত্র: সিএনএনের নাদিন ইব্রাহিমের প্রতিবেদন
এমজেএফ