মধ্যপ্রাচ্যে যুদ্ধ পরিস্থিতির ক্রমবর্ধমান উত্তাপে এবার কঠোর হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি। তিনি স্পষ্টভাবে জানিয়ে দিয়েছেন, সম্মুখ যুদ্ধে ইসরায়েলকে মোকাবিলায় ইরানের সামরিক বাহিনী পুরোপুরি প্রস্তুত।
শুক্রবার (১৪ জুন) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে দেওয়া একাধিক পোস্টে এবং একটি ভিডিও বার্তায় খামেনি বলেন, ইরানে হামলা করে জায়নবাদী শাসকগোষ্ঠী একটি ভয়ংকর ভুল করেছে। এটি শুধু একটি বড় অপরাধ নয়, বরং চরম বেপরোয়া আচরণও। আল্লাহর কসম, এই হামলার পরিণতি হবে ভয়াবহ। জায়নবাদী শক্তি ধ্বংস হয়ে যাবে।
তিনি আরও বলেন, আমাদের শহীদদের রক্ত বৃথা যাবে না। যারা ইসরায়েলি হামলায় প্রাণ হারিয়েছেন, ইরানের জনগণ তাদের প্রতি বিশ্বাসঘাতকতা করবে না। আমাদের সশস্ত্র বাহিনী প্রস্তুত রয়েছে। দেশের সর্বস্তরের মানুষও তাদের পাশে রয়েছে। আমাদের ভূখণ্ডে, আমাদের আকাশসীমায় কোনো অনুপ্রবেশ মেনে নেওয়া হবে না।
এদিকে একই দিনে পাল্টা অবস্থান নিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। সম্প্রতি একের পর এক মন্তব্যে তার অবস্থান বদলে গেছে। কয়েক ঘণ্টা আগেও তিনি ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুকে সামরিক পদক্ষেপ না নিতে সতর্ক করেছিলেন। তখন ট্রাম্প বলেছিলেন, এমন হামলা ইরানের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের পরমাণু আলোচনাকে চরমভাবে ব্যাহত করতে পারে।
কিন্তু পরে ইউটার্ন নিয়ে ট্রাম্প বলেন, ইসরায়েলের ওপর আক্রমণ হলে আমেরিকা তা রক্ষা করবে। আমরা জানি না শেষ পর্যন্ত কী হবে, তবে পারমাণবিক শক্তিধর ইরান ইসরায়েল এবং যুক্তরাষ্ট্র— উভয়ের জন্যই গভীর হুমকি হয়ে উঠতে পারে।
এছাড়া ফক্স নিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি ইরানের ওপর ইসরায়েলি হামলাকে ‘চমৎকার’ এবং ‘অত্যন্ত সফল’ বলে অভিহিত করেছেন। তিনি বলেন, আমরা আগেই জানতাম এই হামলা হতে যাচ্ছে। আমি নিজেই চেষ্টা করেছি ইরানকে একটি চুক্তির সুযোগ দিতে। কিন্তু তারা সেই পথ নেয়নি। এখনো সময় আছে। তারা চাইলে আলোচনার টেবিলে ফিরতে পারে।
এই মুহূর্তে আঞ্চলিক উত্তেজনা এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে, যেখানে যুদ্ধ অনিবার্য হয়ে উঠতে পারে, এমন উদ্বেগ প্রকাশ করছেন আন্তর্জাতিক বিশ্লেষকরা। এমন অবস্থায় খামেনির হুঁশিয়ারি ও ট্রাম্পের অবস্থান বিশ্বকে ঠেলে দিচ্ছে এক অনিশ্চিত ভবিষ্যতের দিকে।
সূত্র: আল-জাজিরা, বিবিসি, রয়টার্স, ফক্স নিউজ, খামেনির অফিসিয়াল এক্স অ্যাকাউন্ট
এমজে